আমাদের কাছে হিরো হতে হলে ধর্মীয় উম্মাদনা থাকতে হবে, নইলে সে কিসের হিরো??

ইরাকে সাদ্দাম হোসেন ইরাকী কুর্দি সম্প্রদায়ের কমপক্ষে দশ লাখ নিরীহ নিরপরাধ মানুষ নির্বিচারে হত্যা করেছিলেন। কুর্দি সম্প্রদায়ের কিছু মানুষকে দেশত্যাগ করে জীবন বাঁচাতে হয়েছিল। তখন ব্যাপারটা নিয়ে বাংলাদেশি সিংহভাগ মানুষেরই কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছিল না। উপর্যুপরি প্রায় সকলেই সাদ্দাম হোসেনকে হিরো মনে করতেন।

আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশ, সাদ্দাম হোসেনের নিরপরাধ কুর্দিদের হত্যা ও কুয়েত দখলকে কেন্দ্র করে ইরাক আক্রমণ করেছিলেন। তখন বাংলাদেশে দোকানে আর পাড়া মহল্লার আড্ডা মাহফিলে সে কী সাদ্দাম বন্দনা!! যেন সাদ্দাম বাংলাদেশিদের জন্য ফেরেশতা। আমেরিকার শক্তি আর ক্ষমতা  সম্পর্কে কিছুই না জানা লোকগুলো পারলে লাঠি আর বাঁশ নিয়েই সাদ্দামের পক্ষে যুদ্ধে নেমে যায়!!!

আদতে সাদ্দাম হোসেন ছিল একজন গণহত্যাকারী। তার দু ছেলে উদে আর কুশে ছিল আরো ভয়ঙ্কর। উদে তো পুরো ইরাক অঞ্চলের সুন্দরি মেয়েদের জন্য ত্রাস হয়ে উঠেছিল। হেন আকাম নেই যা তিনি করেননি। আর কুশে ছিলেন ঠান্ডা মাথার খুনি। নিজে আকাম করতেন না, করাতেন।

পরবর্তীতে অবশ্য বাংলাদেশি মানুষেরা হতাশ হয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেনের শোচনীয় পরাজয়ে। আমি সেই ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, বাংলাদেশের আমজনতা মাহাথির মুহাম্মদকে অমন করে হিরো ভাবেননি কখনো, কিংবা এপিজে আব্দুল কালামকে তারা অতোটা হিরো মনে করেন না। হিরো মনে করেন বিন লাদেনকে, সাদ্দাম হোসেনকে, জাকির নায়েককে। ইতিবাচক চরিত্রগুলো আমাদেরকে ধর্মীয়ভাবে উম্মাদনা দিতে পারে না বলেই আমরা নিরব থাকি। আমাদের কাছে হিরো হতে হলে ধর্মীয় উম্মাদনা থাকতে হবে, নইলে সে কিসের হিরো??