সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা, একমাত্র সনাতন ধর্মেই নারীদের শ্রদ্ধা,সম্মান ও অধিকার দিয়েছে।

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা, একমাত্র সনাতন ধর্মেই নারীদের শ্রদ্ধা,সম্মান ও অধিকার দিয়েছে।প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্ম হল সনাতন ধর্ম এবং এটি বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মও। দুঃখের বিষয়, এর অত্যন্ত খোলামেলা এবং উদারনীতি, যা অগ্রগতির লক্ষণ হতে পারত, কিন্তু এর বিরুদ্ধে এক ধরণের বিদ্বেষ ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সত্যের সমর্থনে কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।

আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলি একমাত্র নির্ভরযোগ্য উত্স, আমাদের বেদ, উপনিষদ, যা আমাদের ঋষিদের দেওয়া। সেই আশীর্বাদ যা ক্লাসিক হয়ে আজ অবধি আমাদের পথ প্রদর্শন করছে , কিন্তু আমরা সেগুলিকে সময়ের সাথে পরিচালনা করতে পারিনি।

মৌলিক সমস্যা হল আমাদের সমস্ত ধর্মীয় গ্রন্থ দেবভাষা সংস্কৃতে লেখা এবং আমাদের শিক্ষানীতি এমন হয়েছে যে বছরের পর বছর ধরে, সংস্কৃতের সঠিক জ্ঞানের অভাবে যে শিশুরা ভবিষ্যৎ নাগরিক, তারা জ্ঞান শুন্য হয়েছে আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থ সম্পর্কে।

পরিতাপের বিষয় যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোনো ধর্মনিরপেক্ষ ও বামপন্থী নীতিতে চলমান সরকারগুলো আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থের সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধারকে একটি কার্যযোগ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করেনি।বৃটিশ শাসনামলে হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থগুলোকে পেঁচানো হয়। নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের মাধ্যম বানিয়েছে।এরই ফল আজ বিশ্বের চিরন্তন, প্রাচীন ও আদি ধর্মের নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে হিন্দুদের একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

যে কোনো সমাজে নারী একটি সংবেদনশীল বিষয় ছিল এবং আজ এটিকে একটি ইস্যু বানিয়ে হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর প্রশ্ন চিহ্ন দেওয়া হচ্ছে। আমরা সকলেই জানি যে আমাদের প্রাচীনতম গ্রন্থ মনুস্মৃতিতে বলা হয়েছে – “যেখানে নারীদের পূজা করা হয়, সেখানে দেবতারা বাস করেন।” আমাদের ধর্মে নারীর অবস্থান বলার জন্য এটাই যথেষ্ট।

যে সময়ে পাশ্চাত্য সভ্যতা নারী-পুরুষের সমতার অধিকারের কথা বলেছিল, ভারতীয় গ্রন্থে নারীকে পুরুষের চেয়ে উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় সংস্কৃতিতে তার দেবীর স্থান ছিল। মানব সভ্যতার তিনটি স্তম্ভ- জ্ঞান, ক্ষমতা এবং সম্পদ তিনটিরই প্রধান দেবতা নারী।এটা লক্ষণীয় যে –

সরস্বতী, জ্ঞানের দেবী,
লক্ষ্মী, সম্পদের দেবী।
দেবী দুর্গার শক্তি, কালী সহ নয়টি
বৈদিক দেবী গায়ত্রী রূপে
পৃথিবীকে পালন করতে পৃথিবী মাতা

স্বরূপ গঙ্গাকে জলরূপে প্রাণিমাত্রার মুক্তি, যমুনা সরস্বতীর তিন মাতৃ প্রকৃতি, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এই সমস্ত রূপের পূজা করা হয়। হিন্দু বৈদিক সংস্কৃতিতে নারীকে বলা হয় পুরুষদের অর্ধাঙ্গিনী ও পুরুষের সহধর্মিনী, অর্থাৎ যাকে ছাড়া একজন পুরুষ অসম্পূর্ণ এবং সহধর্মিনী মানে যিনি ধর্মের পথে চলাফেরা করেন।

স্ত্রী ছাড়া পুরুষ কোনো ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতে পারেন না। রামায়ণেও উল্লেখ আছে। শ্রী রাম চন্দ্র যখন অশ্বমেধ যজ্ঞ করতে যাচ্ছিলেন এবং সীতা মাতা বনে ছিলেন, তখন তাঁকে সীতা মাতার একটি সোনার মূর্তি তৈরি করতে হয়েছিল আচারে উপবিষ্ট হওয়ার জন্য।

হিন্দু সংস্কৃতিতে স্বামী-স্ত্রীর মিলন দৈহিক না হয়ে আধ্যাত্মিক, এবং সম্ভবত এই কারণেই বিবাহ বিচ্ছেদ বা বিবাহবিচ্ছেদ নামক কোন পরিস্থিতির ধারণা করা হয়নি, এমন পরিস্থিতির অস্তিত্বও গ্রহণযোগ্য নয়, তবে বিবাহের বন্ধন হল বন্ধন। সাত জন্ম বিশ্বাস করা হয়।

পৃথিবীতে নারীর জন্মের সাথে সাথে তার নারী রূপকে পূজা করা হয় এবং নবদুর্গা উৎসবে কন্যাদেরকে দুর্গা স্বরূপিণী হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাদের পা ছুঁয়ে তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয়, কিন্তু পুত্রকে রাম বা কৃষ্ণ হিসেবে গণ্য করার কোনো উল্লেখ নেই। যে কোন জায়গায় ফর্ম।

এই একই মেয়ে যখন বিয়ের পর কনে হয়ে শশুর বাড়িতে যায় তখন তাকে লক্ষ্মী বলা হয়।এ প্রসঙ্গে আমাদের বেদের কিছু উদ্ধৃতি পেশ করা
হল- যজুর্বেদ 20.9

পুরুষ এবং নারী উভয়েরই নির্বাচিত শাসক হওয়ার অধিকার রয়েছে
যজুর্বেদ 17.45

পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম যার প্রধান ধর্মগ্রন্থ পবিত্র বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ঋষি।

যেমন — ১)ঘোষা, ২)লোপামুদ্রা, ৩)মৈত্রেয়ী, ৪) গার্গী, ৫)পৌলমি, ৬)রোমশা, ৬)অপালা, ৭)বাক, ৮)অপত, ৯)কক্র, ১০)বিশ্ববর, ১১)জুহু, ১২)ভগষ্ট্ৰীনি, ১৩)যরিতা, ১৪)শ্ৰদ্ধা, ১৫)উর্বশী, ১৬)স্বর্ণগা, ১৭)ইন্দ্ৰানী, ১৮)সাবিত্রী, ১৯)দেবায়নী, ২০)নোধা, ২১)আকৃভাষা, ২২)শীকাতনবাবরি, ২৩)গল্পায়নী, ২৪)মন্ধত্রী, ২৫)গোধ, ২৬)কক্ষিবতী, ২৭)দক্ষিণা, ২৮)অদিতি, ২৯)রাত্রি, ৩০)শ্রীলক্ষ্য; প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

অন্য কোন ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থে নারীদের এমন ভূমিকা দেখা গেছে বলে আমার জানা নেই।

ন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ঋষি।
ন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ঋষি।

এবার দেখা যাক প্রধান সনাতন ধর্মগ্ৰন্থ পবিত্র বেদ কী বলে —

০১. “আমার পুত্র শত্রুর নাশকারী এবং নিশ্চিতরূপে আমার কন্যা বিশিষ্টরূপে তেজস্বিনী।” (ঋগ্বেদ ১০/১৫১/৩)

০২. “যেমন যশ এই কন্যার মধ্যে এবং যেমন যশ সম্যকভূত রথের মধ্যে ঐরূপ যশ আমার প্রাপ্ত হোক” (ঋগ্বেদ ৯/৬৭/১০)

০৩. “নারীর যেন কখনো কোনো দুঃখ কষ্ট না হয়।” (অর্থববেদ ১২/২/৩১)

০৪. “নারী হল মঙ্গলময়ী লক্ষী।” (অর্থববেদ ৭/১/৬৪)

০৫. “নারী হল জ্ঞানের ধারক।” (অর্থববেদ ৭/৪৭/১)

০৬. “নারী হলো শিশুর প্রথম জ্ঞানদাতা।” (অথর্ববেদ ৭/৪৭/২)

০৭. “নারীকে উপহার হিসাবে জ্ঞান উপহার দাও।” (অর্থববেদ ১৪/১/৬)

০৮. “গর্ভজাত সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক তাকে সমান যত্ন করতে হবে।” (অথর্ববেদ, ২/৩/২৩)

০৯. “পিতার সম্পত্তিতে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে।” (ঋগ্বেদ ৩/৩১/১)

১০. “মানবের মধ্যে কেউ বড় নয়, কেউ ছোট নয়। জন্ম থেকেই তারা শ্রেষ্ঠ।” (ঋগ্বেদ ৫/৫৯/৬)

১১. “হে পুরুষ ও নারী, তোমাদের পোশাক ও দৃষ্টি সবসময় হোক ভদ্র ও অবনত। তোমাদের চলন হোক সংযত, লজ্জাস্থান হোক পোশাকে আবৃত, নগ্নতা হোক পরিত্যাজ্য।” (ঋগ্বেদ ৮/৩৩/১৯)

নারী হল মঙ্গলময়ী লক্ষী।
নারী হল মঙ্গলময়ী লক্ষী।

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

১২. “যুবতী ব্রহ্মচর্য শেষ করে পছন্দমত বিদ্বান যুবককে স্বামী হিসেবে গ্রহন করবে।” (অথর্ববেদ ১১/৫/১৮)

১৩. “একজন অবিবাহিত কুমারী বিদুষী কন্যা কে তার পছন্দের পাত্রের সাথেই বিয়ে দেয়া উচিত। কন্যাকে অল্প বয়সে বিয়ে দেয়ার কথা চিন্তাও করা উচিত নয়।” (ঋগ্বেদ ৩/৫৫/১৬)

১৪. “হে বধূ, যেমন বলবান সমুদ্র নদী সমূহের উপর সাম্রাজ্য স্থাপন করিয়াছে, তুমিও তেমন পতিগৃহে গিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাকো।” (অথর্ববেদ ১৪/১/৪০)

১৫. “হে স্ত্রী! শ্বশুরের নিকট সম্রাজ্ঞী হও, শাশুড়ির নিকট সম্রাজ্ঞী হও, ননদের নিকট সম্রাজ্ঞী হও এবং দেবরদের নিকট সম্রাজ্ঞীর অধিকার প্রাপ্ত হও।” (অথর্ববেদ ১০/৮৫/৪৬)

১৬. “শ্বশুরদের মধ্যে এবং দেবরদের মধ্যে, ননদ ও শাশুড়ির সঙ্গে মিলিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাকো।” (অথর্ববেদ ১৪/১/৪৪)

১৭. “একসঙ্গে মিলিয়া যজ্ঞ করিলে পতি পত্নী, পুত্র এবং কন্যা লাভ করেন। তাহারা পূর্ণ আয়ু ভোগ করেন। এবং উভয়ে নিষ্কলঙ্ক চরিত্রের স্বর্ণভূষণে দীপ্যমান হন।” (ঋগ্বেদ ৮/৩১/৮)

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা
সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

১৮. “স্বামীর উচিত শুধু একমাত্র স্ত্রীর প্রতি অনুরক্ত থাকা। দ্বিতীয় কোন নারীর প্রতি অনুরাগ তো দুরে থাক, অন্যকোন নারী সম্বন্ধে তার আলোচনাও করা উচিত নয়।” (অথর্ববেদ ৭/৩৮/৪)

১৯. “স্বামী ও স্ত্রীর সবসময় উচিত পুনরায় বিয়ে না করার ব্যপারে সংযমী হওয়া।” (ঋগ্বেদ ১০/৮৫/২৩)

২০. “একাধিক স্ত্রীর অস্তিত্ব মানেই জাগতিক সকল দুঃখের আনায়ন।” (ঋগ্বেদ ১০/১০৫/৮)

২১. “একাধিক স্ত্রী জীবনকে লক্ষহীন করে তোলে।” (ঋগ্বেদ ১০/১০১/১১)

২০. “একজন নারীর কখনো যেন কোন সতীন না থাকে।” (অর্থববেদ ৩/১৮/২)

২২. “হে নারী, মৃত পতির শোকে অচল হয়ে লাভ কি? বাস্তব জীবনে ফিরে এসো। পুনরায় পতি গ্রহণ করো।” (অর্থববেদ ১৮/৩/২ এবং ঋগ্বেদ ১০/১৮/৮)

 হিন্দুধর্মে নারী
হিন্দুধর্মে নারী

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

পুরাকালে নারীদেরও তার পিতা, কাকা ও ভ্রাতাদের মতোই উপনয়ন হত। এর প্রমাণ স্বরূপ — তামিলনাড়ুতে অবস্থিত বৃহদিশ্বর শিব মন্দিরে ১০৩৫ সালের দেবী সরস্বতী আদলের নারী ভাস্কর্য দেখা যায় যে নারী যজ্ঞোপবীত পরিহিতা।

বৃহদিশ্বর শিব মন্দিরে ১০৩৫ সালের দেবী সরস্বতী আদলের নারী ভাস্কর্য
বৃহদিশ্বর শিব মন্দিরে ১০৩৫ সালের দেবী সরস্বতী আদলের নারী ভাস্কর্য

ঋগ্বেদ-এ নারীদের যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করারও সাক্ষ্য আছে। তাই আমরা শুনি, মুদ্‌-গলিনীর যুদ্ধ জয়ের বৃত্তান্ত। বিশ্‌পলা যুদ্ধে একটি পা এবং বধ্রিমতী একটি হাত হারান। বধ্রিমতী এবং শশীয়সী তাঁদের বীরত্বের জন্য উল্লিখিত হয়েছেন। এরপরেও অনেক বীরাঙ্গনার কথা জানতে পারি, যেমন — ১) রানী লক্ষ্মী বাঈ, ২) রানী দুর্গাবতী, ৩) ঝালকারি বাঈ, ৪) রানী তারাবাঈ, ৫) রানী আব্বাক্কা, ৬) রানী ভেলু নাছিয়ার, ৭) রানী অবন্তীবাঈ, ৮) কেলাদি চেন্নাম্মা, ৯) কিত্তুর চেন্নাম্মা, ১০) উদা দেবী, ১১) লক্ষ্মী সহগল; প্রমুখ।

নারী যুদ্ধা
হিন্দু ধর্মে নারী যুদ্ধা

যেহেতু, সনাতন ধর্মের ভিত “অপৌরুষেয় পবিত্র বেদ”; তাই, বেদ থেকেই কিছুমাত্র তথ্যসূত্র দেওয়া হল।

শ্রী শ্রী চন্ডী তে সকল দেবতারা দেবীর স্তুতিতে বলেছেন — “হে দেবী, জগতের সকল নারীর মাঝেই আপনার মূর্তি স্বরূপ প্রকাশ।” (১১/৬)

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

 হিন্দুধর্মে নারী
হিন্দুধর্মে নারী

বাল্মীকি রামায়ণে বলা হয়েছে — “গৃহদ্বারা নয়, পোশাক নয়, কোনোপ্রকার আবদ্ধ দেয়ালে লোকচক্ষু থেকে আবৃত থাকা নয়, নয় কোন রাজ আভিজাত্য; চরিত্র ই একজন নারীর প্রকৃত আবরণ।” (৬.১১৪.২৭)

পরিশেষে, স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দের ভাষ্যে —

"ব্রহ্মচারি যদি হয় তবে ব্রহ্মচারিণী হবে না কেন?" নারী সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ
“ব্রহ্মচারি যদি হয় তবে ব্রহ্মচারিণী হবে না কেন?” নারী সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

“যে দেশে, যে জাতে মেয়েদের পূজা নেই, সে দেশ, সে জাত কখনও বড় হতে পারেনি, কস্নিন কালে পারবেও না। তোদের জাতের যে এত অধঃপতন ঘটেছে, তার প্রধান কারণ এইসব শক্তিমূর্তির অবমাননা করা।”

প্রসঙ্গত, যবে থেকে নারীদের (শাস্ত্র/অস্ত্র) শিক্ষা এবং শাস্ত্রীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করে গৃহে আবদ্ধ করার প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছিল তবে থেকে সনাতন ধর্মের দীপ্তি ফিকে হতে শুরু হয়েছিল।

পুত্রের মতো কন্যারাও পিতার সম্পত্তির সমান উত্তরাধিকারী। তাই আমাদের সমাজে নারীর অবস্থান ছিল পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত একাদশ শতাব্দীতে মুঘলদের আক্রমনের পর আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলোকে বিকৃত করা হয় এবং নারীদের অবস্থার অবনতি ঘটে।

সেটা ছিল মুঘল শাসনের সময় যখন হিন্দু। রাজা ও সৈন্যদের যুদ্ধে লড়তে হয়।ভারতীয় নারীরা মুঘলদের হাতে তাদের অপকর্ম করার আগে বা মৃত্যুর পরে তাদের স্বামীর অন্ত্যেষ্টি চিতার সাথে তাদের আত্মসম্মান রক্ষা করাকে উপযুক্ত মনে করত। ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অংশ, যা পরে সতীদাহ প্রথায় বিকশিত হয়।

ভারতীয় সমাজে নারীদের স্থান থেকে ধারণা করা যায় যে তাদের নিজের জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার ছিল।এ ছাড়া নারীর সম্মান রক্ষার জন্য আমাদের ইতিহাসের দুটি মহান যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল- রাবণ সীতাকে বধ করেছিলেন। কারণ হারান এবং মহাভারতের যুদ্ধ হয়েছিল দ্রৌপদীর সম্মানের জন্য।

আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থে অনেক জায়গায় নারীদের যজ্ঞ ও পূজার উল্লেখ আছে যেমন রামায়ণে কৌশল্যা তার পুত্র রামের জন্য করেছিলেন এবং তারা তার স্বামী বালির জন্য করেছিলেন কিন্তু পুরুষরা স্ত্রী ছাড়া যজ্ঞ করতে পারে না।

যে পাশ্চাত্য সভ্যতায় ভারতীয় সমাজে নারীদের পশ্চাৎপদতাকে সমতল করা হয়, সেখানেও আজও প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী বা আঙ্গুলের গোনা উচ্চ পদে নারীদের উল্লেখ আছে, একইভাবে পুরোহিতের পদেও ।

পশ্চিমা সভ্যতায়, সারা বিশ্ব 8 মার্চ একদিন নারী দিবস পালনের মাধ্যমে তাকে সম্মান করার কথা বলে, যেখানে অনাদিকাল থেকে ভারতীয় সংস্কৃতিতে, নারী নিজেই কেবল সম্মানিত এবং সম্মানিত ছিল না। দৈবশক্তি নিয়ে জন্ম।বরং, তিনি দেবীর মর্যাদাও পেয়েছেন।

আমাদের সংস্কৃতি আমাদের জন্য গর্বের বিষয় এবং এর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে যতটা সম্ভব অবদান রাখা আমাদের দায়িত্ব।

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা

আর পড়ুন….