সতিদাহ বা সহমরণ:
সতিদাহ বা সহমরণ কোন বৈদিক প্রথা নয়। বেদে এ প্রথার কোন ভাবেই সমর্থন নেই। বরং রামমোহন রায়ের মতো বিদ্বান পন্ডিত বেদের মাধ্যমেই এ প্রথাকে ভূল প্রমাণিত করেন। 👌এবং বিদ্যাসাগরের মতো জ্ঞানী ব্যক্তি বেদের নির্দেশিত পথের অনুবর্তন করেই বিধবা বিবাহের প্রচলন করেন।
প্রথা এমনই শক্তিশালী একটা ব্যাপার, যখনই তা কোনো কারণে বন্ধ হয়, তা যেমন বন্ধই থাকে, তেমনি যখনই কোনো প্রথা, কোথাও থেকে শুরু হয়, সেটাও চলতেই থাকে। তাই যখনই কোনো হিন্দু রাজার রাজ্যের উপর মুসলমান শাসকদের দৃষ্টি পড়েছে 👹এবং ওই হিন্দু রাজারা যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হয়েছে, তখনই মুসলমান সৈন্যদের ধর্ষণ এমনকি মৃতদেহকেও ধর্ষণের কবল থেকে রক্ষা করার জন্যই পূর্বসুরী সিন্ধু রাজপরিবারের মেয়েদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পরবর্তী রাজ পরিবারের মেয়েদের এরকমটা ঘটানো অসম্ভব কিছু নয়, যেহেতু পরাজিতদের মেয়েদেরকে মুসলমান সৈন্যরা নির্বিচারে ধর্ষণ করতো, কোরান হাদিসেও যার অসংখ্য উদাহরণ আছে, এবং আছে মুসলমানদের ইতিহাসেও।😱
রাজা রামমোহন রায়, তার বাল্যকালে তার বৌদিকে সতিদাহ হতে দেখেন; এই বিষয়টি তাকে গভীরভাবে ব্যথিত করে। পরে তিনি ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর, বৃটিশ সরকারের ভাইসরয়, “উইলিয়াম বেন্টিংক” এর সহায়তায় সতীদাহ বন্ধে একটি আইন পাশ করাতে সমর্থ হন। এভাবেই ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয় সতীদাহ প্রথা। 🙋
কিন্তু এই সতীদাহ প্রথা বন্ধেও মুসলমানরা খুঁজে পায় মুসলিম শাসকদের অবদান। রাজ্য দখল করার সময় সবক্ষেত্রেই শুধু হিন্দু পুরুষদের হত্যা করা হতো, আর বাঁচিয়ে রাখা হতো সকল মেয়েদের। 😈সম্মান রক্ষার জন্য যেসব মেয়ে আত্মহত্যা করতো, তারা তো মরতোই, জীবিতদের মধ্যে সুন্দরীগুলোকে বন্দী করে সোজা পাঠানো হতো মুসলিম শাসকের হারেমে। এই সব মূর্খদের উদ্দেশ্যে বলছি, মুসলমান শাসকরা সতীদাহ বন্ধ করতে উদ্যোগী হলে এটার জন্য রাম মোহন রায়কে এত ফাইট করতে হতো না, আর এটা ১৮২৯ সালের পর, ইংরেজ আমলে বন্ধ না হয়ে ১৭৫৭ সালের আগে হতো। মুসলমানদের এ এক সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র; মুসলিম শাসকদের অত্যাচারের কারণেই যে ভারতে সতীদাহ প্রথার উদ্ভব হয়েছে, এই ইতিহাসকে চাপা দিতেই তাদের এই অপপ্রচার।
কেমন সমাজ, হিন্দু সমাজ ? যে সমাজে জীবন্ত মানুষদের পুড়িয়ে মারা হতো?🤔
মুসলমানদের এই প্রশ্নের মুখে পড়েন নি, এমন শিক্ষিত হিন্দু, হিন্দুসমাজে খু্ব কমই আছে। সত্যিই তো, সতীদাহ একটি নৃশংস প্রথা। তাই মুসলমানদের এই প্রশ্নের জবাবে হিন্দুদের মাথা নত করে থাকা ছাড়া, অন্য কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু, সত্যিই কি সতীদাহ হিন্দু সমাজের প্রথা ? প্রকৃতসত্য কি তাই ?🤐
৭১১ খিষ্টাব্দে, মুহম্মদ বিন কাশিমের কাছে সিন্ধুর হিন্দু রাজা দাহির পরাজিত হলে, রাজপরিবারের মেয়েরা সম্মান বাঁচাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। এমন সময় তাদের এক মন্ত্রী, রাণীকে জানায়, মুসলিম সৈন্যরা খুবই নৃশংস এবং অমানবিক হয়, এমনকি তারা মৃত মেয়েদেরকেও ধর্ষণ করতে ছাড়ে না। এই কথা শুনে মৃত্যুর পর দেহের পবিত্রতা রক্ষার্থে রাণী আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় এবং অন্তঃপুরের সব মেয়েরা ঐভাবেই আত্মাহুতি দেয়। এই হলো ভারতবর্ষে সতী হয়ে মরার জন্য সতীদাহ প্রথার শুরু। এরপর যখনই কোনো হিন্দু রাজা মুসলমানদের কাছে পরাজিত হয়ে রাজ্য হারিয়েছে, তখনই সেখানকার নারীরা সিন্ধুর রাজপরিবারের নারীদের দৃষ্টান্তকে অনুসরণ করে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের শেষ করে দিয়েছে। হিন্দু সমাজকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নারীদের এই আত্মবিসর্জন, কালক্রমে হিন্দু সমাজে খুব শ্রদ্ধার বিষয় হয়ে উঠে এবং যেহেতু সতী হিসেবেই এবং সতীত্ব রক্ষার জন্য তারা নিজেদেরকে দাহ করছে, তাই এর নাম হয়ে উঠে সতীদাহ এবং শত শত বছর ধরে চলার ফলে এটা এক সময় হিন্দু সমাজের অঙ্গ হয়ে উঠে।😰
তথ্যগুলো অনেকের কাছেই বানানো গল্প মনে হতে পারে; তাদের জন্য মহাভারত থেকে কিছু দৃষ্টান্ত:😇
মাথায় রাখবেন যে, রামায়ণ-মহাভারতে যেগুলি নেই, সেগুলো হিন্দু ধর্ম ও সমাজের কোনো প্রথা নয়।
রাজা শান্তনু, মৎস্য রাজার কন্যা সত্যবতীকে বিয়ে করে। অতঃপর সত্যবতীর দুই পুত্র জন্মানোর পর রাজা শান্তনু মারা যায়। ভীষ্ম, রাজা না হওয়ায়, রাজাবিহীন হস্তিনাপুর রাজ্যকে ভীষ্ম ও সত্যবতী মিলে ততদিন পর্যন্ত শাসন করে, যতদিন না সত্যবতীর পৌত্র পাণ্ডুর রাজ্যভিষেক হয়। পরে পাণ্ডু, রাজ্য ছেড়ে বনে চলে গেলে, অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র কর্তৃক অপমান সইতে না পেরে সত্যবতী বনের এক আশ্রমে চলে যায় এবং সেখানেই তার মৃত্যু। এখানে খেয়াল করুন, জীবিত সত্যবতীকে কিন্তু রাজা শান্তনুর মৃতদেহের সাথে দাহ করা করা হয় নি।
পরে, মহাভারতের আরেক ঘটনায়, বনে, পাণ্ডুর মৃতদেহের সাথে, পাণ্ডুর দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রির মৃতদেহকে এক সাথে দাহ করা হয়। এই ঘটনাকে কেউ সহমরণের দৃষ্টান্ত হিসেবে ভুল করতে পারেন, তাই এই ঘটনাটা বিস্তারিত তুলে ধরছি: যুদ্ধ জয় করে ফেরার পথে, মন্দ্র রাজ, তার পালিত মেয়ে মাদ্রির সাথে পাণ্ডুর বিয়ে দেয়, ফলে মাদ্রীকে নিয়ে পাণ্ডু হস্তিনাপুর ফিরে আসে। এরপর মাদ্রীর জেদের ফলে পাণ্ডু দুই স্ত্রীকে নিয়ে বনে বেড়াতে যায় এবং সেখানে মাদ্রীর ইচ্ছাকে পূরণ করার জন্যই হরিণ রূপে সহবাস রত এক ঋষি ও তার স্ত্রীকে পাণ্ডু তীর মেরে হত্যা করে বসে।
ঋষি মারা যাওয়ার পূর্বে স্বরূপে পাণ্ডুকে দেখা দেয় এবং এই অভিশাপ দেয় যে, পাণ্ডু যখনই তার কোনো স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে, তারপরই সে মারা যাবে। এর প্রায়শ্চিত্য করার জন্য সে রাজ্যের দায়িত্ব ছেড়ে স্থায়ীভাবে বনে চলে যেতে চায়। এরপর বনেই চলছিলো পাণ্ডু ও তার দুই স্ত্রীর দিন। এই ফাঁকে দেবতাদের আশীর্বাদে কুন্তীর সন্তান লাভের বরের কথা জানতে পেরে পাণ্ডুর অনুমতি নিয়ে কুন্তী তিন পুত্র এবং মাদ্রী দুই পুত্র লাভ করে। এই তিন ও দুই মিলেই হয় পাঁচ পাণ্ডব। এর বেশ কয়েক বছর পর, হঠাৎ, পাণ্ডু একদিন মাদ্রীর প্ররোচনায়, তার উপরে থাকা অভিশাপের কথা ভুলে গিয়ে মাদ্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হয় এবং সহবাস শেষে মারা যায় ।
মাদ্রীর কারণেই যে পাণ্ডুকে বনের জীবন বেছে নিতে হয়েছিলো এবং তার কারণেই আবার পাণ্ডুর প্রাণ গেলো, এসব ভেবে এবং স্বামীর শোক সইতে না পেরে মাদ্রী আকস্মিকভাবে প্রাণ ত্যাগ করে এবং স্বামী স্ত্রী দুইজনকেই এক সাথে দাহ করা হয়। মুসলিম বা ইংরেজ আমলের সতীদাহের যে রূপকে আমরা জানি, 😱এই ঘটনা সেরকম কিছু নয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, পাণ্ডুর সাথে তার জীবিত স্ত্রী কুন্তীকে কিন্তু দাহ করা হয় নি। কুন্তী, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরও বেঁচে ছিলো। সুতরাং মহাভারতের যুগে সতীদাহের কোনো ঘটনা ই ঘটে নি। আর যেহেতু রামায়ণ, মহাভারতেরও আগের কাহিনী, সেহেতু রামায়ণে সতীদাহের কোনো ঘটনা থাকাই সম্ভব নয়। রামায়ণ, মহাভারতের শুধু আগের কাহিনী ব’লে নয়, বাস্তবেও রামায়নে, রাজা দশরথ মারা গেলে তার তিন স্ত্রীকে তার সাথে দাহ করা হয় নি।🙅🙅🙅 রামায়ন, মহাভারতের এই ঘটনাগুলি থেকে এটা স্পষ্ট যে, হিন্দুধর্মের যেসব প্রামান্য গ্রন্থ সেগুলোতে সতীদাহের মতো কোনো ঘটনার উল্লেখ নেই, 🙆🙆🙆তাই সতীদাহ হিন্দুধর্মের কোনো সার্টিফায়েড প্রথা নয়। তাহলে মধ্যযুগে সতীদাহপ্রথা এলো কোথা থেকে ? 🤔এই প্রশ্নের জবাব ভাবুন, আর আমার উপরে বর্ণনা করা সিন্ধুর রাজপরিবারের মেয়েদের আগুনে আত্মবিসর্জন দেওয়ার ঘটনার বিষয়গুলোকে মিলিয়ে দেখুন।🤐
বেদ, সতীদাহ ও বিধবা বিবাহ:
পাশ্চাত্যের গবেষকদের অনেকের মাঝে দ্বন্দ্ব থাকলেও ভারতীয় বেদ ভাষ্যকারগণদের মতে বেদে সতীদাহের উল্লেখ নেই। বরং স্বামীর মৃত্যুর পর পুনর্বিবাহের ব্যাপারেই তাঁরা মত দিয়েছেন। এ বিষয়ে অথর্ববেদের দুটি মন্ত্র প্রণিধানযোগ্য:🤓
• অথর্ববেদ ১৮.৩.১
ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম্। ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্ম্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।।
অর্থঃ হে মনুষ্য! এই স্ত্রী পুনর্বিবাহের আকাঙ্খা করিয়া মৃত পতির পরে তোমার নিকট আসিয়াছে। সে সনাতন ধর্মকে পালন করিয়া যাতে সন্তানাদি এবং সুখভোগ করতে পারে।[১][২]
• অথর্ববেদ ১৮.৩.২ (এই মন্ত্রটি ঋগবেদ ১০.১৮.৮ এ ও আছে)
উদীষর্ব নার্ষ্যভি জীবলোকং গতাসুমেতমুপশেষ এহি। হস্তাগ্রাভস্য দিধিষোস্তবেদং পত্যুর্জনিত্বমভি সংবভূব।।
অর্থঃ হে নারী! মৃত পতির শোকে অচল হয়ে লাভ কি?বাস্তব জীবনে ফিরে এস। পুনরায় তোমার পাণিগ্রহনকারী পতির সাথে তোমার আবার পত্নীত্ব তৈরী হবে।[১][৩]
বেদের অন্যতম ভাষ্যকার সায়নাচার্যও তাঁর তৈত্তিরীয় আরণ্যক ভাষ্যে এই মতই প্রদান করেন।[৪]
[উপরের বেদের অংশটুকু উদ্ধৃত করা হল 👁️বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে কোন ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি চাইলে নিজ দায়িত্ববোধ থেকে দেখে নিতে পারেন]
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B9
তাছারাও নিচে বেদ থেকে আরো কিছু তথ্য দেওয়া হল:🤐🤐🤐
>> অপপ্রচারকারীর দাবীঃ ০১
গুণশালী পুরুষদের বিধবারা ঘি ইত্যাদি প্রলেপ ধারন করুক। স্বামী যে চিতাই শায়িত আছে সেখানে তারা উঠে যাক আভরন সজ্জিত হয়ে, কোন দুঃখ বা অশ্রুজল ছাড়াই।
(ঋগবেদ ১০।১৮।৭)
.
দাবীর সত্যতাঃ
উক্ত মন্ত্রে কোন বিধবা নারীর কথা মোটেই বলাই হয় নি। বরং অবিধবা অর্থাৎ পতিযুক্ত নারীর কথা বলা হয়েছে। আর যে নারীর পতি বিদ্যমান তার চিতার উপরে যাবার প্রয়োজন কি?
পরন্তু উক্ত মন্ত্রে নারীকে নিজ গৃহে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে যে, সে নারী যেন,সুপত্নি, দুঃখরহিত এবং রোগরহিত হয়ে প্রবেশ করে এবং সেই সাথে উত্তম সন্তান উৎপাদনে সমর্থ হয়।
আর সতিদাহ প্রথার নিয়মানুয়ায়ী পতি বিয়োগের পর পতির সাথে পত্নিকেও দাহ করা হয়। তখন নারী সুপত্নি, রোগরহিত অথবা উত্তম সন্তান উৎপাদনে সমর্থ কি না এসব দেখার প্রশ্নই আসে না।
অতএব ইহা স্পষ্ট যে, এই মন্ত্রে নারীর বৈবাহিক জীবনের প্রথম ধাপের বর্ণনা করা হয়েছে।
নিচে মন্ত্রের যথার্থ অর্থ দেখুন প্রতিটি পদের অর্থ সহকারে-
.
ইমা নারীরবিধবাঃ সুপত্নীরন্জনেন সর্পিষা সংবিশন্তু।
অনশ্রবোনমীবাঃ সুরত্না আরোহন্তু জনয়ো যোনিমগ্রে।।
(ঋগবেদঃ ১০।১৮।৭)
.
পদার্থঃ (ইমাঃ) এই (অবিধবাঃ) পতিযুক্ত (নারী) স্ত্রী (সুপত্নি) উত্তম পত্নি হয়ে (আঞ্জনেন) অঞ্জন আদি পদার্থ এবং (সর্পিষা) ঘৃত আদি সুগন্ধিত পদার্থ দ্বারা শোভিত হয়ে (সংবিশন্তু) নিজ গৃহ মধ্যে প্রবেশ করবে। তথা (অনশ্রবঃ) দুঃখরহিত (অনমীবাঃ) রোগরহিত (সুরত্নাঃ) উত্তম রত্ন আদি দ্বারা সুসজ্জিত হয়ে (জনয়ঃ) উত্তম সন্তানকে উৎপন্ন করতে সমর্থ স্ত্রী (অগ্রে) প্রথমে (যোনিম্) গৃহ মধ্যে (আরোহন্তু) প্রবেশ করবে।
.
=>> অপপ্রচারকারীর দাবী ০২
আমরা মৃতের বধু হবার জন্য জীবিত নারীকে নীত হতে দেখেছি।
(অথর্ববেদ ১৮।৩।১, ৩)
.
দাবীর সত্যতাঃ
সর্বপ্রথম উক্ত মন্ত্রের যথার্থ অর্থ দেখে নেওয়া যাক-
.
অপশ্যং যুবতিং নীয়মানাং জীবাং মৃতেভ্যঃ পরিণীয়মানাম্।
অন্ধেন যত্তমসা প্রাবৃতাসীৎপ্রাক্তো অপাচীমনয়ং তদেনাম।।
(অথর্ববেদ ১৮।৩।৩)
.
পদার্থঃ (অপশ্যম) আমি দেখেছি (জীবাম) জীবিত (যুবতীম) যুবতী নারীকে (পরিনীমানাম) বিবাহিত হতে এবং (মৃতেভ্যঃ) মৃতের নিকট হতে [মৃত পতির নিকট হতে] (নীয়মানাম) নিয়ে যেতে (যত) কারন সে (অন্ধেন তমসা) গভীর অন্ধকারে (প্রাবৃতা) আবৃত (আসীত) ছিলো (ততঃ) অতঃ (এনাম) তাহাকে (প্রাক্ত) সামনে থেকে [ মৃত পতির সামনে হতে] (অপচীম্ অনয়ম) দূরে আনয়ন করি।
.
উক্ত মন্ত্রে কোথাও সতী দাহের উল্লেখ নেই। বরং পতি বিয়োগে শোকান্ধকারে আচ্ছন্ন পত্নিকে সহনাভূতি দেখানো হচ্ছে। সে যেন অধিক শোকে আচ্ছন্ন হয়ে না পড়ে এ জন্য তাকে পতির নিকট হতে দূরে রাখার কথা বলা হচ্ছে।
আর অথর্ববেদ ১৮।৩।১ এই মন্ত্রে স্বভাবতই সতিদাহ প্রথার খন্ডন হয়ে যায়-
.
ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্বা মর্ত্য প্রেতম্।
ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্মৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।।
(অথর্ববেদ ১৮।৩।১)
.
পদার্থঃ (মর্ত্য) হে মনুষ্য! (ইয়ং নারী) এই স্ত্রী (পতিলোকম্) পতিলোককে অর্থাৎ বৈবাহিক অবস্থাকে (বৃণানা) কামনা করিয়া (প্রেতম্) মৃত পতির (অনু) পরে (উপ ত্ব) তোমার নিকট আসিতেছে (পুরাণম্) সনাতন (ধর্মম) ধর্মকে (পালয়ন্তী) পালন করিয়া (তস্য) তাহার জন্য (ইহ) এই লোকে (প্রজাম) সন্তান কে (দ্রবিণং চ) এবং ধর্মকে (ধেহি) ধারন করাও।
.
এ মন্ত্রে বেদ স্পষ্ট বিধবা বিবাহের আজ্ঞা দিচ্ছে। যেখানে পতি বিযোগের পর নারীর পূনরায় বিবাহের অনুমোদন রয়েছে। সেখানে বেদে সতিদাহ প্রথার দাবী একেবারেই ভিত্তিহীন।