আমি ইসলামোফোবিক রাজর্ষি বলছি।

আমি ইসলামোফোবিক রাজর্ষি বলছি :
———————————————
আমরা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা এখন পরিবর্তনের রাজ্যে বাস করি । হ্যা, এই পরিবর্তন আমরা ঘটিয়েছি ৩৪ বছরের তথাকথিত বাম জমানাকে হটিয়ে ঘাস ফুলকে বুকে টেনে নিয়ে । এখন আমরা বেশ একটা ‘ফিল গুড’, ‘ফিল গুড’ আর্থ-সামাজিক পরিবেশে এই বাংলায় দিন কাটাই । এই যে আজকে পরিবর্তনের পশ্চিমবাংলা, সেই বহুল চর্চিত পরিবর্তনের শুরুটা মনে আছে তো আপনাদের ? আমি একটু মনে করিয়ে দি আবার ।

পশ্চিমবঙ্গের পরিবর্তনের ঝড় প্রথম তুলেছিল মুসলিম ধর্মীয় দল জামাতে উলেমা হিন্দের জনাব সিদ্দিকুল্লা। সিঙ্গুরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ও মমতা দেবীর ২৬ দিনের অনশনের পরও কোন অগ্রগতি হলোনা । ২৯শে ডিসেম্বর ২০০৬-এ ২৫ দিন পর যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুরােধে অনশন বন্ধ করে তখনও পরিবর্তনের কথা শােনা যেত না ! অনশন শেষের ৫ দিন পরে ৩ জানুয়ারি ২০০৭-এ নন্দীগ্রামে জমি জরীপ করবার সরকারি দলের উপর আক্রমণ চালায় জামাতে উলেমা হিন্দের কর্মীরা। পুলিশের জীপে আগুন ধরানাে হয়, রাস্তা কেটে দেওয়া হয়।

 এই প্রথম জমি রক্ষার জন্য হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হয় যার নেতৃত্বে ছিল সিদ্দিকুল্লা। এই শুরু আমাদের আজকের পরিবর্তনের, এতে পুলিশ কর্মী খুন হলো, দলেদলে সিপিএম সমর্থকরা ঘরছাড়া হলো । এরপরে এই আন্দোলন তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে চলে গেলো । 
পরিবর্তনের হাওয়ায় বঞ্চিত মুসলমান সমাজ এখন সিপিআইএম ছেড়ে তৃণমূলে যােগ দিয়েছে আর তার নেতৃত্ব দিচ্ছে কয়েকজন ইমাম। পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের এখনও কোন শক্তিশালী রাজনৈতিক দল নেই। জনসংখ্যায় কেরালার মতন মুসলমানদের অনুপাত হলেও দেশভাগ, মুসলিম মধ্যবিত্তের অনুপস্থিতি ও ধনী বাঙালি মুসলমানের সংখ্যাল্পতায়, 
এখানে মুসলিম লীগের মতন কোন দলের প্রভাবশালী উপস্থিতি এখনও হয়ে ওঠেনি আর এই অভাবটার পুরো সুযোগ কাজে লাগিয়েছে মুসলমান ধর্মীয় নেতৃত্ব । একদা, কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম বা ফুরফুরা শরীফের ইমাম, সিদিকুল্লা এখন এই বাংলার ইসলামি রাজনীতির মুখ। এই ইমামরাই যখন তসলিমা নাসরিনের সব রকমের বেআইনী ফতােয়া জারী করেছিলেন তখন সিপিআইএম ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা তাদের নীরবে সমর্থন করেছেন। 
তসলিমা সংক্রান্ত মামলা যখন কলকাতা উচ্চ আদালতে চলতাে তখন একদল মাদ্রাসা ছাত্র আরবি পােষাক পড়ে বিক্ষোভ দেখাতো আর পশ্চিমবঙ্গের কবিকুল, বুদ্ধিজীবিরা, নারী সংগঠনেরা মজা লুটতো ।
তৃণমুল নেতা ইদ্রিস আলির নেতৃত্বে ২১ নভেম্বর ২০০৭ সালে তসলিমা নাসরিনকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিতাড়নের দাবীতে এই বাংলার মুসলিম তৌহিদী জনতার সারাদিন ধরে কলকাতায় তান্ডব সব রাজনৈতিক দল নীরবে সমর্থন করেছিল এবং এই মৌলবাদী দাবী মেনে সিপিআইএম তাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বহিষ্কার করেছিল, অন্যেরা অনেকেই ভুললেও, ভুলিনি আমি । 
এইবাংলার মুসলিম তৌহিদী জনতার এই বেয়াদপির উৎস হলো মাদ্রাসা শিক্ষা । মাদ্রাসার পক্ষে এই বাংলার অধিকাংশ তাবড় তাবড় রাজনৈতিক দলগুলো । মাদ্রাসায় আপত্তি কিসের ? অন্য কোন ধর্মের যখন আলাদা এরকম সরকার স্বীকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা নেই তখন হঠাৎ মুসলমানদেরই বা থাকবে কেন ? 
রামকৃষ্ণ মিশন বা সেন্ট জেভিয়াসের ছাত্রছাত্রীরা তো রাজ্যের বা কেন্দ্রীয় কোন অধর্মীয় বাের্ডের সিলেবাসেই পড়াশােনা করে। তাহলে মুসলমান ছাত্রছাত্রীদের কেন মাদ্রাসার মত মধ্যযুগীয় ধর্মীয় কারাগারে পাঠাতে হবে ? মাদ্রাসায় কি পড়ানাে হয় ? 
প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে হব আরবি ভাষা, ইসলাম পরিচয়, কোরান, হাদিস, আকায়িদ, ফিকাহ, ফারায়েজ, ইত্যাদি । কোরানের মাধ্যমে ইসলাম কি শেখাবে আশা করি ব্যাখ্যা করতে হবেনা ! মাদ্রাসা শিক্ষা, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ইসলামি মৌলবাদী এবং সন্ত্রাসবাদী আদর্শ প্রচারের প্রধান একটা মাধ্যম ।
 খোদ কলকাতাতেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতন একটি সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার পরে, এইবার ভারতের হায়দ্রাবাদে জন্ম নেওয়া একটা আপাদমস্তক মুসলিম দল রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করেছে। 
পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান মধ্যপ্রাচ্যের পথেই হাঁটছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই ।
পরিবর্তনের আসল মজাটা এইবার অচিরেই টের পাওয়া যাবে । আর হ্যা, আমি ইসলামোফোবিক……….
[
](https://www.facebook.com/photo.php?fbid=175854656808408&set=a.127050908355450&type=3&eid=ARDYUuyq9LPeNZqAxSsdr9-1Z_8ridrOkvIsLVuC_c9paSHKfQdSM_REzcMA3PDXX9kmFYvpTAKV359j)