Courtesy JSourav Bhattacharjee
ধর্মতলার রানী রাসমণি রোডে জমায়েত চলছে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের। বিরোধিতা চলছে বাবরি মসজিদ ভাঙার। আওয়াজ উঠছে নারায়ে তকবির আল্লা-হু-আকবর। বাবরি মসজিদের ধ্বংসকারীদের শাস্তি চাই। সত্যি, দেখে ভাল লাগছে, আমার দেশটা এখনো সাম্প্রদায়িক হয়ে যায়নি। মুসলিম ভাইদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে লড়াই করতে পথে নেমেছে কিছু হিন্দু লোকজন। মুসলিমদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই তারা দাবি তুলছে বাবরি মসজিদের ধ্বংসকারীদের শাস্তির জন্য। যতই আওয়াজ উঠুক, ভারত তেরে টুকড়ে হোঙ্গে! এই দেশকে কে ভাঙতে পারবে!
ফুরফুরে মনে সাইড দিয়ে হেঁটে কিছুটা এগিয়ে এলাম ইডেনের দিকে। দেখি রাস্তার উপর তিন-চারজন বয়স্ক লোক ফুটপাতে কী যেন আঁকিবুকি করছে। কৌতূহল বাড়ল। ঝু্ঁকলাম। দেখলাম একজন লিখেছে,
“বরিশাল, ১৯৭৫, রাধাকৃষ্ণের মন্দির।”
লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনার নাম কী?” উনি ঠিক মনে করতে পারছেন না। শুধু মনে আছে কোন একসময় কোন এক বাংলাভাষী দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে এসেছিলেন। কোথাও না কোথাও রয়ে গেছে আরও একটা স্মৃতি, ওঁর বাড়ির বহু পুরনো রাধাকৃষ্ণের মন্দির চোখের সামনে ভাঙতে দেখার।
পাশে দেখলাম আর এক বৃদ্ধকে, বয়সটা একটু বেশিই, কাঁচাপাকা চুলের সংখ্যাটা একইরকম। দেখলাম উনি লিখছেন, “শিবমন্দির, পান্ডুয়া।” উনিও স্মৃতি হারিয়েছেন। শুধু স্মৃতিতে রয়ে গেছে পান্ডুয়ার এক শিবমন্দির, যেটার চিহ্ন অবশ্য আজ আর কোথাও মেলে না।
তবে পান্ডুয়া নিয়ে আমাদের নতুন করে বলার কিছু নেই। পান্ডুয়া বললেই আমাদের মাথায় আসে “আদিনা মসজিদ”, আমাদের গর্বের ইতিহাস।
এরকমই আরও কিছু লেখা দেখলাম ওঁরা লিখে চলেছেন। ধীরে ধীরে দেখলাম রাস্তা ভরে উঠছে কিছু তালিকাতে আর ঐ পাগল লোকগুলো অর্ধেক অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া স্মৃতি নিয়ে লিখে চলেছে একের পর এক নাম। লিখে চলেছে,
১. কাশ্মীরের মার্তণ্ড সূর্য মন্দির
(মুসলিম শাসক সিকান্দার বুৎসিকান ধ্বংস করেন।)
২. মধেরা সূর্য মন্দির –
(আলাউদ্দিন খিলজী ধ্বংস করেন।)
৩. অযোধ্যার রামের জন্মভূমি মন্দির –
(বাবর ধ্বংস করেন। আবার কারো মতে পূর্বের মুসলিম শাসকরা এর ধ্বংসকারী।)
৪. কাশী বিশ্বনাথ বারাণসী –
(১১৯৪ সালে মুসলিম আক্রমণকারীরা ধ্বংস করেন। পরবর্তীকালে এটি পুনর্নির্মিত হয়। ঔরঙ্গজেব পুনরায় ১৬৬৯ সালে এটি ধ্বংস করেন।)
৫. কৃৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির – ঔরঙ্গজেব ধ্বংস করেন।
৬. সোমনাথ মন্দির – মোট ১৭ বার এই মন্দির লুঠ ও ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকারীদের মধ্যে গজনীর মামুদ, আলাউদ্দিন খিলজীর সেনাপতি আফজল খান এবং ঔরঙ্গজেবের নাম উল্লেখযোগ্য।
৭. হাম্পির মন্দির – মুঘল আক্রমণকারী।
৮. রুদ্র মহালয় – প্রথমে আলাউদ্দিন খিলজী ও পরে প্রথম আহমেদ শাহ এটি ধ্বংস করেন।
৯. বৃন্দাবনের মদনমোহন মন্দির – ঔরঙ্গজেবের বৃন্দাবন আক্রমণকালীন এই মন্দিরের শিখর ধ্বংস হয়।
১০. মীনাক্ষী মন্দির –
মালিক কাফুর এই মন্দির ধ্বংস করেন।
১. কাশ্মীরের মার্তণ্ড সূর্য মন্দির
(মুসলিম শাসক সিকান্দার বুৎসিকান ধ্বংস করেন।)
২. মধেরা সূর্য মন্দির –
(আলাউদ্দিন খিলজী ধ্বংস করেন।)
৩. অযোধ্যার রামের জন্মভূমি মন্দির –
(বাবর ধ্বংস করেন। আবার কারো মতে পূর্বের মুসলিম শাসকরা এর ধ্বংসকারী।)
৪. কাশী বিশ্বনাথ বারাণসী –
(১১৯৪ সালে মুসলিম আক্রমণকারীরা ধ্বংস করেন। পরবর্তীকালে এটি পুনর্নির্মিত হয়। ঔরঙ্গজেব পুনরায় ১৬৬৯ সালে এটি ধ্বংস করেন।)
৫. কৃৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির – ঔরঙ্গজেব ধ্বংস করেন।
৬. সোমনাথ মন্দির – মোট ১৭ বার এই মন্দির লুঠ ও ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকারীদের মধ্যে গজনীর মামুদ, আলাউদ্দিন খিলজীর সেনাপতি আফজল খান এবং ঔরঙ্গজেবের নাম উল্লেখযোগ্য।
৭. হাম্পির মন্দির – মুঘল আক্রমণকারী।
৮. রুদ্র মহালয় – প্রথমে আলাউদ্দিন খিলজী ও পরে প্রথম আহমেদ শাহ এটি ধ্বংস করেন।
৯. বৃন্দাবনের মদনমোহন মন্দির – ঔরঙ্গজেবের বৃন্দাবন আক্রমণকালীন এই মন্দিরের শিখর ধ্বংস হয়।
১০. মীনাক্ষী মন্দির –
মালিক কাফুর এই মন্দির ধ্বংস করেন।
এরপর নালন্দা, বিক্রমশীলা, এসব লিখতে লিখতে এই বৃদ্ধ লোকগুলি কোথায় যেন হারিয়ে গেল। চোখের সামনে থেকে পুরো অদৃশ্য হয়ে গেল।
কয়েকবছর আগে একটা সিনেমা দেখেছিলাম।
A Wednesday, সেখানে দেখানো হয় একজন সাধারণ ভারতীয় বৃদ্ধ জেল থেকে সন্ত্রাসবাদীদের বার করে বোম দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশ কমিশনারের চরিত্রে অভিনয় করা অনুপম খের তাকে প্রশ্ন করে,
– আপনি কে?
– আই অ্যাম জাস্ট আ কমন ম্যান।
– এটা করে কী লাভ হল? এভাবে কিছু করা সম্ভব বলে মনে করেন?
– জানি না, আসলে এত ভাবার সময় নেই। ভাবিওনি। পার্লামেন্ট থেকে মুম্বই ট্রেন, একের পর এক বোম বিস্ফোরণ করে ওরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিল, ”আমরা তোমাদের এরকমভাবেই মারব, তোমরা কী করবে?” আমি জাস্ট সেই প্রশ্নটার উত্তর দিলাম।
A Wednesday, সেখানে দেখানো হয় একজন সাধারণ ভারতীয় বৃদ্ধ জেল থেকে সন্ত্রাসবাদীদের বার করে বোম দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশ কমিশনারের চরিত্রে অভিনয় করা অনুপম খের তাকে প্রশ্ন করে,
– আপনি কে?
– আই অ্যাম জাস্ট আ কমন ম্যান।
– এটা করে কী লাভ হল? এভাবে কিছু করা সম্ভব বলে মনে করেন?
– জানি না, আসলে এত ভাবার সময় নেই। ভাবিওনি। পার্লামেন্ট থেকে মুম্বই ট্রেন, একের পর এক বোম বিস্ফোরণ করে ওরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিল, ”আমরা তোমাদের এরকমভাবেই মারব, তোমরা কী করবে?” আমি জাস্ট সেই প্রশ্নটার উত্তর দিলাম।
১০১৮ থেকে ২০১৮ হিন্দুদের বারে বারে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে আরব থেকে মুঘল হয়ে আজকের জিহাদিরা। উত্তর কেউ না কেউ তো দেবে….
পুনশ্চ:-
-ওখানে মন্দির হলে কার কী লাভ হবে?
কালো টাকা ফিরে আসবে? পেট্রোলের দাম কমবে? মানুষ ১৫ লাখ পাবে? ফ্রিতে চিকিৎসা পাবে?
কালো টাকা ফিরে আসবে? পেট্রোলের দাম কমবে? মানুষ ১৫ লাখ পাবে? ফ্রিতে চিকিৎসা পাবে?
– ওখানে মসজিদ থাকলে এই সুবিধাগুলি পাওয়া যাবে?
– আচ্ছা মসজিদ ভাঙলে কার কী ক্ষতি হয়? তেলের দাম বাড়ে? মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে!
হিন্দুরা তো বারে বারে ক্ষত ভুলে গেছে। অন্যরা ভুলতে পারে না কেন? তাহলে তো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দালালদের গলা তুলে চিৎকার করতে হয় না। আসুন হিন্দু-মুসলিম ভাইরা মিলে এই দাবি তুলি, যে যে জায়গাতে মসজিদ ভেঙে মন্দির বানানো হয়েছে সেখানে আবার মসজিদ গড়ি। আর যেখানে মন্দির ভেঙে মসজিদ বানানো হয়েছে সেখানে আবার মন্দির বানাই…
শেখর ভারতীয় !