সমাজসেবার জন্য অর্থ যোগাড় করতে বাগানের আম বিক্রি করেছেন বিজেপি সাংসদের মেয়ে
রাস্তার ধারে বসে ছিলেন তরুণী | সামনে এক ঝুড়ি আম | হাসি মুখে বিক্রি করছেন | রীতিমতো দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মেপে | তাঁর দক্ষতা দেখে কে বলবে‚ তিনি সাংসদের কন্যা ? এবং ফল বিক্রি করছেন এনজিও-কে দেবেন বলে !এভাবেই প্রচারের আলো থেকে শত যোজন দূরে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে ভালবাসেন চন্দ্রাবতী মুণ্ডা | তাঁর বাবা‚ কারিয়া মুণ্ডা‚ ঝাড়খণ্ডের খুঁটি থেকে নির্বাচিত সাত বারের বিজেপি সাংসদ |
সাংসদ-কন্যা চন্দ্রাবতী বিভিন্ন রকম সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত | এ বার তাঁদের বাগানের গাছে উপচে পড়েছিল আমের ফলন | অত আম দিয়ে কী হবে ? চন্দ্রাবতী ঝুড়িতে করে নিয়ে বসে পড়েছিলেন বাজারের পাশে | বিক্রির টাকা এনজিও-কে দেবেন বলে |
কারিয়ার এই আচরণের মূলে তাঁর বাবা | প্রবীণ বিজেপি নেতা কারিয়া ১৯৭৭-এ মোরারজি দেশাই-এর মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন | ২০০৯-এ লোকসভার ডেপুটি স্পিকার-ও হয়েছিলেন | কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন বাজপেয়ী-আদবাণীর মতো নেতাদের সঙ্গে | তাঁর সমসাময়িক অনেকেই আজ একেক জন রাজনৈতিক-কেউকেটা | কিন্তু কারিয়া থেকে গেছেন একজন সাংসদ রূপেই |
আজও তিনি নিজের গ্রাম আনিগারায় এলে থাকেন মাটির বাড়িতে | হাল-বলদ নিয়ে নেমে পড়েন জমি চষতে | কিংবা নিড়ানি হাতে আগাছা কাটতে | গর্ব করে বলেন‚ পরিবারের জন্য ফল-সব্জি বাগানেই হয় | বাইরে থেকে কিনতে হয় না | এমনকী‚ গ্রামের অনেকেই স্পষ্ট করে জানেন না দিল্লিতে কারিয়া কত গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন | তাঁরা দিব্যি মাটির দাওয়ায় আড্ডা জমান ‘প্রতিবেশী‘ কারিয়ার সঙ্গে |
মাটির কাছাকাছি থাকা সাংসদ‚ কারিয়া মুণ্ডা এতটাই জনপ্রিয়‚ তিনি নির্ভয়ে সামান্য নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে ঘুরে বেড়ান মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা দিয়েও | বাবার দেখানো এই পথে পা রেখেছেন মেয়ে চন্দ্রাবতীও | বাবা-মেয়ে দুজনে যেন‚ রাজনীতির পঙ্কিল আবর্তে ফুটে থাকা পদ্ম ফুল |