মোঙ্গলরা হিন্দুদের মতো কাপুরুষ ছিল না।

মোঙ্গলরা হিন্দুদের মতো কাপুরুষ ছিল না। তারা কাপুরুষতা ঢাকবার জন্য সহিষ্ণুতা, মানবতা, ধর্মীয় উদারতা প্রভৃতি মহাবানী সমূহ আওড়াতো না। তারা উল্টা মুসলমানদের আক্রমণ করতো এবং এবং মুসলমানদের চেয়েও নিষ্ঠুরতার সাথে মুসলমানদের কতল করতো। মোঙ্গল আক্রমণের সামনে মুসলিম শহরগুলো একের পর ধ্বংস হয়ে পড়ছিল। মসূল ছিল ব্যতিক্রম। একাদিক্রমে ছয়টি মাস মোঙ্গল বাহিনীকে ঠেকিয়ে রেখেছিল। তখন শহরের শাসক ছিলেন আতাবেক বংশের শেষ সুলতান মালিক সালিহ। সুলতান মঙ্গোলীয় অবরোধের মুখে পড়ে ভেবে দেখলেন, তিনি একা একা শহর রক্ষা করতে পারবেন না। গোপনে মিসরের কাছে সাহায্য চাইলেন। তখন মিসরে চলছিল মামলুক শাসন। মামলুকরা তখন শাম ও মিসরের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। তারা খুব বেশি সৈন্য দিতে পারলো না।
অল্পকিছু সৈন্য দিলো। এই গুটিকয়েক সৈন্য নিয়েই সুলতানের দূত ফিরতি পথ ধরলেন। তারা যখন হালাবে পৌঁছল, মোঙ্গল নেতা চান্দাগুন সংবাদ পেলো, মামলুক সাহায্য নিয়ে সুলতানের লোক আসছে। সে ভয় পেয়ে গেলো। একদিকে সুলতান আরেক দিকে মামলুক সাহায্য।
চান্দাগুন অবরোধ তুলে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করলো। তখনই ঘটলো এক ঘটনা। যুগে যুগে যা চলে আসছে। যাইন হাফেযী নামে এক এক লোক। সে ছিল সিরিয়ান চিকিৎসক। এই মানবতাবাদী জন্মসুত্রে মুসলমান মানুষটি ছিল ইসলাম ত্যাগী এবং মুহাম্মদের কুৎসিত কার্যকালাপ বিরোধী নাস্তিক। সে সব ফাঁস করে দিল তাতারদের কাছে। সে গোপনে মোঙ্গল নেতার কাছে গিয়ে বললো:
-মামলুকরা মাত্র ৬০০ সেনা পাঠিয়েছে। তারা আপনাদের কিছুই করতে পারবে না।

মোঙ্গলরা এবার দ্বিগুণ উৎসাহে মিনজানিক(পাথর ছোঁড়ার যন্ত্র) থেকে পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করলো। শহর ও শহরবাসীকে রক্ষা করার জন্যে, সুলতান নিজের পুত্রসহ বেরিয়ে এলেন। চান্দাগুন সাথে সাথে সুলতানপুত্রকে ধরে দ্বিখন্ডিত করে ফেললো। দুই টুকরা দুই জায়গায় ঝুলিয়ে দিলো। সুলতান নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হলেন। শুধু বললেন:
-শহরে যেন জুলুম-নির্যাতন না করা হয়।
কিন্তু বর্তমানের শী‘আ, ন্যাটো, কুর্দি, সেকালের ক্রুশেডার ও মোঙ্গল সবাই এক ছাঁচে তৈরী। শহরবাসীদের মধ্যে যারা কবর বা কোনও গোপনস্থানে আত্মগোপন করেছিল, তারাই শুধু রেহাই পেয়েছিল। মোঙ্গলরা এই শহরে প্রবেশ করেছিল:
২৬ শা‘বান। ৬৬০ হিজরীতে।
১৬ জুলাই। ১২৬২ খ্রিস্টাব্দে।

একই ঘটনা এবারও, গতকাল মসুল থেকে একটা কবীলা বের হয়েছিল। বাপের বেটা শী‘আরা পুরুষদের সবাইকে তৎক্ষণাত মেরে ফেলেছে। নারী ও শিশুদেরকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গেছে। কারণ ইসলামি বর্বরতাকে মোকাবেলা করা যায় এক মাত্র তার চেয়েও অধিক বর্বরতা দিয়ে। হিন্দুরা উল্টো পথে হাঁটছে। তারা ভাবছে উদারতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতার বানী মুসলমানদের কানে পৌঁছাবে। কিন্তু নৈব নৈব চ। মুসলমানরা কখনোই উদারতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বোঝে না। তারা সেউ সুযোগে দ্বিগুণ উৎসাহে দারুল ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে লেগে পড়বে। এটাই মুহাম্মদ সালারপুতের শিক্ষা।