তাহলে আসুন হিন্দু নারীদের সিঁদুর পরার কারণ জেনে নেই….!

নারীদের সিঁদুর পরতে দেখলে কার না ভালো লাগে। 🌝
হিন্দু নারীদের শাড়ি আর সিঁদুরের প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বত্র।🌝 আমাদের দেশের হিন্দু মেয়েরা বিয়ের পর সিঁদুর পরবেন এটাই স্বাভাবিক।
এখন অবশ্য দিন পাল্টেছে।
শহরের হিন্দু নারীরা অনেকেই এখন আর সিঁদুর পরেন না।😑
.
বিবাহিত নারীদেরকে কপালে সিঁদুর পরতেই হয়।
এটা বাধ্যতামূলক প্রথা।
.
কিন্তু তারা কেন এই সিঁদুর পরেন?
.
এর নেপথ্য কারণই বা কি?
.

তা কি আমরা কেউ জানি?
.
তাহলে আসুন হিন্দু নারীদের সিঁদুর পরার কারণ জেনে নেই….!✌
.

আমাদের দেশের নারীরা সিঁদুর পরেন কেন?
আসলে আগেকার দিনে সিঁদুর তৈরি হত বাড়িতেই।
তাতে কোনও
রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করা হত না। বরং, একেবারে ভেষজ পদ্ধতি মেনেই তৈরি হতো সিঁদুর।
যা মহিলাদের ত্বকের কোনও ক্ষতি করতো না, ত্বককে রাখতো আরও ভালো।🙂
.
সিন্দুর বা কুঙ্কুমচর্চা প্রাচীন ভারতে কেবল নারীদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল না।
নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সেযুগে এই বিশেষ প্রসাধনটি ব্যবহার করতেন।
কালক্রমে পুরষের প্রসাধন-তালিকা থেকে কুঙ্কুম বাদ পড়ে।
তবে আজও বেশ কিছু পুরুষ কপালে সিঁদুরের তিলক পরেন।
বিশেষ করে শাক্ত মতাবলম্বীদের মধ্যে সিঁদুরের তিলকসেবার রেওয়াজ পুরোপুরি রয়েছে।
পুরুষদের আঙিনায় বিরল হয়ে পড়লেও বিপুলসংখ্যক বিবাহিতা হিন্দু নারী সিঁদুরবিহীন অবস্থার কথা ভাবতেই পারেন না।
অনেকেই বলে থাকেন, সিঁদুর একান্তভাবে বন্ধনের চিহ্ন।
বিবাহিতা নারীকে সিন্দুরচিহ্নিত করে সমাজকে জানিয়ে দেয়া হয় এই নারী অন্যের সম্পত্তি ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে ব্যাপারটা মোটেই এতটা সহজ-সরল নয়।
.
হিন্দু নারীর সিঁদুর পরা নিয়ে সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ব ভিন্ন কথা বলে।🌝
সেই বিদ্যার বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল বর্ণের সিঁদুর কপালে ধারণ করার অর্থ জড়িয়ে রয়েছে আদিম উর্বরাশক্তির উপাসনার মধ্যে।🌝
.
হিন্দু ধর্ম বলে আজ যা পরিচিত, তার উৎস এক টোটেমবাহী কৌম সমাজে।
সেখানে গাছ, পাথর, মাটি ইত্যাদিকে প্রাকৃতিক শক্তির প্রতীক বলে মনে করত।
আর তাদের কাছে লাল রংটি ছিল সৃষ্টির প্রতীক।⭕
সেই আদিম কাল থেকেই লাল সিঁদুরকে ভারতীয়রা বেছে নেন তাদের একান্ত প্রসাধন হিসেবে।✌
.
বিবাহিতা মহিলাদের ললাটে কুঙ্কুম তাদের সন্তান ধারণক্ষম হিসেবেই বর্ণনা করে। তার বেশি কিছু নয়।🌝
.

কিন্তু নৃতাত্ত্বিকদের এই বক্তব্যের সঙ্গে শাস্ত্রবচনের কোনও মিলই নেই।
শাস্ত্র অনুযায়ী, লাল কুঙ্কুম শক্তির প্রতীক। মানব শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দেবতা অবস্থান করেন।
.
ললাটে অধিষ্ঠান করেন ব্রহ্মা।
.
লাল কুঙ্কুম ব্রহ্মাকে তুষ্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। তা ছাড়া, কপালের ঠিক মধ্যভাগে সূর্যালোক পড়ার ব্যাপারটাকে আটকাতেও সিঁদুর ব্যবহৃত হয় বলে ধারণা করা হয়।
.
কপালে সিঁদুর প্রয়োগেরও কিছু বিধি ও ফলনির্দেশ শাস্ত্র প্রদান করে।
.
জানা যায়, তর্জনি দিয়ে সিঁদুর পরলে শান্তি পাওয়া যায়।.
.
মধ্যমা দিয়ে ধারণ করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়।
.
প্রাচীন কালে হলুদ গুঁড়ো দিয়ে সিঁদুর তৈরি হত।
.
তার পরে তাতে লাল কালি মিশিয়ে রাঙিয়ে তোলা হত।
.
কুঙ্কুমচর্চার কেন্দ্রবিন্দুটি হল আজ্ঞাচক্র।
.
এখানে সিঁদুর প্রয়োগে আত্মশক্তি বাড়ে। নারীকে ‘শক্তি’ হিসেবেই জ্ঞান করে হিন্দু পরম্পরা।
.
কুঙ্কুম বা সিঁদুর তাদের আজ্ঞাচক্রে প্রদানের বিষয়টি সেই কথাটিকেই মনে করিয়ে দেয়।.
#জয়_সনাতনী
#জয়_সনাতনী_সংস্কৃতি