Formulas of Vedic Mathematics

Formulas of Vedic Mathematics: বৈদিক গণিতের সূত্রাবলী

Formulas of Vedic Mathematics: বৈদিক গণিতের সূত্রাবলী। Vedas represent inexhaustible mine of profound wisdom. – Swami Pratyagamananda, 1965 বৈদিক গণিতের সূত্রপাত বিস্তারিত তুলে ধরেন হিন্দু পন্ডিত ও গণিতজ্ঞ যোগী স্বামী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থজী মহারাজের হাতে মাত্র বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে।

 

তীর্থজী মহারাজের জন্ম হয় ভারতে তৎকালীন মাদ্রাজ প্রভিন্সের এক ছোট্ট শহর তিরুনেলভেলিতে ১৮৮৪ সালের মার্চ মাসে। পূর্বাশ্রমে তাঁর নাম ছিল বেঙ্কটরমণ শাস্ত্রী। তাঁর বাবা পি. নরসিমহা শাস্ত্রী ছিলেন মাদ্রাজ প্রভিন্সের ডেপুটি কালেক্টর। বেঙ্কটরমণ শাস্ত্রী তাঁর অনন্যসাধারণ পান্ডিত্যের জন্য ভারতবর্ষের বিভিন্ন মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে সংস্কৃত, দর্শন, ইংরাজী, গণিত, ইতিহাস ও বিজ্ঞান ইত্যাদি সাতটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

 

সংস্কৃতে অসাধারণ দক্ষতা দেখাবার জন্য মাদ্রাজ সংস্কৃত অ্যাসোশিয়েশন তাঁকে ‘সরস্বতী’ উপাধি প্রদান করে। ১৯০৫ সালে গোপালকৃষ্ণ গোখলের তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিক্ষা প্রসার কর্মসূচীতে কাজ করেন। কিন্তু ভারতীয় প্রাচীন অধ্যাত্মবিদ্যা তাঁকে বেশী আকর্ষণ করত। ফলে ১৯০৮ সালে তিনি শৃঙ্গেরী শঙ্করাচার্যের কাছে অধ্যাত্মবিদ্যা শিক্ষার জন্য মহীশূরের শৃঙ্গেরী মঠে যোগদান করেন। কিন্তু জাতীয় নেতৃত্বের দাবীতে রাজামুন্দ্রীতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসাবে তিন বছর অধ্যাপনা করেন।

 

১৯১১ সালে তিনি পুনরায় শৃঙ্গেরী মঠে ফিরে গিয়ে প্রাচীন অধ্যাত্মবিদ্যার চর্চা শুরু করেন। ঐ বছর তিনি অথর্ব বেদের সূক্তগুলি পাঠ করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন যে, এর কয়েকটি অধ্যায়ে কতকগুলি গণিত সূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। আশ্চর্যজনকভাবে এগুলির কোনটিতেই সরাসরি গণিতের অবতারণা করা হয় নি। প্রফেসর বেঙ্কটরমণ সরস্বতী কর্ণাটকের শৃঙ্গেরী মঠে এই বিষয়ে আরো গভীর অধ্যয়নের জন্য মনোনিবেশ করেন ও সূক্তগুলির মর্মোদ্ধার করতে চেষ্টা করেন।

 

৮ বছর নিরলস সাধনার ফলস্বরূপ ১৯১৯ সালে তিনি ১৬টি মৌলিক বৈদিক সূত্রের পাঠোদ্ধার করেন এবং বৈদিক গণিত শাস্ত্রের সূত্রপাত ঘটে। তাঁর মতে এই সূত্রগুলির সাহায্যে মৌলিক ও জটিল গণিতের সমস্ত সমাধানের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

 

১৯১৯ সালের জুলাই মাসে বেনারসে তিনি সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত হলেন ও সন্ন্যাসাশ্রমে তাঁর নতুন নাম হল ‘স্বামী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থ’। মাত্র দু’বছরের মধ্যে ১৯২১ সালে তিনি শৃঙ্গেরী মঠের সারদা পীঠ শঙ্করাচার্য নির্বাচিত হলেন। এখানে তাঁর অন্য একটি উপাধিও জুটল। তিনি হলেন ‘জগৎগুরু’। এবার তিনি ভারতবর্ষের কোণে কোণে পরিভ্রমণ করতে শুরু করলেন সনাতন ধর্ম ও ভক্তিবেদান্ত তত্ত্বের প্রচারের কাজে।

 

১৯২৫ সালে পুরীর শঙ্করাচার্যের অনুরোধে তিনি পুরীর গোবর্ধন মঠে শঙ্করাচার্যের স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি ১৯৫৩ সালে নাগপুরে শ্রী বিশ্ব পূনর্নিমাণ সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বশান্তি ও বেদান্তের প্রচার কাজে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম শঙ্করাচার্য হিসাবে প্রথমে আমেরিকা যুক্তরাজ্য ও পরে ব্রিটেন পরিভ্রমণ করেন। এই সময়েই তাঁর ‘বৈদিক গণিত’ নামে ১৬ খন্ড পাণ্ডুলিপির রচনা যা পরে কোনভাবে হারিয়ে যায় ও আগুনে নষ্ট হয়ে যায়। ১৯৬০ সালের ২রা ফেব্রুয়ারী তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি মাত্র একটি খন্ডের পুনর্লেখনে সক্ষম হন।

বৈদিক গণিত প্রকৃতপক্ষে ১৬টি মৌলিক সূত্র সমন্বিত গণিতের এক উল্লেখনীয় পদ্ধতি। এই ১৬টি সূত্রের মোট ১৩টি অনুসূত্র রয়েছে। অর্থাৎ ২৯টি সূত্র-অনুসূত্রের দ্বারা গণিতের প্রায় সমস্ত দিক তিনি উদ্ভাসিত করে গেছেন। যদিও স্বামী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থজী মহারাজ দাবী করেছেন যে, এই সূত্রগুলি তিনি অথর্ব বেদের পরিশিষ্ট সূক্ত থেকে উদ্ধার করেছেন, তবে তাঁর মতের স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

 

সূত্র-অনুসূত্রগুলির ভাষাও বৈদিক বলে মনে হয় না। তবে বৈদিক যুগে অঙ্ক ও সংখ্যার বদলে বর্ণ ও অক্ষর ব্যবহার করা হত। সেকারণে সূক্তগুলি থেকে সরাসরি গণিতের কোন অনুমান পাওয়া না গেলেও এটা মনে রাখতে হবে যে, বেদের সূক্তগুলি প্রায়শঃই দ্ব্যর্থক ও গূঢ় অর্থবহ হত। তাই স্বামী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থজী মহারাজ তাঁর অগাধ পান্ডিত্যের সাহায্যে যে সূত্রগুলি খুঁজে পেয়েছেন সেগুলি বেদে উল্লিখিত সূক্তের অন্য নিহিত অর্থ বা গূঢ় অর্থ ব্যতীত বলেই মনে হয়। নীচে এই ১৬টি সূত্র অর্থসহ উল্লেখ করা হল।

১. একাধিকেন পূর্বেন (একের অধিক ও পূর্ব অপেক্ষা এক বেশী)
২. নিখিল নবতশ্চরম দশতঃ (সকল নয় থেকে, শেষটি দশ থেকে)
৩. উর্ধ্বতির্যগ্‌ভ্যাম (উল্লম্ব ও কোণাকুণি গুণন)
৪. পরাবর্ত যোজয়েৎ (পরস্পর স্থান পরিবর্তন ও প্রয়োগ)
৫. শূন্য সাম্যসমুচ্চয়ে (সাধারণ উৎপাদক, গুণনীয়ক বা সংযুক্তি সমান হলে তা শূন্যের সমান হবে)
৬. আনুরূপ্যে শূন্যং অন্তৎ (যদি একটি অনুপাতে থাকে তবে অপরটি শূন্যের সমান)
৭. সংকলন ব্যবকলনাভ্যাম (সংযুক্ত ও ব্যবচ্ছেদকরণ দ্বারা)
৮. পূরণাপূরণাভ্যাম (সম্পূর্ণকরণ-অসম্পূর্ণকরণ দ্বারা)
৯. চলনকলনাভ্যাম (অন্তরকলন বিদ্যা)
১০. য্যাবদূনম্‌ (ন্যূনতা দ্বারা)

১১. ব্যাষ্টিসমষ্টি (সাধারণ ও সুনির্দিষ্ট)
১২. শেষাণ্যডেন চরমেণ (শেষ অঙ্ক দ্বারা অবশিষ্টাংশ)
১৩. সোপান্ত্যদময়ন্ত্যং (দ্বিসংখ্যক বীজগাণিতিক রাশির শেষ সংখ্যা ও শেষপূর্বের দ্বিগুণ শূন্যের সমান)
১৪. একন্যূনেন পূর্বেন (একের ন্যূন ও পূর্ব অপেক্ষা এক কম)
১৫. গুণিতসমুচ্চয়ঃ (সমষ্টির গুণনফল)
১৬. গুণকসমুচ্চয়ঃ (সমস্ত গুণিতকগুলি)

বৈদিক গণিতের কৌশলগুলি সাধারণের বোধের অতীত নয়। তবে সূত্রগুলির সঠিক উপলব্ধি ও উপযুক্ত গাণিতিক দক্ষতা করায়ত্ত হলে বৈদিক গণিত অত্যন্ত সহজ বলে মনে হবে। সবগুলি সূত্রের ব্যাখ্যাসমৃদ্ধ আলোচনা আমাদের এই রচনার সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্ভব নয়। তাই এখানে মাত্র পাঁচটি সূত্রের ব্যাখ্যা উদাহরণসহ দেবার চেষ্টা করা হল।

সকল নয় থেকে, শেষটি দশ থেকে মনে করা যাক, দশের বৃহৎ ঘাত থেকে কোন সংখ্যা বিয়োগ করা হবে। সাধারণ অবস্থায় ‘ধরে নেওয়া’ বা ‘হাতে রাখা’ ইত্যাদি ঝামেলা আমাদের সামলাতে হয়। এক্ষেত্রে বৈদিক সূত্রের সাহায্যে অতি সহজেই বিয়োগ করে ফেলা যায়। শুধু মনে রাখতে হবে যে, ডানদিকের শেষ অঙ্কটিকে 10 থেকে এবং বাকীগুলিকে 9 থেকে বাদ দিতে হবে।

উদাহরণ ১: 10000 থেকে 4637 বাদ দাও। উদাহরণ ২: 1000000 থেকে 65731 বাদ দাও।
1 0 0 0 0 1 0 0 0 0 0 0
4 6 3 7 0 6 5 7 3 1
5 3 6 3 9 3 4 2 6 9

 

উল্লম্ব ও কোণাকুণি গুণন
এই উপায়ে যে কোন গুণ অথবা ভাগ করে ফেলা যায় অতি সহজেই। ডানদিকের অঙ্ক দুটিকে পরস্পর গুণ করতে হবে। এটি হবে উত্তরের প্রথম অঙ্ক। এরপর ডান ও বাঁদিকের অঙ্ক দুটিকে কোণাকুণি গুণ করে পরস্পর যোগ করতে হবে। এটি হবে উত্তরের দ্বিতীয় অঙ্ক। সবশেষে বাঁদিকের অঙ্ক দুটিকে পরস্পর গুণ করে উত্তরের শেষ অঙ্কটি লিখতে হবে। ডানদিকের ও মাঝের অঙ্ক 9 অপেক্ষা বেশী হলে যথানিয়মে ‘হাতে রাখা’ পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। উদাহরণ ১: 23 কে 12 দিয়ে গুণ কর। উদাহরণ ২: 234 কে 342 দিয়ে গুণ কর।

2 3 2 3 4
1 2 3 4 2
(2×1 2×2+3×1 3×2) (2×3) (3×3+ (4×3+ (4×4+ (4×2)
2 7 6 4×2) 2×2+ 3×2)
3×4)
8 2 0 3 0 2 2 8
সংযুক্ত ও ব্যবচ্ছেদকরণ দ্বারা
এই নিয়মে গুণ করে ফেলা খুবই সহজ। কেবল মনে রাখতে হবে যে এক্ষেত্রে base বা ভিত্তি সবসময়েই 10 বা 10 এর গুণিতক হবে।

উদাহরণ ১: 8 কে 7 দিয়ে গুণ কর।
10 থেকে 8 ঠিক 2 কম এবং 10 থেকে 7 ঠিক 3 কম। এক্ষেত্রে একটি সংখ্যার সাথে অন্য সংখ্যার ঘাটতি বিয়োগ করে বাঁদিকের অঙ্কটি পাওয়া যাবে। পরে উভয় সংখ্যার ঘাটতিদ্বয় গুণ করলেই ডানদিকের অঙ্কটি পাওয়া যায়। এখানে যে কোন সংখ্যার ক্ষেত্রে 5×5 নামতার বেশী প্রয়োজন হয় না।

8 2 7 3 8 – 3 অথবা 7 – 2 = 5 (প্রথম অঙ্ক) 2×3 = 6 (দ্বিতীয় অঙ্ক) 5 6
উদাহরণ ২: 84 কে 92 দিয়ে গুণ কর।
এখানে দুটি সংখ্যাই 100 এর খুব কাছে। তাই এক্ষেত্রে 100 থেকে উভয় সংখ্যার ঘাটতি গুণ করলে যা পাওয়া যায় সেটি হবে উত্তরের শেষ অংশ। পরে আগের মতই একটি সংখ্যার সাথে অন্য সংখ্যার ঘাটতি বিয়োগ করে বাঁদিকের অংশটি পাওয়া যাবে।
84 16 92 8 84 – 8 অথবা 92 – 16 = 76 + 1 (হাতে) (প্রথম অঙ্ক)16×3 = 128 (28 দ্বিতীয় অঙ্ক)
77 28 একের অধিক এবং পূর্বের অপেক্ষা এক বেশী

 

এই সূত্রটির সাহায্যে সহজেই 1/x9 (যেমন, 1/9, 1/19, 1/29, ইত্যাদি) ধরণের মান নির্ণয় করা যেতে পারে। অর্থাৎ যদি 1/19 এর মান নির্ণয় করতে হয়, তবে আমাদের পদ্ধতি শুরু করতে হবে ভাজক থেকে। এখানে দেখা যাচ্ছে, ভাজকে x =1 রয়েছে। সুতরাং ভাগফলের প্রথম অঙ্কটি হবে 1 (ডানদিক থেকে বাঁদিকে), সূত্র অনুযায়ী দ্বিতীয় অঙ্কটি হবে এর দ্বিগুণ (1×2 = 2 কারণ x +1= 2)।

 

এই গুণফলের মান যদি 9 এর অধিক হয়, তবে সাধারণ নিয়মানুযায়ী তা হাতে থাকবে ও পূর্ববর্তী অঙ্কে যোগ হবে। ভাগফলের তৃতীয় অঙ্কটি হবে দ্বিতীয় অঙ্কের দ্বিগুণ বা 2×2 = 4, একই নিয়মে পরের অঙ্কগুলি হবে 8, 6, 3, 7, …. ইত্যাদি। এভাবে যেতে হবে ভাজক সংখ্যা থেকে এক কম অঙ্ক পর্যন্ত অর্থাৎ 19 – 1 = 18টি অঙ্ক পর্যন্ত। এরপর বসাতে হবে দশমিক বিন্দু। আমরা পাব,

 

1/19 = .052631578947368421 কেমন, সহজ নয়?
এছাড়া এই সূত্রের প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায় সাধারণ গুণের ক্ষেত্রে যেখানে গুণক ও গুণনীয়কে বাঁদিকের প্রথম অঙ্কটি সমান এবং ডানদিকে এককের অঙ্কটির যোগফল 10। নীচের উদাহরণে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
উদাহরণ ১: 75 এর বর্গ নির্ণয় কর। 7 5 7 5 এখানে এককের অঙ্কটি 5 হওয়ায় 5×5 = 25 হবে। দশকের অঙ্কে 7 এর সঙ্গে (7×8)56 (5×5)25 7+1=8 গুণ করতে হবে।

 

উদাহরণ ২: 37 কে 33 দিয়ে গুণ কর। 3 7 3 3 এখানে এককের অঙ্কগুলি 7 ও 3 হওয়ায় 7×3 = 21 হবে। দশকের অঙ্কে 3 (3×4)12 (7×3)21 এর সঙ্গে 3+1= 4 গুণ করতে হবে। পরস্পর স্থান পরিবর্তন ও প্রয়োগ এই নিয়মে অতি সহজে যে কোন সংখ্যাকে 11 দিয়ে গুণ করা যায়।

 

গুণফলের একক অঙ্কটি গুণকের একক অঙ্ক থেকে আসে এবং শতক বা সহস্রকের অঙ্কটি গুণকের দশক অঙ্ক থেকে লেখা যায়। শুধু মধ্যের দশকের অঙ্কটি গুণকের অঙ্কদুটির যোগফলের সমান। এই যোগফলের মান যদি 9 এর অধিক হয়, তবে স্বাভাবিক নিয়মে ‘হাতে রাখা’ পদ্ধতি প্রযুক্ত হবে। নীচের উদাহরণগুলি লক্ষ্যণীয়।

উদাহরণ ১: 35 কে 11 দিয়ে গুণ কর। 3 5 1 1 এখানে 35 এর এককের অঙ্ক 5 উত্তরে এককের অঙ্ক হবে। অঙ্কদুটির যোগফল 3 8(3+5) 5 3+5 = 8 উত্তরে দশকের অঙ্ক হবে। 35 এর দশকের অঙ্ক 3 উত্তরে শতকের অঙ্ক হবে। উদাহরণ ২: 59 কে 11 দিয়ে গুণ কর।

5 9 1 1 এখানে 59 এর এককের অঙ্ক 9 উত্তরে এককের অঙ্ক হবে। অঙ্কদুটির যোগফল 6 4(5+9)9 5+9 = 14 এর 4 উত্তরে দশকের অঙ্ক হবে। 1 হাতে থাকবে ও 5 এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে 6 উত্তরে শতকের অঙ্ক হবে।
উদাহরণ ৩: 768 কে 11 দিয়ে গুণ কর।

7 6 8 1 1 এখানে 768 এর এককের অঙ্ক 8 উত্তরে এককের অঙ্ক হবে। দশক ও একক
8(7+1)4(7+6+1)4(6+8)8 অঙ্কদুটির যোগফল 6+8 = 14 এর 4 বসবে ও 1 হাতে থাকে। শতক ও দশকের অঙ্কদুটির যোগফল 7+6= 13 এর 3 ও হাতের 1 যুক্ত হয়ে 4 বসবে এবং হাতে থাকবে 1 যা শতকের অঙ্ক 7 এর সাথে যুক্ত হবে। এই 8 আগের মতই উত্তরে বসবে।

উপরের উদাহরণে এটাই স্পষ্ট হল যে অঙ্কের শত কচকচি থাকলেও কোন কোন ক্ষেত্রে তা একদম সহজ। বৈদিক গণিতের এটাই অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অত্যন্ত কঠিন ও দুরূহ বিষয়সমূহ অতি সহজভাবে প্রকাশ করা হয়েছে সূত্রের মাধ্যমে। এই সবগুলি সূত্রেরই জটিল গাণিতিক ব্যাখ্যা সম্ভব। তবে আজ আর তা এখানে বিশ্লেষণ করে রসহানি ঘটাব না। শুধু কয়েকটি কথা বলব।

 

বিংশ শতকের প্রথম ভাগে বৈদিক গণিতের সূত্রপাত হয় সে কথা আগেই বলেছি। স্বামীজির মৃত্যুর পরে দেশে-বিদেশে এই বিষয়ে অনেক চর্চা হয়েছে। ১৯৬৫ সালে তাঁর বইটি প্রকাশ পাওয়ার পরেই সারা পৃথিবীতে সাড়া পড়ে যায়। কেনেথ উইলিয়ামস, অ্যান্ড্রু নিকোলাস, জেরেমি পিকলস প্রভৃতি নামী গাণিতিক এ বিষয়ে উৎসাহ দেখান। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লন্ডনের সেন্ট জেমস স্কুল, কুইন্সগেটের মত স্কুলগুলিতে বৈদিক গণিতের চর্চা শুরু হয়ে যায়।

 

১৯৮১ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত অ্যান্ড্রু নিকোলাসের ৪ বার ভারত সফরের পরে ভারতীয় গাণিতিকগণ বৈদিক গণিত বিষয়ে চর্চা শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে এই তিনজন গণিতজ্ঞের চেষ্টায় বৈদিক গণিত অনুসন্ধান কেন্দ্র স্থাপিত হয়।

 

১৯৮৮ সালে মহর্ষি মহেশ যোগী বৈদিক গণিতের গুরুত্ব ও আশ্চর্য গুণ উপলব্ধি করেই সমস্ত মহর্ষি বিদ্যালয়গুলিতে বৈদিক গণিতের পাঠ আবশ্যিক পাঠক্রমে যুক্ত করেন। তিনি বৈদিক গণিতের সূত্রগুলিকে ‘কসমিক কম্পিউটার’ আখ্যা দেন।

 

এই সম্পর্কিত একটি পাঠক্রম প্রস্তুত হয় ইংল্যাণ্ডের স্কেলমার্সডেল স্কুল, ল্যাঙ্কাশায়ারের তত্ত্বাবধানে এবং ১৯৯৮ সালে সেটি The Cosmic Calculator নামে প্রকাশিত হয়। ১৯৯১ সালে কেনেথ উইলিয়ামসের বৈদিক গণিতের উপর লেখা The Natural Calculator বইটি প্রকাশিত হয়েছে। এটা খুবই পরিতাপের বিষয় যে জগৎগুরু স্বামী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থজীর মত এতবড় একজন প্রতিভাশালী গাণিতিকের প্রকৃত মূল্যায়ন আজও হয় নি।Formulas of Vedic Mathematics

References:
1. Scripture E. W. (1891) American Journal of Psychology, Vol. IV pg. 1-59
2. Mitchell F.D. (1907) American Journal of Psychology, Vol. XVIII pg. 61-143
3. Williams K.R. (1991) The Natural Calculator, Motilal Banarasidass, Baranasi

রাজীব সরকার
সহকারী অধ্যাপক, বি.এড. বিভাগ
জে.আর.এস.ই.টি. কলেজ অফ এডুকেশন, চাকদহ