দেশের জয়ে আবেগে কেঁদে ফেলার আজীবন গ্যারান্টি এই রাষ্ট্র তার সব নাগরিককে সমান দেয়নি।

লংগদুর পাহাড়ে কাল রাতে ছিল ঈদের আনন্দ। বাংলাদেশ জিতেছে! স্যাটেলার চায়ের দোকানে ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ বলে সেকি চিৎকার। জানি না ঘরপোড়া মানুষগুলো হঠাৎ হঠাৎ এই চিৎকারে আতংকিত হয়ে পড়েছিল কিনা। কিছুদিন আগেও লংগদুর পাহাড়ী তরুণটি একই চায়ের দোকানে বসে স্যাটেলার বাঙালীদের সঙ্গে ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছে। বাংলাদেশের জয়ে সেও হাততালি দিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। আজ যদি অভিমানী কোন পাহাড়ী বালক বাংলাদেশের জয়ের এই বিজয় মিছিলে নিজেকে অচ্ছুৎ মনে করে দূ্রে সরিয়ে রাখে- খুব বেশি কি সেটা অন্যায় হয়ে যাবে?

৮৮-৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট গোল্ড কাপ ফুটবলে ঢাকা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে কিংবা টেলিভিশনে খেলা দেখতে দেখতে ‘বাংলাদেশ বাংলদেশ’ বলে চেঁচানো হিন্দুদের অনেকেই বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার প্রেক্ষাপটে পরের বছরই জীবন হাতে নিয়ে বর্ডার পার হয়েছিল। তাদের অনেকই আজকে ২২ বছর ধরে ভারতের নাগরিক। ভারতের নাগরিক হয়ে তাদের নিশ্চয় বাংলাদেশ ভারত ম্যাচে বাংলাদেশকে সাপোর্ট করা উচিত নয়?

এই বাংলাদেশে আপনি মুসলিম না হলে চিরকাল ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ বলে আবেগ দেখাতে পারবেন কিনা সেই গ্যারান্টি নেই। আমার কাছে খেলাধূলায় দেশকে সাপোর্ট করার এটাই মানে। দেশের জয়ে আবেগে কেঁদে ফেলার আজীবন গ্যারান্টি এই রাষ্ট্র তার সব নাগরিককে সমান দেয়নি। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে এখানে সমালোচনা করা হচ্ছে- এমনটা চট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন না। আমি বলছি লংগদুর তরুণটির কথা আপনি ভেবেছেন? হাজার হাজার রসরাজদের কথা? তারা কি আপনার সঙ্গে হাততালি দিতে পারে এই মানসিকতায়?