পশ্চিমবঙ্গে পোলারাইজেশন বেশিরভাগ “শুভবুদ্ধিসম্পন্ন” মানুষের কাছেই একটা মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোপাল পাঁঠা যেমন একটা অশুভ ব্যাপার, তেমনই আর কি। ছেচল্লিশের নোয়াখালিতে যেমন কোনও গোপাল পাঁঠা ছিলেন না। সেটা এদের খুব আশ্বস্ত করে। পশ্চিমবঙ্গে শুভবুদ্ধি একেই বলে। উটপাখির শুভবুদ্ধি আর কি।
আপনি না জানলে কি হবে, খিলজি আসার সময় থেকেই পোলারাইজেশন রয়েছে। বাংলায় হিন্দু হোক কি বৌদ্ধ, তান্ত্রিক ও সহজিয়া সবাইকেই মিলিয়েছে। কিন্তু আরব থেকে আগত ধর্মটি বড় কঠিন ঠাঁই। মার্ক্স বলেছিলেন, ইসলাম সব দেশকেই এক দ্বিদেশীয়, দ্বিজাতীয় বিভেদে বিভক্ত করে, ইসলামে বিশ্বাসী, এবং অবিশ্বাসী, এবং অবিশ্বাসী হল হার্ব, শত্রু, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলে যদ্দিন না অবিশ্বাসী ধ্বংস হচ্ছে।
পোলারাইজেশন তো রয়েছে, ছিল বরাবরই। সেটা স্বীকার করবেন কি করবেন না, প্রশ্ন সেটাই। এবং এই পোলারাইজেশন নিছক হিন্দু মুসলমানের মেরুকরণ নয়। মুসলমানদের মধ্যে মুক্তচিন্তক বনাম জেহাদীর মেরুকরণও বটে। এ মেরুকরণ কমিউনিস্টদেরও ভেঙে দিচ্ছে দুইভাগে। ইসলামের আগ্রাসনের দালাল যারা, যারা লালঝাণ্ডার দোহাই দিয়ে বাংলা ও বাঙালির বিরুদ্ধে গ্রেটার ইসলামিক বাংলাদেশের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন, তাদের বিরুদ্ধে সেই বামপন্থীদেরও মেরুকরণ হচ্ছে, যারা হিন্দুফোবিক নন, যারা দেশজ সংস্কৃতি ও শেকড়ে আস্থা রাখেন। গেরুয়া রাজনীতির মধ্যেও মেরুকরণ হচ্ছে, অবাঙালিদের দালালি করেন যারা, তাদের বিরুদ্ধে বাঙালিত্ববাদীর মেরুকরণ ক্রমশঃ শক্তি সঞ্চয় করবে আগামী দিনে। তৃণমূলের ভেতরেও হচ্ছে, কাছাখোলা তোষণ সবাই পছন্দ করেছেন না। তৃণমূলের গর্গবিশ্বেন্দু ধ্রুপদী ভাষার বিরুদ্ধে বলে বেড়ান, বস্তুত সেটা ইসলামিক বাংলাদেশে ওঁদের মনিবদের নির্দেশেই করেন। কিন্তু তৃণমূলেরই দুয়েকজন বাংলাভাষার ধ্রুপদী মর্যাদার পক্ষে।
পোলারাইজেশন রয়েছে। উটপাখিদের নিশ্চিন্ত দিবানিদ্রার বাইরে সর্বত্র পোলারাইজেশন রয়েছে।