দেশদ্রোহিতার সংজ্ঞা টা কি???

দেশদ্রোহিতার সংজ্ঞা টা কি???
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ

****** এই লেখাটা গত বছর, (১লা আগষ্ট, ২০১৬ সালে) পোষ্ট করেছিলাম। মনে হয় আবার একটু পড়ে দেখা ভালো )******

************************************************************************************************************************************************

প্রথমে হায়দ্রবাদ বিশ্ববিদ্যালয়, তারপর জওরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, তারপর এখন বাংলার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। পড়ুয়ারা মিছিল করে রাষ্ট্রদ্রোহিদের পক্ষে সওয়াল করছে, পাকিস্তানের জয়ধ্বনি দিচ্ছে , ভারত কে টুকরো করার কথা বলছে। কয়েকজন পড়ুয়া গ্রেফতার হয়েছে, বহুজন গালাগাল পাচ্ছে।

ভারত বিরোধী কাজ, প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ ভাবে কি আজ থেকে চলছে?? শুরু তো হয়েছে সেই ১০০০ বছর থেকে যখন আরবী/তুর্কিরা ভারত আক্রমন করতে শুরু করেছিলো। পানিপথের শেষ যুদ্ধে মহম্মদ ঘোরী যখন দিনের শেষে সন্ধি প্রস্তাব দিলো এবং পৃথ্বিরাজ সেটা গ্রহন করলেন, হিন্দু সৈন্য রা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে গেলো, তখন রাত ২ টোর সময় পৃথীরাজের সৈন্য ছাঊনি আক্রমন করার প্রস্তাব কে দিয়েছিলো???? পৃথ্বিরাজের শশুর (সংযুক্তার বাবা) কানপুরের রাজা জয়চাদ।

নিজেদের ভোট ব্যংক অটুট রাখতে এবং ভোটে জিতে আসার জন্য নানা ফন্দি ফিকির করে এক সম্প্রদায়ের মানুষকে যা খুশী তাই করার মৌরষী পাট্টা কারা দিচ্ছে ???? আমাদের ই রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা, তাই নয় কি?

মাত্র কয়েক মাস আগে আমাদের রাজ্যের প্রধান প্রশাসক, এক ব্যাক্তিকে প্রকাশ্যে সম্মান জানালেন (এই বিষয়ে আমি লিখেছিলাম ফেসবুকে তা কোনো বাঙ্গালীর মনপছন্দ হয়নি)। কে এই ব্যাক্তি?????
আল্লামা ইকবালের নাতি। আল্লাম ইকবাল কে ছিলেন কি করেছেন? তিনি কবি ছিলেন এবং “সারা জাঁহাছে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা” এই গান টা লিখেছিলেন। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আমাদের ভারতবর্ষ কে ভেংগে দুই টুকরো করার মুলে ছিলেন এই আল্লামা ইকবাল।

“দ্বিজাতী তত্ব”, অর্থ্যাত ভারতের হিন্দুরা এবং মুসলমানেরা দুটি আলাদা জাতি এবং এই দুই জাতি কিছুতেই এক সংগে একদেশে, এক শাসন ব্যবস্থায় থাকতে পারেনা, এই তত্ত্ব কার তৈরী?????? আল্লামা ইকবালের। এই তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগের প্রস্তাব পাশ করা হয় “মুসলিম লীগের” ১৯৪১ সালের লাহোর অধিবেশনে। তার মাত্র ৬ বছর পরে জিন্নার নেত্তৃত্তে দেশ ভাগ করে নিয়ে যায় “মুসলিম লীগ”।

তাহলে মোদ্দা কথা এই দাড়ালো আল্লামা ইকবাল পুরপুরি ভাবে ছিলেন ভারত বিরোধী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মাতব্বর। লন্ডনে প্রাকটিসরতো জিন্নাকে এই ইকবাল চিঠির পর চিঠি দিয়ে ভারতে এনে ভারত ভাংগার জন্য রাজী করিয়েছিলেন।

আমাদের দেশের এক অংগ রাজ্যের এক মুখ্য প্রশাসক সেই ভারত বিরোধী, হিন্দুদের ঘৃনাকারী, বিচ্ছিন্নতা বাদী বুদ্ধিজীবির মৃত্যুর বেশ পর, তার নাতিকে এনে সরকারী অর্থে ঘটা করে, উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানালেন। আর আমরা বাংগালী রা কি করলাম ??? বগল বাজিয়ে তা ধিন ধিন করে নাচলাম এবং নেচেই চলেছি। অর্থ্যাত প্রকারান্তরে সেই বিচ্ছিন্তাবাদীর সহমর্মিদের সমর্থন করে চলেছি।

সর্বনাশ আমাদের হবে না তো কাদের হবে???????