বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

আমাদের শৈশব -কৈশোর কিংবা যৌবনেও বাংলাদেশ এবং ততপূর্বে পাকিস্তানে এমন সাম্প্রদায়িকতার চর্চা দেখিনি। ছোট ছোট মসজিদ, নামজীরা কখন নামেজে যেতেন আসতেন কেউ বুঝতেই পারতোনা। অনেকে ঘরেই নামাজ পড়তেন। মাদ্রাসা একটা ছিল সিলেট শহরে। সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা। ছাত্র সঙ্খ্যা ছিল খুব কম। মাদ্রাসায় প্রথম এক দুই বছর পড়ার পর প্রায় সবাই চলে আসত সাধারন স্কুলে। ফলে ধর্ম নিয়ে টানা হেচড়া দেখতে হয়নি সেকালে। তবে পরবর্তীতে ৭১ সনের পর বিশেষভাবে ৭৫ পরবর্তী সময়ে চাকুরী করা কালীন অনুভব করেছি সাম্প্রদায়িকতা মাথা তুলে দাড়াতে শুরু করেছে।

বর্তমান বাংলাদেশের তরুন বয়সীরা মারাত্মক জ্বেহাদী মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠছে। এরা সারাক্ষণ নানা সামাজিক মাধ্যমে ঘৃণা ছড়াচ্ছে অবিরত।evergreen Bangladesh এদের একটি সাইট। এতে প্রতি মিনিটে হাজার হাজার পাঠক অংশ নিচ্ছে এবং সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর কাজ করে চলেছে। সরকার নীরব। গতকাল পার্বত্যচট্টগ্রামে সেনাদের সাথে ছোট খাটো একটা সংঘর্ষ ঘটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। এতে একজন চাক্মা বিদ্রোহী নিহত হয়। এভেরগ্রীনে অংশ নেয়া তরুনরা সকলের এক কথা “চাকমাদের নিশ্চিহ্ন করে দাও”। ” হাসিনা সরকার চাকমাদের মাথায় তুলেছে।” “বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে কোন সেনাবাহিনী বলা যায়না। এরা অথর্ব।” ” এরা ভারতের চামচা”। মাত্র একজন চাকমা মারা যাওয়ায় তারা ভয়ানক অখুশী। যদিও সেনাবাহিনীর কিছুই হয়নি, তবু চাকমাদের শত শত লাশ কেন পড়েনি এতেই তাদের ক্ষোভ।
চাকমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে এই যে জোড়ালো দাবী তা ওহাবিজমের শিক্ষার ফল। এদাবী সকল অমুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে প্রতিনিয়ত এরা দিয়ে চলেছে। তাদের কথা দারুল ইসলাম আর দারুল হারাব -এই দুয়ে বিশ্ব বিভিক্ত। এই চিন্তা এতোটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে যেকোন সময় তা ভয়ানক রূপ ধরতে পারে। চাকমারা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদি বাসী। তাদেরকে হত্য করে শেষ করার আবেদন হিটলারের ফ্যাসিজমের চেয়েও মারাত্মক আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
হাসিনা সরকারকে চাকমাদের পক্ষে অবলম্বনের অভিযোগ এনে হাসিনাকে ইসলামের শত্রু হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে, যাতে হাসিনার বিরূদ্ধে বড় সড় একটা কিছু করা যায়। হাসিনাকে উৎখাত করে শরীয়াভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন এদের লক্ষ্য। হিন্দুরা যে কোন সময় অচিন্তনীয় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন। আর মুক্ত মনারা তারও আগে আক্রান্ত হবেন।
সেনাবাহিনীর নৈতিক অবস্থানকে বিনাশ করতেও তারা সচেষ্ট। সেনাবাহিনী কখন কি পদক্ষেপ নিবে তা দেশের স্বার্থে সেনাবাহিনীকে নিতে হয়। এতে সরকারের নীতি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকে। তারা ব্াংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করে চলেছে যাতে মানুষ সেনা বাহিনীর বিরূদ্ধে অবস্থান নেয়। যাতে একটা গৃহযুদ্ধের মত অবস্থার সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করা যায়।
আর এই সবকিছুর পিছনে উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার আর তা হল দেশকে একটি তালিবানী রাষ্ট্রে পরিনত করা।