ইসলামে গান বাজনা হারাম বললেই যারা ‘এটা কোরআনের কোথায় লেখা আছে’ বলে পিছলামি করতে আসে- এরা এখন সব কোথায়?

বিপিএল ক্রিকেটের শনিবার ম্যাচে সব ধরণের গান বাজনার আয়োজন নিষিদ্ধ করেছে টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ কারণ এদিন ঈদে মিলাদুনবী। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে ওভার বিরতির সময় যে সাউন্ড সিস্টেম বাজে সেটাই ঈদের মিলাদুনবীতে বন্ধ রাখা হবে। এদিকে ইসলামে গান বাজনা হারাম বললেই যারা ‘এটা কোরআনের কোথায় লেখা আছে’ বলে পিছলামি করতে আসে- এরা এখন সব কোথায়? হায়দার আলীর নামের সুন্নতী দাড়িঅলা এক গায়ক যে দাবী করেন তিনি ইসলামে গান হারাম কোথাও খুঁজে পাননি- এরকম ঘটনা পর ইনারা সরব হন না কেন? তাদের প্রতিবাদী গানে কখনো কেন ‘ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য রক্ষার্থে’ গান সংস্কৃতি অনুষ্ঠান বর্জনের ঘটনাগুলো পিছলে যায় কেন? গোড়া মুসলমান দেশ বলে বাংলাদেশের বিপিএলে চিয়ার্স লেডি রাখা হয় না। প্রথমবার আইপিএল খেলতে গিয়ে ভারতে আফ্রিদি মাঠে চিয়ার্স লেডি রাখার বিরোধীতা করে বলেছিলো, তাদের কারণে তিনি মাঠে খেলায় মনোযোগ ধরে রাখতে কষ্ট করেন! ভবিষ্যতে মুশফিক-মাহমুদুল্লারা দাড়ি রাখা শুরু করবে। তাদের মুখ থেকেও আমরা এরকম কথা শোনার তৌফিক লাভ করবো। আগাম শুকরিয়া এদেশের ক্রিকেটকে। গোড়া মুসলিম ক্রিকেট হতে চলেছে ক্রিকেট…।

এক মসজিদের ইমামকে ধোলাই দিয়েছে এক যুবক। যুবক সদ্য বিয়ে করেছে। তার বিয়েতে বাড়িতে গানের আসর বসেছিলো। সেই ঘটনায় শুক্রবার জুম্মার বায়ানে বিয়েশাদীতে গান বাজানাকে জাহেলিয়া যুগের মত অসভ্যতা বলে পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করছিলো ঐ ইমাম। কটাক্ষ হজম করতে না পেরে ইমামকে রাস্তায় একলা পেয়ে সেই যুবক চর-চাপড় যা পেরেছে মেরেছে। তাতেই পাবলিক ক্ষেপে গিয়েছে। বাংলাদেশের গোড়া মুসলমান সংবাদপত্র আর সাংবাদিকরা ইমামের পক্ষে সুর ধরে নিউজ করেছে। কাগজ লিখেছে ইমাম সাহেব ‘সৎ কাজ করতে এবং অসৎ কাজ না করতে’ উপদেশ দিতেই যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ইমাম ‘অশ্লিল গান বাজানা’ থেকে এলাকাবাসীকে সতর্ক হতে বলেন। দেশের জাতীয় দৈনিকগুলো যেখানে ইমামের বয়ানকে সমর্থন করে নিউজ করে, বিপিএলের গানবাজনার এলার্জিতে যেখানে মডারেট মুসলমান গায়কদের কোন প্রতিবাদ দেখি না তখন আমাকে স্বীকার করতেই হচ্ছে পিটুনি দেয়া যুবকই এক্ষেত্রে একটা মধ্যযুগীয় ইতরামির প্রতিবাদ করেছে। গ্রাম গঞ্জে মসজিদগুলো এখন বাউল গান, নাটক, পালাগান, লালন উৎসবসহ সব রকমের গ্রামীণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের টুটি চেপে ধরেছে। ইসলাম কতখানি অসুর ধর্ম সেটা গান বাজনায় তাদের ‘ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য নষ্ট’ হও দেখে বুঝতে কষ্ট হয় না। গ্রামের ২০ বছরের যুবকদের মধ্যে দাড়ি রাখার হিড়িক পড়ে গেছে। সবই মসজিদের মুরব্বীদের তাগাদা। এরা আগে আবদুল আলিমের গানের অনুরাগী হলেও এখন ওয়াজের ভিডিও মোবাইলে রাখে। গ্রাম দিয়েই শহর ঘেরাও করা হবে যে…।