কেন একদিন যে পশ্চিমবঙ্গবাসী কমিউনিস্টদের একচেটিয়া সমর্থক ছিলেন, তারা হয়ে উঠবে ঘোর হিন্দুত্ববাদীদের ভোটব্যাংক?

ইসলাম ধর্ম মতে প্রত্যেক মুসলমানকে তার জান জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছে। এটা কুরআনের আয়াত। সহি হাদিস বলছে ভারতে হামলা করতে সাহাবীরা নির্দেশ পেয়েছিলেন। সেই জিহাদের ডাক পেলে সব মুসলমানকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। অর্থ্যাৎ ভারতে জঙ্গিবাদের ডাক আসলে ভারতীয় মুসলমানদের সেই জঙ্গিদলে যোগ দিয়ে নিজ দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। ভারতের মাদ্রাসার উচ্চতর শ্রেণীতে এসব পড়েই সবাই মুফতি হয়। দেওবন্ধে এসব পড়তে আসে সারা পৃথিবী থেকে মুফতি মাওলানা হতে চাওয়া মুসলমানরা। চিন্তা করুন ভারতের একজন মুসলমান এই হাদিসটি পাঠ করছে, “আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)”।

একজন মুসলমানকে এই হাদিস তার দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যেতে বলছে। তার কাছে ভারত স্রেফ কাফেরদের দেশ! এই শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন করে একটা দেশ আজো বহাল রাখতে পারে। ভারত স্বাধীন হবার পরে মুসলমানদের শিক্ষা কেমন হবে সেই সিদ্ধান্ত মুসলমানদেরই নিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন নেহরু ও মৌলানা আজাদ। মুসলিম নেতাদের প্রায় সকলেই ছিলেন মৌলবাদী চেতনার। তারা মাদ্রাসা শিক্ষাকে বেছে নেয়। অপরদিকে নেহরু হিন্দুদের টোল শিক্ষা বিলুপ্ত করে দেয়। হিন্দুদের মন্ত্রতন্ত্র শিখে ঠাকুর পুরোহিত না হয়ে আধুনিক শিক্ষায় যে শিক্ষিত হতে হবে এটি সকলে বুঝলেও মুসলমানদের ছেড়ে দেয়া হলো কিছু ইতর সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের সিদ্ধান্তের উপর। আজো সিদিকুল্লাহ চৌধুরীর মত লোক সেক্যুলার সেজে ভারতে মাদ্রাসা শিক্ষার পক্ষে গলার রগ ফুলায়…।

অমিত শাহ মন্তব্য করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসাগুলোকে তরুণ-তরুণীদের মগজধোলাইয়ের কাজে ব্যবহার করছে বাংলাদেশি জঙ্গিরা। বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন জেএমবি এই মাদ্রাসাগুলোকে ব্যবহার করছে।…বাংলাদেশ সীমান্তে একাধিক জঙ্গিশিবির পরিচালনা করছে জেএমবি। সেই শিবিরে নিয়মিত যাতায়াত করে লস্কর-ই-তৈয়াবার জঙ্গিরা। শুধু আত্মগোপনের জন্যই নয়, সংগঠনে জনবলও নিয়োগ করছে তারা। আর এসব করা হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসাগুলো থেকে। মূলত নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলার মাদ্রাসাগুলোকে নিশানা করা হয়েছে। আসামের মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলোতেও চলছে একই কায়দায় জঙ্গি রিক্রুটমেন্ট।

অভিযোগগুলো পুরোপুরি সত্য। বহুদিন আগে থেকে আমরা বলে আসছি বাংলাদেশের জঙ্গিদের একটা নিরাপদ স্থান হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। সেখানকার মমতা বন্দোপধ্যায়ের সরকারের কারণেই জঙ্গিরা নিজেদের নিরাপদ মনে করে। বাংলাদেশের ইসলামপন্থি দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তারা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাজে বেজায় খুশি। মমতার মন্ত্রী সিদিকুল্লাহ চৌধুরী কি কখনো মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো স্বীকার করবে? সিদিকুল্লাহ চৌধুরীরা সময় তাদের আসল চোহার দেখাবে। তাদের সেক্যুলারপন্থা একটা সহি তাকিয়া ছাড়া আর কিছু নয়। জানা যাচ্ছে কেন্দ্রিয় মন্ত্রীর এমন অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএম প্রতিবাদ করছে। অর্থ্যাৎ পশ্চিমবঙ্গে ভোটারদের আরো বেশি করে হিন্দুত্ববাদীদের দিকে ঝুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এই তিন রাজনৈতিক শক্তি। সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপদ রাখতে আগামীতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ক্ষমতায় ডেকে আনবে। পশ্চিমবঙ্গে ‘মুসলিম তোষণ’ ঘটে না, সেখানে ‘ইসলাম তোষণ’ ঘটে। ইসলামকে যারা ভারতে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় তেমন শক্তি এখন পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের অনেক নিরাপদ ও প্রতিষ্ঠিত মনে করে। ভারতের মুসলিম নারীদের ধর্মীয় আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেরিয়ে আসার যে সামাজিক ও আইনি লড়াই তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে বলবান ইসলামিক শক্তি সরাসরি বিরোধীতা করে আসছে। এটি করে দিচ্ছে ইসলাম তোষনের কারণেই। ভারতের সেক্যুলার প্রগতিশীলদের যেখানে এসবের বিরোধীতা করার কথা সেখানে এই ইস্যুগুলি যখন হিন্দুত্ববাদীরা উঠায় তখন তা বিরোধীতা করে সেক্যুলাররা আসলে ইসলামপন্থিদের হয়ে কাজ করলেন। অমিত শাহকে কেন এসব নিয়ে কথা বলতে হবে। কিংবা সে তার মত করে যা বলার বলুক। কেন মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে ভারতের সেক্যুলাররা আজ পর্যন্ত দাঁড়ালেন না? অমিত শাহ দাঁড়ালে এসবে অন্য রঙ লাভ করে। সেক্যুলাররা তাদের আদর্শিকভাবেই আত্মঘাতি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত। কিন্তু তারা ফের মাদ্রাসার পক্ষই নিলেন! এতে লাভবান হবে হিন্দুত্ববাদীরাই। একদিন যে পশ্চিমবঙ্গবাসী কমিউনিস্টদের একচেটিয়া সমর্থক ছিলেন, তারা হয়ে উঠবে ঘোর হিন্দুত্ববাদীদের ভোটব্যাংক?Susupto Pathok