ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে আরেক চুলকানি- এটি আমাদের সংস্কৃতি নয়!

ভ্যালেন্টাইন ডে চলে আসলেই একদল বলা শুরু করেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস, ছাত্র জনতার এই সংগ্রামকে ভুলিয়ে দিতেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ভ্যালেন্টাইন ডে’র মত বিজাতীয় একটা দিবস আমাদের এখানে আমদানি করেছে। এই গ্রুপই কয়েকদিন আগে ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি চেয়ার বসে থাকায় উষ্মা প্রকাশ করেছিলো। তাদের ক্ষোভ ছিলো বাংলাদেশের অবৈধ প্রেসিডেন্ট এরশাদ সেখানে উপস্থিত ছিলো, এরশাদ প্রনবের চেয়ে বয়েসে বড় প্লাস বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট, এতে বাংলাদেশের অবমাননা হয়েছে…। এরশাদকে প্রতিরোধ করতে গিয়েই ১৯৮৩ সালের দীপালীদের প্রাণ দিতে হয়েছিলো। তো সাম্রাজ্যবাদীরা সেটাকে ভুলিয়ে দিতে না হয় ভ্যালেন্টাইন ডে’কে আমদানী করে এনেছে বুঝলাম, কিন্তু ৮৩ সেই স্বৈরশাসককে প্রতি আপনাদের এই আবেগ আমদানির হেতু কি? সাবেক স্বৈরাচারকে ক্ষমতায় ভাগিদার করেও দোষ হয় না, সব দোষ ভ্যালেন্টাইন ডে’র! একটা স্বৈরাচারকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দুত করা হলে মিলন নূর হোসেন দীপালীদের অপমান হয় না, ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করলে তাদের স্মৃতি ঝাপসা হয়ে যায়!

ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে আরেক চুলকানি- এটি আমাদের সংস্কৃতি নয়! ওহে সংস্কৃতিজীবী, আরবী সংস্কৃতিও আমাদের সংস্কৃতি নয়। বোরখা-হিজাবও আমাদের সংস্কৃতি নয়। বোরখা হিজাবের সামলোচনা শুনলে তো আপনি লাফ দিয়ে উঠেন ইসলাম বিদ্বেষ বলে! দিব্যি প্যান্ট-শার্ট স্যুট পাঞ্জাবী পরে বাঙালী সংস্কৃতির দোহাই দিচ্ছেন। এর কোনটা বাঙালীর পোশাক? পৃথিবীতে এমন কোন জাতির সংস্কৃতি আছে যা কয়েকশ বছর ধরে একইরকম রয়ে গেছে? দুইশো বছর আগের বাঙালীদের খাবারদাবার পোশাকের সঙ্গে আমাদের ঘটে গেছে বিস্তর ফারাক। আগামী দুইশ বছর পর আমাদের এখনকার খাদ্যাভাস পোশাক রুচির সঙ্গে তখনকার মানুষদের থাকবে অনেক তফাত। এর নামই সংস্কৃতি।

ভ্যালেন্টাইন নিয়ে জনপ্রিয় চুলকানির নাম হচ্ছে ইসলামী চুলকানি। এই চুলকানি এত তীব্র যে গত বছর পুলিশ এই চুলকানিতে আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লায় প্রেমিক-প্রেমকিদের গণহারে আটক করে। চুলকানিতে আক্রান্ত সাংবাদিকরা সেই ছবি তুলে গণমাধ্যমে প্রকাশ করে। তারপর অলটাইম চুলকানিতে থাকা ফেইসবুকের ইসলামী সংস্কৃতির প্রতিনিধিরা সেগুলো শেয়ার করে ছড়িয়ে দেয়। কোন রকম অপরাধ না করেও এই যুগলরা অপরাধী। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ছেলেমেয়েরা বিবাহবহির্ভূতভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারবে না। ইসলাম এসব বেয়াল্লাপণা অনুমোদন করে না…।

কথাটা সত্য নয়। ইসলাম অনুসারে বিবাহবহির্ভূত সেক্স করা যাবে ঘরের দাসীর সঙ্গে। কাফের রমনীদের যাদের গণিমত হিসেবে পাওয়া গেছে তাদের সঙ্গেও। এদের উপর মুমিনদের যে কোন প্রকারে সেক্স করাকে ইসলাম জায়েজ করেছে। এসব করার জন্য বিয়ে করার প্রয়োজন নেই।

পার্কে ঝোপের আড়ালে প্রেমিক-প্রেমিকাকে ঘনিষ্ঠ হতে দেখে যদি আপনার নষ্টামি মনে হয় তাহলে বাড়ির দাসীর সঙ্গে অবাধ সেক্স কি উচ্চস্তরে সংস্কৃতি মনে হচ্ছে?