আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে কেন ভারতে ঢুকতে দেওয়া উচিত না।

আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে কেন ভারতে ঢুকতে দেওয়া উচিত না
————————————————————————–

আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের এপার বাংলায় ওয়াজ করতে আসার খবর পাওয়া মাত্র, আমরা দুই বাংলার বাঙালিদের অনেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছি এই সোশ্যাল মিডিয়াতে । পাঠক, কিন্তু কেন আমরা প্রতিবাদে সরব হলাম ? আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ তো জায়গায় জায়গায় ওয়াজ-মেহফিলের মাধ্যমে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা করে, ইসলামের মাহাত্য প্রচার করে জনগণের মাঝে । এটা কি তার অপরাধ ? তবে কি আমরা প্রতিবাদীরা,তার জনপ্রিয়তাতে নিছক ঈর্ষান্তিত হয়েই এই প্রতিবাদে নেমেছি ? পাঠক,আপনারা মানুন আর নাইবা মানুন, আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ ধর্মান্ধ মুসলমানদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় । এই জনপ্রিয়তাতে অবশ্য আমাদের কিছু আসে যায়না । পাঠক, এই আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ প্রচার করে অবিকৃত ইসলাম আর সেখানেই আমাদের আশঙ্কা, আতঙ্ক, রাগ এবং বিরোধ ।  তাই থেকেই আমাদের এই প্রতিবাদ । এবারে আপনারা প্রশ্ন তুলবেন অবিকৃত ইসলামের মাহাত্য প্রচারে আপত্তি কোথায় ? আপত্তি আছে পাঠক । ধর্মের কারণে আমরা বাঙালিরা আজ বিভক্ত । হেঁদু পাঁঠারা ধোয়া তুলসীপাতা কখনোই ছিলোনা, আজও নেই, কিন্তু কেবল আমাদের বাঙালিদের বিভক্তিই নয়, সমগ্র উপমহাদেশের রক্তক্ষয়ী জিঘাংসার মাধ্যমে টুকরো হওয়ার পেছনে মূল চক্রী এই অবিকৃত ইসলাম । ভাবছেন কেন এই কথা লিখলাম ? ঠিক আছে, তাহলে শুনুন কেন এই ধারণা পোষণ করছি :

ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী পৃথিবীর দুই ভাগ । দার -উল-ইসলাম  (abode of Peace-মুসলিম শাসিত) ও দার-উল-হারব (abode of war অ-মুসলমান শাসিত) যেখানে যুদ্ধ করে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই একে বলা হয়েছে (abode of war) । সাচ্চা মুসলমান মাত্রেরই কর্তব্য হলো ইসলামের শাসনকে সম্প্রসারিত করা, যতক্ষণ পর্যন্ত না সমগ্র পৃথিবী Dar-ul-Islam-এ রূপান্তরিত হয় ।
এই যুদ্ধ হলো ইসলামের কুখ্যাত জিহাদ । কি বলে অবিকৃত ইসলামের পথপ্রদর্শক কোরান এই ‘জিহাদ’ সম্পর্কে ? পাঠক, চলুন কিছু উল্লেখ দেখি :

➤ (সুরা ৯ – আয়াত-৫) : ‘অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে অংশীবাদীদের যেখানে পাবে বধ করবে, তাদের বন্দী করবে, অবরােধ করবে এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে—তাদের জন্য ওৎ পেতে থাকবে। কিন্তু যদি তারা তওবা (অনুতাপ) করে, যথাযথ নামাজ পড়ে ও জাকাত (দান) দেয়, তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
➤ (সুরা ২ – আয়াত-১৯৩) : ‘তােমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাক, যতক্ষণ না (তাদের) ধর্মদ্রোহিতা দূর হয় এবং আল্লাহর দীন ধর্ম প্রতিষ্ঠিত না হয় … ।’
➤ (সুরা ২ – আয়াত-২৩) : ‘হে বিশ্বাসী (মুসলমান)! তােমাদের পিতা ও ভাই যদি বিশ্বাস অপেক্ষা অবিশ্বাসকে শ্ৰেয় জ্ঞান করে, তবে ওদের অভিভাবক রূপে গ্রহণ করাে না। তােমাদের মধ্যে যারা যারা ওদের অভিভাবক করে তারাই অপরাধী।’
➤ (সুরা ৯ – আয়াত-৩৮, ৩৯) : ‘হে বিশ্বাসী! তােমাদের কি হল যে যখন আল্লাহর পথে তােমাদের অভিযানে বের হতে বলা হয়, তখন তােমরা ঘরমনা হয়ে গড়িমসি কর?… যদি তােমরা অভিযানে বের না হও তবে তিনি তােমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি দেবেন।’

বেশ জ্বালাময়ী , তাইনা পাঠক ? এই কুলাঙ্গার আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ তার ওয়াজে অবিকৃত ইসলামের উপরোক্ত জ্বালাময়ী, বিদ্বেষী আদর্শগুলোকে ব্যাখ্যা করে জনমানসে ছড়িয়ে দেয় । না, না, এখানেই শেষ নয় । নরকের কীট আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এই অবিকৃত ইসলামের আদর্শ অক্ষরে অক্ষরে মানার জন্য সাচ্চা মুসলমানের সামনে ঝুলিয়ে দেয় অবিকৃত ইসলামের প্রলোভনের গাজর আর অমুসলিমদের দেয় অবিকৃত ইসলামের হুমকি ।

➧ সাচ্চা মুসলমানের জিহাদের প্রাইজ :
➤ ‘বস্তুত যে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে সে নিহত হােক অথবা বিজয়ী হােক তাকে আমি শীঘ্রই মহাপুরষ্কার দান করব।'(৪-৭৪)
➤ ‘যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনই তাদের কাজ বিনষ্ট হতে দেন না। …তিনি তাদের প্রবেশ করাবেন জান্নাতে (বেহেস্ত-স্বর্গ), যার কথা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।(৪৭-৪,৬) সেখানে আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা যত খুশী ফলমূল ও পানীয়ের জন্য আদেশ দেবে। তাদের পরিবেশন করা হবে বিশুদ্ধ সুরা, শুভ্র উজ্জ্বল পাত্রে। তাদের সঙ্গে থাকবে সুরক্ষিত ডিম্বের কুসুমের ন্যয় উজ্জ্বল গৌরবর্ণ লজ্জা নম্র-আয়তলােচন তন্বীগণ। (৩৮-৫১, ৫২;৩৭-৪১ থেকে ৪৯)।’
➤ ‘যুদ্ধে তোমরা যা লাভ করেছ, তা বৈধ ও উত্তম বলে ভােগ কর ও আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (৮-৬৯)

➧ অমুসলিমদের অবিকৃত ইসলামের হুমকি :
➤ ফেরেশতাদের বলা হবে “একত্র কর সীমা লঙ্ঘনকারী ও ওদের সহচরদের এবং তাদের যাদের ওরা উপাসনা করত আল্লাহর পরিবর্তে এবং ওদের জাহান্নামের পথে পরিচালিত কর।”(৩৭-২২, ২৩)
➤ ওদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে। ….যেদিন অগ্নিতে ওদের মুখমণ্ডল উল্টে-পাল্টে দগ্ধ করা হবে সেদিন ওরা বলবে—“হায়! আমরা যদি আল্লাহ ও রসুলকে মান্য করতাম।” (৩৩-৬১, ৬৬)
➤ আল্লাহ ও তার রসুলে যারা অবিশ্বাস করে, আমি তাদের হৃদয়ে ভীতির সঞ্চার করব। তাদের স্কন্ধে ও সর্বাঙ্গে আঘাত কর। তাদের জন্য রয়েছে নরক যন্ত্রণা।
(৮-১২, ১৩, ১৪)

পাঠক এই কুলাঙ্গার,নর্দমার কীট আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফদের মত অমানুষরা ওপার বাংলায় সেই কবে থেকেই এই অবিকৃত ইসলামের মাহাত্য ওয়াজ-মেহফিলের মাধ্যমে জনমানসে ছড়িয়ে চলেছে । ফল ? ফল, আজ ওপার বাংলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সংখ্যায় কমতে কমতে ৭% এসে দাঁড়িয়েছে । এবারে নজর পরেছে এপার বাংলার দিকে । এপার বাংলার কিছু আমলা মাতব্বর যদি মনে করে থাকে তারা এটাকে ‘বাংলাস্তান’ বানাবে এই বাঁদরদের এখানে আপ্যায়ন করে ওয়াজ-মেহফিলে অবিকৃত ইসলামের মাহাত্য প্রচার করে, তবে সে গুঁড়ে বালি । এই নরকের কীট আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে তাই ভারতে ঢুকতে দেওয়ার বিরোধিতা ।

এপার বাংলাকে ‘বাংলাস্তান’ বানানোর এই অপচেষ্টাকে শেষ পর্যন্ত রোখার চেষ্টা করবো…………………