পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পরাজয় কি করে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত হয়? নবাব সিরাজদৌলা যদি ইংরেজদের হাতে পরাজিত না হয়ে মুঘলদের হাতে পরাজিত হতেন তাহলে কি আমাদের ইতিহাসবিদরা সেটাকে ‘বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যাওয়া’ বলতেন?
কারণ সরফরাজ খান ছিলেন দুর্বল অদক্ষ এক সম্রাট। সেই সুযোগে আলীবর্দী বাংলা বিহারের দায়িত্ব থাকা অবস্থায় বিদ্রোহ করে নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করেন।
আলীবর্দী খান তার শাসনকালে আফগান ও মারাঠাদের একের পর এক আক্রমন ঠেকাতে অস্থির থাকেন।
এখন প্রশ্ন হলো আলীবর্দী যদি বাংলার স্বাধীন নবাব হন এবং তার নাতির পরাজয় যদি বাংলার পরাজয় হয় তাহলে মারাঠারা যদি বাংলা দখল করত সেটাকে কি বাংলার পরাজয় হিসেবে দেখা হত? অবশ্যই!
এটাই আমাদের ঐতিহাসিকদের নীতি! কারণ মারাঠারা অমুসলমান! বাংলাদেশের ইতিহাস হচ্ছে মুসলমানদের ইতিহাস।
এখানে সেন মারাঠা ইংরেজ সকলেই হানাদার কিন্তু মুঘল আফগান আলীবর্দী সিরাজ সব বাংলার সন্তান! তাদের পরাজয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যায়!
আমি খুব সচেতনভাবেই ইতিহাসকে দেখছি। কিছুতেই ইংরেজ আর মুঘলদের এক করে দেখছি না।
মানছি মুঘলরা এদেশে থেকে এদেশের সন্তানই হয়ে গিয়েছিলেন। তাহলে মারাঠারা বা বাংলার সেন শাসনকে কেন আমরা বিদেশী বলি?
সেনরা এসেছিলো মধ্য ভারত থেকে। সেকথা তো আমরা ভুলে যাইনি। সিরাজদৌলা বাংলার নবাব ছিলেন। ইংরেজরা সেই বাংলা দখল করে নিয়েছে।
সবই মানা যাচ্ছে। কিন্তু কি করে সিরাজের পরাজয় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যায়? এর মানে হচ্ছে সিরাজের পরাজয়ে বাংলার মুসলিম শাসনের সূর্য অস্ত গিয়েছিলো।