ইসলাম ধর্ম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান।

দেখুন, ধর্মানুভূতি সকল ধার্মিকের আছে আমি জানি। আর এটা কেমন অনুভূতি তা আমারও জানা আছে। আমার লেখা পড়ে কারো যদি কোন প্রকার অনুভূতিতে আঘাত লাগে তাহলে বলবো আবার নতুন করে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করুন। কারন সুশিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে এখানে আসলে আর অনুভতিতে আঘাত লাগবে না। আর সেটা না করতে পারলে সিলিং ফ্যান এর সাথে ঝুলে পড়তে বলবো না বলবো লেখাটা পড়ে বোঝার চেষ্টা করুন আর কি কি ভুল আছে তা আমাকে বলুন।

এই যুগে এসেও যদি কেউ এমন কথা বলে তাহলে কেমন লাগে বলেন “ইসলাম ধর্ম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান যা আর অন্য কোন ধর্ম দেইনি” সব চেয়ে বড় দুঃখজনক কথা হচ্ছে শিক্ষিত নারীরা যখন এই কথা বলে। আর পুরুষদের কথা কি বলবো। ডক্টরেট করা বা পিএইচডি করা একজন ধার্মিক নারীর সাথে যদি ইসলাম বিষয়ক কোন আলাপ হয় সে দুই চার মিনিট কথা বলার পরে বলে যে আপনার সাথে এই বিষয়ে কথা বলাই উচিত হয়নি। আপনি আপনার মতো থাকুন আর আমাকে আমার মতো থাকতে দিন। কথা হচ্ছে তাহলে আপনি এই জাতীয় মিথ্যাচার কেন করবেন। আর যদি না বুঝে বলে থাকেন সেটাই না হয় বলুন। ও আচ্ছা প্রেস্টিজ বলে কথা তাই না যদি বলি আপনি কি কোরান আর হাদিস বুঝে পড়েছেন নাকি না বুঝে তাহলে তো বলবেন অবশ্যয় বুঝে পড়েছি। তাহলে আমার কথা হচ্ছে আপনি কেন কোরান আর হাদীসের এই আয়াত গুলা দেখেন নাই বা জানেন না।

ইসলাম ধর্মের মূল গ্রন্থ পবিত্র আল কোরানের আয়াত ৪:৩৪ এবং ২:২২৮ এ বলা হচ্ছে “অবশ্যয় নারীর অবস্থান পুরুষের নিচে” আল কোরান (আয়াত নং ২:২৮২) “অবশ্যয় নারীর মর্যাদা পুরুষের অর্ধেক” আল কোরান (আয়াত নং ২:২২২) “রজ্বচক্র চলাকালীন তারা অপবিত্র” আরো অনেক যায়গায় নারীকে ছোট করা হয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। এমনকি নারীকে ধর্ষনের কথাও বলা হয়েছে। এখন আমি এই কথা বললে অনেক মডারেট মুসলিম নারী ও মুসলিম ভায়েরা বলবেন দেখেন আপনি সঠিকভাবে কোরান বুঝতে পারছেন না আপনার উচিত হবে এই এই আয়াতের আগের আয়াত আর পরের আয়াত কি বলছে তা ভালো করে আগে বোঝা ও সেই সাথে আমাদের নবীজী যেই সকল হাদীসের বানী দিয়েছিলেন সেগুলো পড়া। এখন কথা হচ্ছে হাদীসের কথা যদি বলি তাহলে কি হবে জানেন ? দেখেন তাহলে।

ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের সব থেকে বেশি গ্রহনযোগ্য এবং সর্বাধিক পাঠিত হাদিস গুলা থেকে মাত্র ৫ টি হাদিস দিচ্ছি মিলিয়ে দেখুন। আমি কথা দিচ্ছি কেউ চাইলে আমি এরকম শত শত হাদিস দেখাতে পারি কোন সমস্যা নাই, তবে আমাকে কেউ হুমকি দিতে পারবেন না। (সহী বুখারী শরিফ – ৫:৫৬:৫২৪ “নারী পুরুষের অধিকৃত সম্পত্তি”) তারপর দেখুন “তারা নিকৃষ্ট”(সহী বুখারী শরীফ – ৯:৮৮:২১৯) তারপর দেখুন “বুদ্ধীহীন” (সহী বুখারী শরিফ – ২:২৪:৫৪১) তারপর দেখুন “তারা কুকুরের সমতুল্য” (সহী বুখারী শরিফ – ১:৯:৪৮৬ ও ১:৯:৪৯০ ও ১:৯:৪৯৩ ও সহী মুসলিম – ৪:১০৩২ ও ৪:১০৩৪ ও ৪:১০৩৮-৩৯ ও আবু দাউদ ২:৭০৪) বেশি না আর একটা দেখবো লজ্জার কিছু নাই “পুরুষ কর্তৃক নারীকে ধর্ষনের অনুমোদন” (আল কোরান – ৭০:২৯-৩০ এবং আবু দাউদ – ১১:২১৫৩ এবং ৩১:৪০০৬ এবং সহী বুখারী শরিফ – ৫:৫৯:৪৫৯ এবং ৮:৭৭:৬০০ এবং ৮:৩৪৩২ এবং ৮:৩৩৭১) এই সমস্ত হাদীসে এই কথা গুলা স্পষ্ট করে বলা আছে। আমার কাছে খুবই দুঃখ লাগে যখন এই সব না দেখে নারীরাই যুক্তিতর্কে লিপ্ত হয় আর বলে “ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান” আপনার চোখে কাঠের চশমা লাগানো আছে আপনি দেখবেন কিভাবে।

এবার কিছু কথা শুনুন, আমাদের দেশের বেশি না মাত্র ২০০ বছর আগের কিছু ইতিহাস পড়ে দেখুন সেখানে পাবেন প্রতিটি সমাজে খুবই অল্প কিছু মানুষ শিক্ষিত ছিলো যারা মানবতার কথা বুঝতো এবং মনে করতো প্রচলিত ধর্ম গুলা সবই কুসংস্কার। কিন্তু বাদবাকি সবাই ছিলো গোড়া ধার্মিক টাইপের তারা ধর্মকর্ম মেনে চলতো যারা ছিলো আমাদের পুর্বপুরূষ। তাদের ভেতরে যদি এমন আচরন লক্ষ করা যায় তাহলে আমাদের অবাক হবার কিছুই নাই কারন এটা প্রত্যশিত ব্যাপার ছিলো। কিন্তু এই যুগে ২০১৭ সালে এসে যদি বলে ইসলাম ধর্মই দিয়েছে নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাহলে তাকে কি বলা উচিত আমি জানি না। অবশ্য সোস্যাল মিডিয়া গুলাতে এদের একটা নাম আছে। এবার একটু ভেবে দেখুন সেই ১৪০০ বছর আগের মানুষের কথা তার কি মনে করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিলো তা আমি জানি কিন্তু এখন বলবো না সেটা অন্য গল্প। আর তখন মূলত শিক্ষিত ও জানাবোঝা মানুষের সংখ্যা কত ছিলো। ইসলামের প্রচারক নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত যেই সময়টা ছিলো আমি সেই সময়ের কথা বলছি পারলে একটু ইসলামের ইতিহাস ঘেটে দেখবেন নারীকে আপনার ইসলাম কতটা সম্মান দিয়েছে।

শুধু তাই না আরো কিছু গুরুত্বপুর্ণ ইনফরমেশন দিচ্ছি। ইসলাম ধর্মের প্রচারক শ্রেষ্ঠ নবী ও শ্রেষ্ঠ মানব ও শ্রেষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী নবী মোহাম্মদ (সা:) এর উপরে পবিত্র গ্রন্থ কোরান নাজিল হয়েছিলো তার বয়স যখন ৪০ বছর মানে ৬১০ খৃষ্টাব্দে। কিন্তু তা তখনই কাগজ কলমে লেখা হয় নাই। তা মুখস্ত করে রেখেছিলো হাফেজ গন (যারা কোরান মুখস্ত করে তারা হাফেজ)। এই হাফেজদের একত্রিত করে তারও অনেক পরে মানে প্রায় ২০০ বছর পরে হজরত ওসমান (রাঃ) এই আল কোরান লিপিবদ্ধ করান। এখন কথা হচ্ছে, আজ থেকে মাত্র ৪৬ বছর আগের কথা এই আধুনিক যুগে এসে মিলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যেমন ধরুন, স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের এই সুন্দর সবুজ শ্যামল দেশটিকে কিছু মানুষ ইসলামিক আইন গঠন করার জন্য পাকিস্তানী আলবদর বাহিনীকে সাহায্য করে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ ও ২ লক্ষের অধিক নারীর ইজ্জত লুটেছিলো। তাদেরকেই আজকের বাংলাদেশের মানুষ সঠিক ভাবে চিনতে পারছে না। তবে এটা নিশ্চিত থাকেন তারা ছিলো সকলেই মুসলাম। তাহলে কিভাবে সেই যুগে ২০০ বছর পরে একজন মানুষের চরিত্র — আমি বুঝি না এতোকিছু, আপনারা ভেবে নিন।

আসলে প্রথমে যেই শিক্ষিত ডক্টরেট আর পিএইচডি করা যেই নারী দুজনের কথা বলছিলাম না তারা আসলে শিক্ষিত হয়েছে কিন্তু বাপ দাদার উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া তাদের ধর্মটিকে ক্রিটিক্যালি এনালাইসিস করার প্রয়োজন মনে করেনি তাই এই অবস্থা। যদি এরকম আচরন আমাদের দেশের নিন্ম শিক্ষিত বা একেবারেই অশিক্ষিত কোন মানুষ বলতো তাহলে আমি এসব কিছুই লেখতাম না বিলিভ মি। কারন আমি মনে করি সেই শ্রেনীর জন্য এসব জানা আসলেই খুবই কঠিন ব্যাপার আমাদের এই ধর্মান্ধ সমাজে। আর এই যে শিক্ষিত সমাজে এমন মনোভাব হবার কারন কি জানেন ?

অশিক্ষিত এসব মানুষের মতো সমাজের উচ্চশিক্ষিত নারীদের এই মা্নুষিকতা গুলা বা ইসলামিক জ্ঞান এসেছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মসজিদ, মাদ্রাসা, তাবলিগ, ওয়াজ মাহফিলে মৌলভি সাহেবের বয়ান, কিছু ইসলামী টিভি চ্যানেল, কিছু বিশেষ বিশেষ ইসলামি বই, খবরের কাগজের আর্টিকেল, কিছু আলাপচারিতা ও বিখ্যাত ডাঃ জাকির নায়েকের মিথ্যাচার থেকে। এইসব নারীরা কোরান তেলাওয়াত করেন অনেক ভক্তি দিয়ে কিন্তু সেটা আরবিতে এবং একেবারেই না বুঝে। তাদের ভেতরে ৫০% পাওয়া যাবে যারা তাদের পুর্ণ জীবনে হয়তো একটিবারের জন্যও ব্যাখ্যাসহ সম্পুর্ন কোরানের তর্জমা পড়েনি। আর পড়ে থাকলেও এখানে অন্তর্নিহিত বিষয়গুলি একটিবারের জন্যও বোঝার চেষ্টা করেননি বা একটু কঠিন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখেননি। সমস্যা হচ্ছে তাদের মস্তিষ্ক এমনভাবে জাংক হয়ে আছে হিজাব পরার কারনে তারা স্বীকারও করতে চাননা তারা কোরান বুঝে পড়েননি। হাজার হলেও প্রেস্টিজ বলে একটা কথা আছে সাথে অপমানিত বোধও। আমি দুঃখিত এভাবে বলার জন্য। বলার কারন হচ্ছে যেখানে বর্তমান সমাজে নারীরা সমতার লক্ষ্যে এই সব কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে সেখানে তারাই কেন আবার তাদের আচল ধরে টান দিচ্ছে বুঝিনা। অনেক সিনিয়র নারীবাদী আবার বলছেন আস্তিক হলেও নারীবাদী হওয়া যায় আর যারা এসব বোঝে না তার শিশু আর তাই আমিও এসব বুঝিনা। অনেক বলে ফেলেছি আজ আর নই। আবার আলোচনা হবে সে পর্যন্ত শুভকামনা।

———- মৃত কালপুরুষ
১৯/১০/২০১৭