ভারতে গো রাজনীতি: তোমাদের ধর্ম কি গরু কেন্দ্রিক ? একজন বিদেশি ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের ধর্ম কি গরু কেন্দ্রিক? আমি বললাম, ‘আমাদের সনাতন ধর্ম প্রাচীনতম ধর্ম।এই ধর্মের ভিত্তি বেদ।বেদের ভিত্তি জ্ঞান।’তিনি বললেন,’তাহলে ভারতে গরু নিয়ে এতো অশান্তি কেন?’আমি বললাম,’অশান্তি সর্বত্র নয়।
গরুকে যারা দেবতা মানে,তাদের সামনে অন্য ধর্মের কেউ গরুর মাংস ভক্ষণ করলে তারা ক্ষুব্ধ হয়। কথায় কথায় আমি তাকে আরো বললাম, ‘২০১৪ সালে একটি বিশেষ ধর্মীয় উৎসবের পর,
ভারতের কয়েকটি মন্দিরে রাতের অন্ধকারে গরুর ছিন্ন মস্তক ফেলে রাখা হয়।সেই থেকে অসন্তোষ ও উত্তেজনার সূচনা।
এরপর আমার জানা মতে ভারতে সর্বমোট ৮/১০টি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিরপেক্ষ ভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে…।
সাম্প্রতিক পৃথিবীতে এর থেকে অনেক বড় বড় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে চলেছে, অথচ তুমি ভারতের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ধর্মটাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেললে!’ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানালেন যে, কিছু বিশেষ অনলাইন এক্টিভিস্টের কৌশলী প্রচারে তিনি বিভ্রান্ত।
যুদ্ধ কেবল অস্ত্র দিয়ে হয় না।বুদ্ধি দিয়েও হয়।কয়েক বছর আগে পশ্চিম বঙ্গের একটি গির্জায় ৭০ বছর বয়সী একজন খ্রিষ্টান সন্নাসীনিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল।
এরপর বিশ্বব্যাপী প্রচার করা হয় যে, ভারতে খ্রিষ্টান ধর্ম কত জঘন্য ভাবে আক্রান্ত।৭০ বছর বয়স্কা সন্নাসীনিও এদের হাত থেকে রেহাই পায় না।আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সন্দেহ হয় এ কারণে যে,সেখানে ২১ বছর বয়স্কা নারী উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ৭০ বছর বয়স্কা বৃদ্ধা আক্রান্ত হলেন কেন।
ভিডিও ফুটেজ দেখে চেহারা চিনে, দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়।অপরাধী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভিন্ন ধর্মাবলম্বী।জিজ্ঞাসাবাদে ঐ অপরাধী জানায়, বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করতে তাকে পাঠানো হয়েছিল।
ভারতের পশ্চিম দিকের বর্ডার দিয়ে অনুপ্রবেশ করা কিছু যুবক ধরা পরেছে,যারা সুযোগ বুঝে বিদেশি মহিলা টুরিস্টদের ধর্ষণ করতো।একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও বিশেষ অনলাইন এক্টিভিস্টরা ঐ সময় বিশ্বব্যাপী প্রচার করে বেড়াতো,’ভারত হচ্ছে ধর্ষকদের দেশ, ঐ দেশে যেও না।’
ভারতে যে ধর্ষক নেই,তা নয়।অনেক আছে।কিন্তু ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামেও যদি একটা ধর্ষনের ঘটনা ঘটে,প্রতিবেশী দু’টি দেশের প্রথম শ্রেণীর পত্রিকাগুলোতে সেই ঘটনা ফলাও করে প্রচার করা হয়।অথচ নিজেদের দেশের ধর্ষণের ঘটনাগুলো সুকৌশলে চেপে যাওয়া হয়।
হিন্দুদের অভ্যন্তরীন জাতপাত সংক্রান্ত তিক্ততা ও বিবাদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ― যাতে হিন্দু সমাজের বর্ন বিদ্বেষ আরো বাড়ে এবং জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরে।
অপপ্রচারে একটুও বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না।প্রতিটি পক্ষের কাছ থেকেই দ্বায়িত্বশীল আচরণ কাম্য। সামাজিক ঐক্য সুদৃঢ় করার মধ্য দিয়ে, বুদ্ধির যুদ্ধের মোকাবেলা বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে হবে।
আরো পড়ুন