ভারতবর্ষ শাসন

ভারতবর্ষ শাসন: ভারতের উদার গণতন্ত্রের দেয়াল শুধু বাংলাদেশ নয় পূর্ব এশিয়াকেও রক্ষা করছে।

ভারতবর্ষ শাসন: মুসলিমরা ভারতে হাজার বছর শাসন করার পরও হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ কেন? প্রথমেই হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত কে শ্রদ্ধা জানাই এইজন্য যে মধ্যপ্রাচ্যের নোংরা জঙ্গিবাদ ভারতের কারণেই আফগানিস্তান, পাকিস্তান ডিঙিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারেনি।

ভারতের উদার গণতন্ত্রের দেয়াল শুধু বাংলাদেশ নয় পূর্ব এশিয়াকেও রক্ষা করছে। ভারতের এমন অবদান কে চীনের নেতারাও শ্রদ্ধার চোখে দেখে থাকেন।

ভারতে ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম যার অনুসারী শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ইত্যাদি ভারতীয় ধর্মাবলম্বীদের থেকে বেশি । প্রায় পঞ্চাশ কোটি মুসলিম আছেন উপমহাদেশে যা বিশ্ব মুসলিমের এক তৃতীয়াংশ ও সর্বাধিক মুসলিম অধ্যুষিত দেশের মর্যাদা পায় ভারত। বাস্তবে এসব মুসলিমদের নিজস্ব কোন জঙ্গি বা জিহাদি সংগঠন নেই।

শুধু ব্যর্থতা ভারতের মুসলিমরা একত্রিত নয়, যেমনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদীরা দেশটিতে সংখ্যালঘু হয়েও সেই দেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। যেসব সংগঠন ভারত বা বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা সব মধ্যপ্রাচ্যের টাকায় প্রতিপালিত, স্থানীয় নয় কোনভাবেই। মধ্যপ্রাচ্য ব্যতীত এই পৃথিবী মোটামুটি শান্তিময়। ভারতীয় মুসলিমরা ভারতীয় উদার গণতন্ত্র উপভোগ না করে পাকিস্তান বা মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকিয়ে থাকে।

মধ্যপ্রাচ্যের ও দুরপ্রাচ্যের মাঝে ভারত ই একমাত্র দেশ (দেয়াল) যারা মধ্যপ্রাচ্যের ব্যর্থ মৌলবাদ হতে পূর্ব এশিয়াকে রক্ষা করছে। নতুবা মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ হত্যাকারী এসব জঙ্গিবাদ পূর্ব এশিয়ার বর্তমান অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ধ্বংস করে দিত।

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা পুরোটা মুসলিমিকরন করা হয়েছে বহু যুগ হলো কিন্তু ভারত কেন মুসলিমিকরণ হলো না এই আক্ষেপ প্রশ্নকর্তার। ব্রিটিশরা দুইশত বছর ভারত শাসনের পরেও সেখানে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠী হাতে গোনা কেন? স্পেন একদা মুসলিম শাসনে থাকার পরও সেখানে মুসলিমদের সংখ্যা এত কম কেন? সে তুলনায় ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা আশাতীত নয় কি?

গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপক মুসলিমিকরণ হলেও জনগণের শিক্ষা ও মৌলিক মানবাধিকার এর কোন উন্নতি হয়নি । নারীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত অনেকদেশে। তাদের আত্মিক তেমন কোন উন্নতি হয় নি যুগের পর যুগ মুসলিম শাসনে থাকার পরও । সেই তুলনায় বাংলাদেশ , দ: ও পূর্ব এশিয়ার শিক্ষার হার, নারী শিক্ষা ও মানবাধিকার অনেক বেশি সুরক্ষিত।

মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু জঙ্গি সংগঠন চায় নারীরা বিদ্যালয়ে যাবেনা, পাকিস্তানেও তাই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে খাদ্য সঙ্কট আছে, চাষবাসহীন প্রান্তরগুলো অরক্ষিত ।

এক ইসরাইল ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশ মোট খাদ্যের অর্ধেকও উৎপন্ন করতে পারে না। ধর্মযুদ্ধের নামে লড়াই জিইয়ে রেখে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে ভাগ্য অন্বেষণে। তেল , খেজুর ও আফিম ব্যতীত আর কোন সম্পদ না থাকায় তেলক্ষেত্রগুলোর দখল নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমনের পটভূমিও তাই। অতিরিক্ত তেল নির্ভরতার ফলে এখন তেলের দামও পড়তির দিকে।

অসংখ্য মতবাদের জন্ম হচ্ছে সেখানে , ওয়াহাবি, হানাফী, সালাফি,তালেবানি , ইত্যাদির বাম্পার ফলন সেখানে। পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে একদল মুসলিম আরেকদল মুসলিম এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। ভারত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলে দ: এশিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের নষ্ট জঙ্গিবাদ আরো ভালো ভাবে জাঁকিয়ে বসত। ফলে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই এর মত দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নতি থেমে যেত।

যাহোক, ভারতীয় ধর্মবিশ্বাসগুলোর আধ্যাত্মিক উপাদান থাকায় এখানে কিছু শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। ভারতের মুসলিম শাসকরা মধ্যপ্রাচ্যের মত ভারতকে মুসলিমিকরণ চেস্টা করেছে, কিন্তু তারা পুরো সফল না, তবে সফল আপনি যদি আফগানিস্তানে ইতিহাস উকি থেকে পড়েন সেখানে পরিস্কার ভাবে লেখা আছে ইসলাম সেখানে কিভাবে এসেছে, এখানে আফগানিস্তানের ইতিহাস দেখুন ইংরেজি উকি থেকে। যারা ইংরেজি একটু কম বোঝেন তাদের জন্য বাংলা উকি থাকল। সেখানে লেখা আছে  খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে আরব সৈন্যরা আফগানিস্তানে নতুন ধর্ম ইসলাম নিয়ে আসে।

পশ্চিমের হেরাত ও সিস্তান প্রদেশ আরবদের নিয়ন্ত্রণে আসে, কিন্তু ৯ম শতকে শেষের দিকে আরব সৈন্য চলে যাওয়া মাত্রই সেখানকার জনগণ তাদের পুরনো ধর্মে ফেরত যায়। ১০ম শতকে বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারা থেকে সামানিদ নামের মুসলিম শাসকবংশ আফগান এলাকায় আবার আক্রম করে প্রভাব বিস্তার করা শুরু করেন। ১০ম শতাব্দীতে গজনীতে গজনবী রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে এর পূর্ব পর্যন্ত মুসলমান ও অ-মুসলমানরা তখনও কাবুলে পাশাপাশি অবস্থান করত। কিন্তু তার পর থেকে আর সেটা সম্ভব হয়নি। 

জোর করে ধর্মান্তকরণ না করা নিয়ে অনেকেই এখন অনেক ছলের আশ্রয় নিয়ে থকে তবে তাদের কে বলব ভারতের  মধ্য ভগে ইসলাম তেমন প্রভব ফেলতে পারেনি বাংলা অংশ বাদে কারণ ভারতে মানুষ ছিল ইচ্ছা ধর্মে বিশ্বাসী। এই কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। ইচ্ছা ধর্ম কি সেটা এখান থেকে পড়ুন..

ভারতবর্ষ শাসন: মুসলিমরা ভারতে হাজার বছর শাসন করার পরও হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ কেন?

কিছু জিনিস জেনে রাখা ভালো।

১, ইরানের নাদির শাহ কর্তৃক মোঘল ভারত আক্রমণ ও লুটতরাজ , ময়ূর সিংহাসন নিয়ে যাওয়া, এরপর হতে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য দুর্বল হতে শুরু করে।

২, স্পেন ও বলকান অঞ্চল মুসলিম শাসনাধীনে আসার পর অটোমেন সাম্রাজ্যের পতন হলে, ওসব অঞ্চল হতে মুসলিমদের ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন করা হয়।

৩, বর্তমান ভারতের শাসকবর্গ স্পেন বা বলকানদের মত নিষ্ঠুর হত তবে ভারত অনেক আগেই মুসলিম শূন্য হয়ে যেত। বিশেষত: ব্যর্থ সিপাহী বিপ্লবের পর।

৫, যে সকল জাতি কিতাবি অর্থাৎ যাদের নিজস্ব ধর্মীয় কিতাব ছিল তাদের ভিতরে ধর্মান্তকরণ খুবই কম হয়েছে। ভারতের উচ্চবর্ণের হিন্দু, ইউরোপের খ্রিস্টান ও চীন জাপানের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নিজস্ব ধর্মীয় কিতাব থাকায় বাহিরের কোন ধর্ম তাদের খুব বেশি বিশ্বাসচ্যুত করতে পারেনি।

৬, ব্যাপক ধর্মান্তকরণ হয়েছে মূলত যাদের ধর্ম কিতাব ছিল না এমন জনগোষ্ঠী, উপজাতি, আদিবাসী , আফ্রিকা , মধ্যপ্রাচ্যে ও অন্য ধর্মে যাদের অচ্ছুৎ ভাবা হতো সেসব অঞ্চলে ।

৭, সবশেষে বলব, ভারত , স্পেন বা বলকান অঞ্চলে মুসলিম শাসন থাকার পরও ইসলাম ব্যাপক প্রসার লাভ করেনি তার মূল কারণ স্থানীয়দের ধর্ম বিশ্বাস । একই কারণে খ্রিস্টান অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর জনগন মুসলিমদের শাসনে কোন নতুনত্ব অনুভব করেন নি । বরং ইসলামী সুফীবাদ ও পীর আউলিয়াদের প্রভাবে ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে । খ্রিস্টানদের মত অসুস্থ মানুষের জন্য সেবামূলক মিশনারি কর্মকান্ড ইসলামে কোন কালে ছিলোনা। সেজন্যই সারা বিশ্বে খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারী সর্বাধিক।

লেখক-Md Samshuddin মূল লেখাটি এখান প্রথম প্রকাশীত হয়। লেখকের  সামান্য কিছু  কথার সাথে এক মত না হতে পেরে দুর্মরে উত্তর দেওয়া হলো।

আমাদের পাশে থাকতে একটি লাইক দিয়ে রাখুন।-ধন্যবাদ

ভারতবর্ষ শাসন, ভারতবর্ষ শাসন ভারতবর্ষ শাসন

আর পড়ুন…..