আরে দাঁড়ান এইটুকু শুনেই আমাকে তেড়ে গালি দেওয়ার কোন ইয়ে হয় না …….. মানে হয় না । এমনিতে মার্কেটে — দুষ্টু লোকেরা আমাকে অনেক ইয়ে কথা বলে — মানে – বাজে কথা! আবার অনেকেই কমিউনাল বলে! তবুও সাম্প্রদায়িক বললে এতোটা কষ্ট হতো না (😀😀😀😀) !
তা আমরা কোথায় হাসছিলাম —– ওহ্ হ্যাঁ – পাহাড়ে, মানে দার্জিলিংয়ে। রামযাত্রা লোকারণ্য ……… মহাধুমধাম, চারিদিকে তলোয়ার …… বাজিছে ছড়াম ছড়াম । মাননীয়া একটু ইয়ে হয়ে গেলেন …….. মানে ঘাবড়ে গেলেন! বাংলার হিন্দু ভোট একত্রিত হলো বলে! তিনি —- ইনশাল্লাহ, খোদাহাফেজ, দোয়া, সেলাম —– এগুলি উচ্চারণ করা বন্ধ করে দিলেন! কথায় কথায় মাথায় হিজাব তুলে নামাজ পড়া – বন্ধ! যে মাননীয়া এক্কেরে প্রথম রোজা থেকে ইফতার করা শুরু করেন —— এত্তগুলি রোজা চলে যাওয়ার পরও এখনো পর্যন্ত ইফতার করার নাম পর্যন্ত তুলছেন না! একটু খেয়াল করে দেখুন —– এখনো পর্যন্ত ইফতার পার্টি’র ধুম কোন নেতাই শুরু করার অনুমতি পাননি বলেই – আমার ধারণা! কারণ চারদিকে বাতাসে কান পেতেও কোথাও ইফতার পার্টি দেখছি না ……. ইয়ে শুনছি না! কারণ ? ধুর মশাই …. আবার কারণ জানতে চায়, রাম নবমী এফেক্ট মশাই, রাম নবমী’র এফেক্ট! তাহলে এর সঙ্গে দার্জিলিং এর গন্ডগোলের কি সম্পর্ক ? আছে …… আছে । এত কিছু “মহাত্যাগ” করেও যখন বুঝা গেল —– বাঙ্গালী হিন্দু রাম নবমীতে ইয়ে হয়ে গেছে……, তখন উপায়? উপায় ….. গোর্খাল্যান্ড বা বাংলা ভাগ ইস্যু নিয়ে তাঁদের দু’ভাগ করে দাও। এবং নির্বোধ বিমল গুরুং …… মাননীয়া দেবীর সেই ফাঁদে পা দিলেন, সমতলের বাঙ্গালীরা – দু’ভাগ হয়ে গেলো। কারো বক্তব্য- আলাদা রাজ্যই তো চাইছে, রাষ্ট্র তো চাইছে না! ছোট রাজ্য তো ভালোই! অনেক বিকাশ হয় নাকি তাতে! আর অন্যদের বক্তব্য কিছুতেই বাংলা ভাগ মেনে নেওয়া যায় না। বোঝা গেল —– প্রথম কারণটা!
অভিজ্ঞ মানুষ …. তাই দ্বিতীয় কারণ নিয়ে আলোচনায় যাই …….. সঙ্গে থাকুন।
দার্জিলিংয়ে এমন জঙ্গী গন্ডগোল হলে, মাননীয়া সেনা চাইবেন(চাইলেনও)! যদি সেনা নামে ….. তবে মার খাবে, দার্জিলিংবাসি! স্থানীয় অধিবাসীরা দেখবেন—- কেন্দ্রীয় সরকারে বিজেপি আছে। আর বিজেপি সরকারই আমাদের মেরেছে! স্থানীয়রা বিজেপির বিপক্ষে যাবে! এতে লোকসভায় বিজেপি তথা বিমল গুরুংদের ক্ষতি —- তৃণমূলের লাভ! আর মুখ্যমন্ত্রী সেনা চেয়েও যদি না পেতেন —– তবে আপামর বাংলার জনগণের কাছে – তিনি বুঝাতে সমর্থ হতেন, বিজেপি সরকার …… বাংলার বিরোধী! সেনা বাংলার বিরোধী, সেনা তোলাবাজ, নবান্ন …….. । দুইদিকেই মাননীয়ার গেমপ্ল্যান অপূর্ব ।
তৃতীয় কারণ না বললে – কেমন যেন অধুরা কাহিনী হয়ে যাবে । এতো উন্নয়ন, এতো ঘন ঘন দার্জিলিং যাওয়া, গোর্খা কাউন্সিল থেকে শুরু করে, তামাং কাউন্সিল থেকে শুরু করে, চেত্রি থেকে শুরু করে (শুরু করে … টা বারবার বলবেন কিন্তু) যে জনজাতির দশটা পরিবার দার্জিলিংয়ে বসবাস করে, তাঁদের নামেও একটা করে কাউন্সিল তৈরি শুরু করেও – পাহাড়ে সংগঠন বিস্তার ঘটেনি তেমন ভাবে! প্রমাণ তো সর্বশেষ ভোট । 84 টি আসনের মধ্যে তৃণমূল 12, GMM 68! তাই নতুন খেলা – “ভাষা” বিভ্রাট এবং GTA অডিট কমিটি বসাবো বলে হুমকি! ফল—- চূড়ান্ত অশান্তির আগুন । নাহলে মাননীয়া দার্জিলিংয়ে গেলে তিনি স্বয়ং যখন মারাত্বক ভাবে হিন্দি ভাষায় কথা বলেন—- তখন বাংলা ভাষার স্বপক্ষে যুক্তি (যদিও উনি এটা অন্যায় করেননি—- শুধু উস্কেছেন! গাধা বিমল গুরুং এর দল ফাঁদে ইয়ে দিয়েছেন, মানে পা) । আর GTA থেকে চেটেপুটে, লুটে খেয়েছেন! এটা অডিট কমিটি গঠন, অডিট রিপোট না নিয়ে একজন প্রশাসনিক প্রধান আগে ভাগে কেনো বললেন – বুঝা গেলো না! তবে এটা বুঝা গেলো —- একমাস পরেই জিটিএ ভোট! অডিটের হুমকিতেই অশান্তির আগুন জ্বলবে —– সেটা মাননীয়া বিলক্ষণ জানতেন! অশান্তির আগুনে —- পর্যটন ব্যবসার চূড়ান্ত ক্ষতি হবেই! ক্ষতিগ্রস্ত হবেন —- দার্জিলিংয়ের সাধারণ মানুষ (পর্যটন ব্যবসাই ম্যাক্সিমামের রুটি-রুজি) এবং তাঁরা মোর্চার বিরূদ্ধে যাবেন! ফলতঃ – তৃণমূলের লাভ, উদ্যেশ্য – জিটিএ নির্বাচন । নাহলে – অডিট রিপোর্ট করে! জিটিএ তে হওয়া অপরাধের জন্য – সমস্ত মোর্চা নেতাদের তিনি জেলে ঢুকাতে পারতেন — এই অশান্তির আগুন পাহাড়ে জ্বলতো না! এবং জিটিএ তে যদি লুটেপুটে খেয়েই থাকেন এবং এমন নির্মম অশান্তি ছড়ানোর জন্য মোর্চা নেতাদের গ্রেফতার করুক – আমিও চাই।
কিন্তু, …………
মাননীয়া, গোর্খা পার্বত্য কাউন্সিল থেকে নাম পাল্টে, গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নামটা আপনিই দিয়েছিলেন । আপনিও গোর্খাল্যান্ড শব্দটা সু-কৌশলে উল্লেখ করে, অশান্তির বীজ বপন করে রেখেছিলেন – রাজনৈতিক স্বার্থেই । তবুও সব কিছুর পরেও বলবো — বাংলাভাগ আমি চাই না —- গোর্খাল্যান্ডও চাই না । কিন্তু সগর্বে ঘোষণা করছি – “পাশে আছি গোর্খাভাই – তথা দার্জিলিং বাসি” । সমগ্র দার্জিলিংবাসি – আপনারা ভালো থাকুন ।