বামপন্থীদের ইতিহাস ঘাঁটলে কেবল দুর্গন্ধই বেরোতে থাকে । সেই দুর্গন্ধের রেফারেন্স হিসাবে বহুবার এই বইটার নাম শুনেছি।

‘আপিলা চাপিলা’…!
বামপন্থীদের ইতিহাস ঘাঁটলে কেবল দুর্গন্ধই বেরোতে থাকে । সেই দুর্গন্ধের রেফারেন্স হিসাবে বহুবার এই বইটার নাম শুনেছি। বইটার পিডিএফ খুঁজছিলাম। পিডিএফ সম্রাট Ayan Chakraborty দার পোষ্ট ঘেঁটে পেলাম। খুঁজতে গিয়ে উপরি হিসাবে পেলাম Pinaki Paul দা র দুর্দান্ত রিভিউ। এরপর আমার আর কিছু লেখার রইলো না। যেটা পড়লে পরিষ্কারই বোঝা যায় বামপন্থীরা যে সত্যিই প্রকৃতির আজব সৃষ্টি। এরা কি বাই ডিফল্ট কতগুলো মানসিক সমস্যা নিয়েই জন্ম নেয়? এরা কি জন্ম থেকেই ইসলাম পন্থী হয়? রক্ত ঋণ? আপনারাও ডাউনলোড করে পড়ে নিন।

পিনাকীদার বয়ানে –

সম্প্রতি বিখ্যাত বামপন্থী অর্থনীতিবিদ, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্রের আত্মজীবনী ‘আপিলা চাপিলা’ পড়ে শেষ করলাম।

1) উনি খাঁটি বামপন্থী, ওনার ভাষায়, “ভদ্রলোক নই, কমিউনিস্ট ‘। যাইহোক, সেই কারণেই 1942এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধী, কেননা সেটা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে। সোভিয়েত ইউনিয়ন আর ব্রিটিশ একসঙ্গে লড়াইয়ে সামিল, তাই এই আন্দোলন কমিউনিস্ট বিরোধী!
       
2) স্বাধীনতার পর উনি পাকিস্তানে থেকে যাওয়া সমীচীন মনে করেন, কেননা সেখানে সবাই সমান। এমনকি পাকিস্তানি পতাকা হাতে কলকাতার দলীয় সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন 1948এ। কিন্তু তার কয়েকমাস পর ভারতে কেন চলে আসতে হল, সেই ব্যাপারে নিশ্চুপ।

3) এমন কঠোর কমিউনিস্ট কিন্তু  ওয়াশিংটনের ইকনমিক ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটে যোগ দেওয়ার আগে একবারও ভাবেননি, কেননা ওখানে বিশ্বব্যাংকের টাকা খাটে, আর ভারত বিশ্বব্যাংকের সদস্য। তবে ভারতের টাকায় ওনাকে বেতন দেওয়া হত কিনা সেই ব্যাপারে কিছু বলেননি।

4) উনি বিজেপি, আর এস এস এদের সদস্যদের কাছ থেকে দেখার পর ধর্মান্ধ তা কি, সেটা জানতে পেরেছেন। তবে পুর্ব পাকিস্তানে থাকার সময় বোঝেননি। ওখানে ধর্মীয় ঔদার্য দেখার পর ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

5) বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর উনি পাকিস্তানি বান্ধবী খুরশিদের পুত্র কামালের কাছে চিঠি লিখে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। যদিও বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গণে সাতের দশকের শেষের দিকে এক মুসলিম প্রত্নতাত্ত্বিক হিন্দু মন্দিরের অবশেষ খুঁজে পান, এবং সেটা ইরফান হাবিব, রোমিলা থাপার প্রমুখ বামপন্থী ঐতিহাসিকরা চেপে দেন, তবুও বাবরি মসজিদ ধ্বংস সমর্থনযোগ্য নয়, এবং সেই নিয়ে কোন পাকিস্তানির কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও সমর্থন যোগ্য নয়।

6) আটের দশকের শুরুতে ইন্দিরা গান্ধী কাশ্মীরে সম্পুর্ন অনৈতিক ভাবে ফারুক আব্দুল্লাকে পদচ্যুত করেন। উনি প্রতিবাদ করতে কাশ্মীর ছুটতে পারেন, কিন্তু প্রায় সেই সময় মরিচঝাঁপি গণহত্যা বা বিজন সেতু হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নিশ্চুপ।

7) প্রাথমিকে ইংরেজী তুলে দেওয়া ওনার মতে ঠিক, কেননা এতে গ্রামের অনুন্নত পরিবারের ছাত্রদের কাছে চাপ তৈরি হয়। তাছাড়া প্রাথমিকে ইংরেজী পড়ানো সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয়। তবে যে দেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ইংরেজী ছাড়া উপায় নেই সেখানে এর ফলে কি হয়েছে সেই ব্যাপারে উনি নিশ্চুপ।

8)নয়ের দশকের অর্থনৈতিক সংস্কারের উনি তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। মনমোহন সিংহকে নাকি আমেরিকার কথায় অর্থমন্ত্রী করা হয়। এর ফলে আমরা আমেরিকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছি। যদিও চিন অনেকদিন আগে থেকেই সেই রাস্তায় হাঁটছে, তবুও আমাদের চিনকে অনুসরণ করা অনুচিত। তবে উদার অর্থনীতির পরবর্তী সময়ে ভারতের ইকনমিক গ্রোথ নিয়ে উনি নীরব।

9) রাজীব গান্ধী ওনার কাছে ‘প্রায় নিরক্ষর’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পোটোপাড়ার মহিলা।

10) বামফ্রন্ট জমানায় পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও উনি নীরব।     এছাড়া নিজের ঢাক নিজেকেই পেটাতে হয়। তাই ওনার লেখার কারা সুখ্যাতি করেছে, উনি লিখলে কোন পত্রিকার বিক্রি বেড়েছে সেগুলো অবশ্যই উল্লেখ করেছেন।

বইটা পড়ে বামপন্থী মাত্রই ভন্ড, এই ধারণা আরও দৃঢ় হলো।

http://www.amarboi.com/2018/05/apila-chapila-ashok-mitra.html?m=1