আকবর দ্যা গ্রেট (প্রকৃত ইতিহাস) : [প্রথম পর্ব]

আকবর দ্যা গ্রেট (প্রকৃত ইতিহাস) : [প্রথম পর্ব]

…ভারতবর্ষের ইতিহাসে খুবই কম সংখ্যক কিংবদন্তির নামের পূর্বে “মহান” অথবা ইংরেজি “The Great” প্রত্যয়ে ভূষিত হয়েছেন।…আমি সেই তিন মহানের নাম স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি – আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট, সম্রাট অশোকা এবং সম্রাট আকবর।…তাদের নামের পূর্বে এই “মহান” ভূষণ অতি সহজে অলংকৃত হয়নি।…এর জন্য তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক অবিস্মরণীয় সব কর্মকান্ড করতে হয়েছিল।

…এই ভারতীয় পুণ্যভূমি একের পর এক পুণ্যবান জন্ম দিয়েছেন।…যেমন, কণিস্ক, চন্দ্রগুপ্ত, পৃথ্বীরাজ, রানা প্রতাপ, বাজীরাও, শিবাজী, রণজিৎ সিং, রাজা রাজা চোল-এর মত আরও অনেকজন।…কিন্তু ভারতীয় ইতিহাসবিদরা কেউ তাদেরকে “মহান” অথবা “The Great” বলে আখ্যায়িত করেন নি।

…এটার একটাই কারন হতে পারে। “মহান” উপাধি প্রাপ্ত হওয়া খুবই শক্ত কাজ।…মহান উপাধিতে ভূষিত হতে হলে আপনাকে শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে নির্মম খুনী হতে হবে।…এবং আপনাকে অবশ্যই হিন্দুত্ববাদের মূল স্রোতে কোন না কোনভাবে আঘাতকারী হতেই হবে।

…এই সন্ত্রাসবাদীদের নামের তালিকায় প্রথমেই আসবে আলেকজান্ডার এর নাম, যিনি সমস্ত বিশ্বজয়ের অভিলাষে অগণিত মানুষ হত্যার পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠেছিলেন।…পরবর্তীতে রাজা পুরু (Porus) এর কাছে অনাকাঙ্খিত ভাবে প্রায় পরাজিত হন তিনি।…নিজের জীবন এবং বাকি বেঁচে থাকা বেশিরভাগ সৈন্য যারা ম্যালেরিয়ায় ভুগছিল তাদের বাঁচানোর জন্য লজ্জাজনক ভাবে পালিয়ে যান।

…কিন্তু আমাদের ভারতের মহান ইতিহাসবিদগণ এটাকে পোরাসের পরাজয় বলে মনে করেন।…মনে হচ্ছে তারা দেশ ও হিন্দুবিরোধী মোল্লা ইরফান হাবিবের মত ইতিহাসবিদ কম, কবি ও সৃষ্টিশীল লেখক বেশী।…কিন্তু অপরপক্ষে গ্রীক ইতিহাসবিদগণ আলেক্সজান্ডারের এই পরাজয় কিছু লেখায় স্বীকার করেছেন!…কিন্তু এই ব্যাপারটি ছাড়াও মূল বিষয়টি হচ্ছে তিনি আক্রমণ করেছেন এবং অসংখ্য প্রাণ হত্যা করেছেন তাই তিনি “মহান“।

…তার পরেই আসে রাজা অশোকার নাম যিনি তার শাসনামলে অসংখ্য মানুষ হত্যা করেন এবং হঠাৎ করেই তার অনুশোচনা উদয় হয়।…এমনকি একজন জনপ্রিয় সৃষ্টিশীল ইতিহাসবিদ পরিচালক রাজা অশোকার অগণিত স্ত্রীদের মধ্যে অন্যতম এক স্ত্রীর সাথে তার প্রেমের গল্প নিয়ে একটি চলচিত্র পর্যন্ত তৈরী করেছেন।

…কিন্তু মোদ্দাকথা হচ্ছে তিনি “মহান” উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন কারণ অনুতপ্ত হওয়ার পূর্বে তিনি অগণিত তাজা প্রানের রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন যা তখনকার সময়ের অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল।…তাছাড়া তিনি হিন্দুত্ববাদের মূল স্রোত থেকে পথ বিচ্যুত হয়েছিলেন।

…সম্রাট অশোকার মৃত্যুর পরে আরও কয়েকশ বছর ঐ রকম কৃতিত্বের কেউ পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি।…তারপরে এলো বর্বর লুটেরাদের যুগ।…যারা পশ্চিম এশিয়া থেকে এসেছিল ইসলামের ঝাণ্ডা হাতে এবং সন্ত্রাসী জিহাদি কর্মকান্ডের পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল।
…তাহলে তাদের মধ্যে কে “মহান” উপাধির মত এমন লোভনীয় গুণবাচক বিশেষণে বিশেষিত হবেন তা নিয়ে দীর্ঘ শতাব্দী ধরে ভারতীয় সেকুলার বামপন্থী ইতিহাসবিদদের একটা বিতর্ক চলছিল।

…এবং অবশেষে এল সেই কুখ্যাত মুঘল বাবর যার পিতা তীমুর ও মাতা ছিলেন চেঙ্গিস খানদের বংশধর।…একজন নৃশংস লুটেরা, ধর্ষক, খুনী, সমকামী শিশু যৌনচারী।…এই সেই জেহাদি বাবর যার ভারতের প্রত্যেক স্কুলের ইতিহাস বইয়ের প্রথম পাতায় তার প্রতিচ্ছবি থাকার মত বিরল সম্মান রয়েছে।

(চলবে)