কয়েকশো ধর্ষনের পর লাখ সাতেক পন্ডিতকে কাশ্মীর ছেড়ে রিফিউজি হতে হল।

আজ থেকে মাত্র ৪৭ বছর আগে । সদ্য বাংলাদেশ যুদ্ধ শেষ হয়েছে । তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগজীবন রামের কাছে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট চান । জগজীবন রাম যে রিপোর্টটি দিয়েছিলেন তার মধ্যে এই অংশটুকুও ছিল Hindus of the valley have been leading a life of subjugation , denial and deprivation , of fear and uncertainty, of unequal opportunities of compromise and religious constraints of persecution of all forms at all levels.’ ছোট করে বললে বোঝায় যে উপত্যকার হিন্দুরা ধর্মীয় থেকে শুরু করে সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধে থেকে বঞ্চিত । তাঁরা একটা ভয়ের পরিবেশের মধ্যে বাস করছে ।

কাশ্মীর উপত্যকার হিন্দুদের অবস্থা দীর্ঘকাল ধরেই খারাপ এমনকি স্বাধীনতার পরেও এর বিন্দুমাত্র উন্নতি হয় নি । খাতায় কলমে ধর্মনিরপেক্ষ থাকলেও কাশ্মীরী প্রশাসন চিরকাল মুসলিমদের স্বার্থরক্ষা করে এসেছে । ১৯৬৪ পর থেকে একের পর এক এমন আইন পাশ করানো হয়েছে ( Abolition Of Jagirdari Act , Distressed Debtors Relief Act , Agrarian Reforms Act , 1976 ) যাতে শুধুমাত্র মুসলিমদের স্বার্থরক্ষা হয় । চাকরি এবং ব্যবসা দুই ক্ষেত্রেই প্রবল বৈশম্যের স্বীকার হতে হয়েছে হিন্দুদের ।

এরপর এল ১৯৯০ সালের কুখ্যাত জানুয়ারী মাস । ৪ঠা জানুয়ারী তারিখে ‘ আফতাব’ আর ‘ আলসাফা’ দুই স্থানীয় উর্দু সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে সমস্ত হিন্দুদের কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হল যার অন্যথা মানে মৃত্যু । হিজবুল মুজাহিদিন , JKLF মত সংগঠনগুলো কাশ্মীরি মুসলিমদের কার্ফু অমান্য করে রাস্তায় বেরোনোর ডাক দিল । ঘোষনা হল ‘ জিহাদ’ -এর

১৯শে জানুয়ারী রাত থেকে প্রতিটি মসজিদ থেকে প্রশ্নোত্তর সহযোগে টেপরেকোর্ডারে তিনদিন ধরে ক্রমাগত ঘোষনা হতে থাকলো

১) হাম কেয়া চাহেতে হ্যায়
আজাদি
২) কাশ্মীর মে রহেনা হ্যায় তো কেয়া বলনা চাহিয়ে
আল্লাহো আকবর বোলনা হ্যায় ।
৩) কৌন সে কানুন রাজ করেগা
কোরান, হাদিশ , শরিয়ত রাজ করেগা
৪) হাম কেয়া চাহেতে হ্যায়
নিজাম-ই-মুস্তাফা
৫) ফির হাম কেয়া চাহেতে হ্যায়
পাকিস্তান
৬) হাম পন্ডিতসে কেয়া চাহতে হ্যায়
স্রিফ পন্ডিত লেড়কিয়া ।
The Statesman দ্ব্যর্থহীন ভাষায় লিখছে ‘ What do we want of the Pandits ?
We want Pandit girls minus their menfolk ।

তো এই সময়ই সরলা ভট্টকে ৫ দিন ধরে বন্ধক রেখে নির্মম ভাবে ধর্ষন করা হয়েছিল। শুধু ধর্ষন নয়, সরলা ভট্টর স্তন্য কেটে পুরো শরীরের তিন টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয় । এক সরলা ভট্টই নয়, শীলা টিক্কু, প্রানা গঞ্জ, তেজা ডার, গিরিজা ডার, রুপাবতী ভট্ট এরকম কয়েকশো পন্ডিত নারীকে অত্যাচারের স্বীকার হতে হয়েছিল । হাজার খানেক হত্যা আর বেশ কয়েকশো ধর্ষনের পর লাখ সাতেক পন্ডিতকে কাশ্মীর ছেড়ে রিফিউজি হতে হল।