কেনিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা তাড়িানো পথ বের করুক।

সোমালিয়ার বর্ডার ঘেষেই কেনিয়া!  কেনিয়ার ইস্ট উপকূলের কোস্টাল এরিয়ার কিছু নাগরিক আবার সোমালি বংশদ্ভূত মুসলিম।  এরা আরবির পাশাপাশি কেনিয়ার জাতীয় ভাষা সোয়াহিলি ও জানে। কিন্তু নাগরিকত্ব কেনিয়ার। 
সোমালিয়ায় যখন গৃহযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী আমেরিকার পছন্দমতো সরকার গঠনে হস্তক্ষেপ করে, তখন যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে লাখ  লাখ সোমালি প্রতিবেশী কেনিয়া, উগান্ডা, বুরুন্ডি এবং তাঞ্জিনিয়াতে আশ্রয় নেয়।
পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে আসলে তাঞ্জিনিয়া সহ অন্যান্য দেশ থেকে তারা স্বদেশে ফিরে আসে! কিন্তু যারা কেনিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলো তারা কোস্টাল এরিয়ায় থেকে যায় একই ভাষাভাষী সোমালি বংশদ্ভূত মুসলিম দের সহায়তায়।
এর কয়েকবছর পরই হঠাৎ করে সোমালিয়ায় সেনাবাহিনী আর বিদ্রোহীদের মাঝে মত পার্থক্য দেখা দেয়ায় আবার যুদ্ধ লাগে এবং আলশাবাব আত্মপ্রকাশ করে!
টাইপিক্যাল আলকায়েদার আফ্রিকান শাখা বলা যায় এদের!
সমস্যা বাধে তখন যখন এরা কেনিয়ার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে থাকে। কিছুদিনের মাঝেই কেনিয়া হয়ে উঠে এদের খেলার মাঠ।
কেনিয়ার মোম্বাসা পোর্টে আগত সব জাহাজ এরা লুট করা বা হাইজ্যাক করা শুরু করে! কেনিয়ার ব্যবসা বাণিজ্যে ধবস নামে।
একই সময় এরা যখন তখন কেনিয়ায় ঢুকে স্থানীয় অধিবাসীদের গবাদিপশু  লুট করে নিয়ে যেতো! যেখানে সেখানে সন্ত্রাসী হামলা করতো। এর মূল কারন ছিলো প্রথমত দুইদেশের ( কেনিয়া-সোমালি) বর্ডারে কোন বাউন্ডারি বা কাঁটাতারের বেড়া ছিলো না।
দ্বিতীয়ত জাতিগত কেনিয়ান সোমালি দের সাথে সোমালিয়ার সোমালি দের চেহারা এবং কথাবার্তায় মিল!
ফলে কে কখন সন্ত্রাসী হামলা করতো বা হাইজ্যাক লুটপাট ডাকাতি করতো তা ডিটেক্ট করা কঠিন।
দিন দিন এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ  নিরুপায় হয়ে কেনিয়ান সরকার  আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং আমেরিকার সাহায্য চাইলো।
আফ্রিকান ইউনিয়ন সহযোগিতার হাত এইজন্য বাড়ায় যে কেনিয়ার এই বন্দর থেকেই উগান্ডা বুরুন্ডি রুয়ান্ডায় মালামাল যেতো প্লাস তাদের দেশেও অনুরূপ সন্ত্রাসী হামলা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা আছে।
একদিকে আফ্রিকান ইউনিয়ন স্থলপথে  সোমালিয়া কেনিয়া বর্ডারে টহল দিতে থাকে, অন্যদিকে আমেরিকান নেভি কেনিয়ান কোস্টাল গার্ডের সাথে মিলে লোহিত সাগরের কিয়দংশ এবং সোমালিয়ার উপকূল পাহাড়া দিতে থাকে।
উপকূলে জাহাজ অপহরণ কিছুটা কমলেও স্থলপথে আলশাবাবের হামলা ঠেকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠে।
এমতাবস্থায় ২০০৩/৪ সালের দিকে কেনিয়ান সরকার তাদের পার্লামেন্টে আলোচনার পর কেনিয়া সোমালি বর্ডার ইলেকট্রিক্যাল ফেন্স দিয়ে পুরোপুরিভাবে সিলগালা করে দেয়!
ফলে একদিকে বর্ডারে আগের মতো অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে শূন্যের কোঠায় চলে আসে!
অন্যদিকে আগে থেকেই বসবাস করতে থাকা নন-কেনিয়ানদের ( সোমালি শরণার্থী)   চিহ্নিত করা সুবিধা হয়।
এদের মধ্যে একটা পক্ষ স্বেচ্ছায় সোমালিয়ায় যেতে রাজি হয়, আরেকটা পক্ষ স্থানীয় অধিবাসীদের সোমালি বংশদ্ভূত কেনিয়ানদের নিয়ে আন্দোলনের চেষ্টা করে।
কিন্তু বার বার সন্ত্রাসী হামলা হতে থাকলে সাধারণ কেনিয়ান সিটিজেনরা সরকার কে চাপ দিতে থাকে এদের পুশব্যাক করতে! ফলাফল — এখন কেনিয়া পুরোপুরি সন্ত্রাস মুক্ত।
( এই ঘটনা আমার এক কেনিয়ান এক্স মিলিটারি ফ্রেন্ডের কাছ থেকে শোনা!  এই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সহ অসংখ্য ভিডিও পাবেন ইউটিউবে।  কেনিয়া সোমালিয়া বর্ডার ফাইটিং লিখে সার্চ দিলেও পাবেন)
আমি এইখানে যে বিষয় টা আলোকপাত করতে চাচ্ছি তা হলো রোহিঙ্গা ইস্যু।
রোহিঙ্গারা ও একইভাবে এইদেশের আদি রোহিঙ্গা ভাষাভাষীদের সাহায্য নিয়ে এইদেশে আস্তানা গেড়েছে।
এদের প্রত্যাবর্তন  করতে হলে প্রথমে বর্ডার সিলগালা করতে হবে।
হোক এটা বৈদ্যুতিক ফেন্স অথবা ডাবল কাঁটাতারের বেড়া!  ( এইক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ফেন্স টা অত্যধিক কার্যকর হবে)
তারপর তাদের না যেতে  উৎসাহ প্ররোচনা দেয়া এনজিও গোষ্ঠী এবং তাদের সমর্থক দের বিচ্ছিন্ন করে আইনের আওতায় শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তারপর তাদের বের করার প্রয়াস চালাতে হবে।
এমতাবস্থায় শাহপীর দ্বীপ সহ অন্যান্য এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হবে যাতে এরা আবার ফিরে আসতে না পারে।
একই সাথে এদের মাঝে গড়া উঠা কয়েকডজন সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তাদের অতীত অপকর্মের কথা মাথায় রেখে পুরো দেশ বাসিকে সচেতন হতে হবে।
তা না হলে কক্সবাজার সহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি পুরো বাংলাদেশ নিরাপত্তা ঝুকিতে পড়বে আগামী কয়েক বছরে।
এদের অপরিকল্পিত ভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বনায়ন ধবংসের থাবায় পুরো চিটাগং বেল্ট ধূসর মরুতে পরিণত হবে।
আপাতত এই সব অরণ্যে রোদন মনে হলেও একসময় এসে গলার ফাঁস হয়ে দেখা দেবে!