ব্রিটেনের বর্ণবাদই আমাকে জঙ্গিবাদে প্ররোচিত করেছে: আইএস ফেরত ব্রিটিশ বাংলাদেশি জয়া
………………………………………………………..
বাংলাদেশের মুসলমানদের বর্ণবাদ-সাম্প্রদায়িকতায় কতজন হিন্দুকে জঙ্গি বানিয়েছে? ব্রিটেনে কি অভিবাসী মুসলমানদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়? যীশু অবমাননার অভিযোগ তুলে জঙ্গি মিছিল নিয়ে মুসলিম পাড়ায় আক্রমণ চালায়? গির্জা থেকে মাইকে হামলা চালানোর জঙ্গি আহ্বান জানানো হয়? চাকরি শিক্ষায় অভিবাসী মুসলমান বলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে রাখা হয়? বাংলাদেশে শরৎকালীন মূর্তি ভাঙ্গা উৎসবের মত কি সেখানে মুসলিম ধর্মীয় উৎসবগুলোতে এরকম কিছু ঘটে? এরকম কিছুই ঘটে না। কিন্তু বাংলাদেশ পাকিস্তানে হিন্দু এবং পাহাড়ীদের উপর এই নির্যাতনগুলো ঘটানো হয়। তাবু বাংলাদেশী হিন্দুরা কেন ‘হর হর মহাদেব’ বলে কোন বাংলাদেশী মুসলমানের উপর হামলে পড়ল না? পাহাড়ীরা শান্তির বাহিনী নামে জাতীয়তাবাদী মুক্তি সংগ্রাম গঠন করেছিলো বাঙালী নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে। কেন তারা আইএস তালেবানের মত ধর্মীয় ভাবধারার জঙ্গি সংগঠন তৈরি করেনি? কারণটা হচ্ছে তারা অমুসলিম। তাদের ধর্মে জিহাদ নেই। জিহাদ মুসলমানদের সন্ত্রাসী বানায়। ইউরোপ আমেরিকাতে সুখ স্বাচ্ছন্দ উন্নত জীবন পাবার পরও পরকালের ভয়ে জিহাদে নাম লেখায়। বাংলাদেশী জয়া চৌধুরী হচ্ছে সেরকমই একজন মুসলমান নারী যে ব্রিটেনে উন্নত জীবন পেয়েও সিরিয়াতে কাফেরদের গলা কাটতে ট্রেনিং নেয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলো। বাস্তবিকই সে স্বীকার করেছে, তার দায়িত্ব ছিলো গুপ্তহত্যারে ট্রেনিং দেয়া।
জয়া চৌধুরীর স্বামী জর্জলাস একজন সাদা চামরার ধর্মান্তরিত আমেরিকান যে একজন জিহাদী ছিলো। জয়া চৌধুরী তাকে বিয়ে করেন এবং পরবর্তীতে দুই সন্তানসহ সিরিয়াতে গমন করেন আইএসের হয়ে কাজ করতে। কিন্তু সিরিয়াতে গিয়ে সন্তান সম্ভাবা হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ব্রিটেনে ফিরে আসেন এবং নিজের জিহাদী হবার পিছণে ব্রিটেনের বর্ণবাদকে দায়ী করেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই জয়া চৌধুরী কি জিহাদ সম্পর্কে তার মন পরিবর্তন করেছে? ব্রিটিশ সাংবাদিককে জয়া কথা প্রসঙ্গে বলেন, শিয়ারা প্রকৃত মুসলমান না। একই সঙ্গে সে শোকাহত প্রচুর আইএস সদস্যকে বোমা মেরে শত্রুরা হত্যা করছে কারণ তারা একজন খলিফার অধিনে থাকতে চেয়েছিলো। এভাবেই জয়ার জিহাদ প্রেম গোপনে হলেও প্রকাশিত হয়ে পড়েছে।
সারা পৃথিবীতেই মানুষ নিপীড়িত হয়। বর্ণবাদ, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতায় হেনস্থা হয়। সংখ্যালঘু হওয়া মানেই সংখ্যাগুরুর টিটকারি নাজেহাল। কিন্তু মুসলিম হলেই জিহাদ করতে ছুটে কারণ সেটি তাদের ধর্ম। এবং এই জিহাদী হতে মুসলমানের সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু হবার প্রয়োজন নেই। মুসলমান যখন দশ-বারো জনের সংখ্যালঘু তখন ‘কাফেরদের’ অফিসের স্টোর রুমে, পিছনের ঘরে নামাজ পড়ার আবদার করে। সংখ্যাটা আরেকটু বেশি হলেই কোন পুরাতন গির্জা বা পরিত্যাক্ত বাড়ি ভাড়া নিয়ে মসজিদ বানায়। তারপর ফ্রান্সের মত সংখ্যাটা দশ লক্ষ হলেই রাস্তা আটকে নামাজ পড়া শুরু করে। ঘরের মেয়েদের দিয়ে স্কুলে বোরখা, হিজাব, নেকাব পরে নিজেদের মুসলমানিত্ব দেখানো জোর চেষ্টা চালায়। এক সময় দাবী উঠায়- শরীয়া চাই! শরীয়া চাই!!
প্যারিসের মেয়র রেমি মুজো শতাধিক জনসাধারণকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানিয়েছে রাস্তা আটকে মুসলমানদের নামাজ পড়ার ঘটনায়। এখন এই প্রতিবাদ কতজন মুসলমানকে জঙ্গি বানাবে? ফ্রান্সে একের পর এক ইসলামী সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটার পর সাধারণ মুসলমানরা এইসব জঙ্গি হামলার সঙ্গে ইসলাম ও নিজেদের কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবী করেছিলো। মসজিদের ইমামরা তখন শান্তির প্লেকার্ড ঝুলিয়ে পথে নেমেছিলো। এখন এরাই রাস্তা আটকে বিশৃঙ্খলা শুরু করেছে নামাজ পড়ার গোয়ার্তুমি দেখিয়ে। এমন না তাদের নামাজের কোন জায়গা নেই। সিটি কর্পোরেশন থেকে ইসলামিক সেন্টার করে দেয়া হয়েছে যেখানে নামাজ পড়ার বিশাল জায়গা রাখা হয়েছে। কিন্তু ফ্রান্সের মত সেক্যুলার দেশে কোন আবদ্ধ জায়গায় নামাজ না পড়ে রাস্তায় পড়লে ধর্ম আর রাষ্ট্রকে টেনে এনে জট পাকানো সহজ হয়। তাই মুসলমান দুই রকমের- জয়া চৌধুরীর মত জিহাদ করতে সিরিয়া গমনকারী আর রাস্তা আটকে নামাজ পড়ার ক্রন্দল সৃষ্টিকারী। আগামীদিনের জয়া চৌধুরীরা দাবী করবে প্যারিসের মেয়র রেমি মুজোর ‘বর্ণবাদী’ আচরণই তাকে জঙ্গি হতে বাধ্য করেছিলো!…