কৃষ্ণগহ্বর অথবা মহাবিশ্বের অতীব বিস্ময়কর কিছু কথা । এই অন্তর্জালের বেশ কিছু বন্ধুদের সাথে আলাদা আলোচনা করার সময়ে একটা জিনিস খেয়াল করেছি,আপনি ইংরেজি অসাধারন সব ভিডিও প্রতিবেদন পাবেন ইউটিউবে,হিন্দিতে অনুদিত ও অনেক ভালো ভালো প্রতিবেদন পাবেন এই সম্পর্কিত তবে বাংলা? উহু , টুনির মা বা ধর্মীয় প্রচুর কিছু পেলেও এই বিষয়ে লেখা অতীব কম!
আমি এক সামান্য মানুষ,নিজের অতি সামান্য বিদ্যের দৌড় তবু এই পাহাড় সরিয়ে একটু অন্য কিছু করার জন্য চেষ্টা করছি । ইচ্ছা আছে যদি বাংলাতে এই ধরনের কিছু কাজ ইউ টিউবে করতে পারি। আমাদের আসেপাশের অনেক নতুন প্রজন্মের মানুষ আছে যাদের একজন ও যদি এই চেষ্টার জন্য বিজ্ঞানের উপর আগ্রহী হয়ে ওঠে তবেই আমার এই পাগলামি স্বার্থক হবে মনে করি । বাজে কথা থাক,আসুন মূল বিষয় মানে ওই কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে আজ আমি আপনি মিলে কিছু জানার চেষ্টা করি ।
এই কৃষ্ণগহ্বর বিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় হয় আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে,আমাদের সবার পরিচিত সেই ঝাকড়া চুলের গুফো লোকটি মানে আইনস্টাইন নিয়ে আসেন সাধারন আপেক্ষিকতার তত্বকে ,সেই সময় থেকেই এই জিনিসটির উদ্ভবের সূচনা ভাবতে পারেন।
তত্ব রেখে আরো একটু সহজ ভাবে বলি,এই আমাদের সূর্য বা অন্য তারকা গুলোর ভিতরে চলে এক প্রক্রিয়া যাকে বলে ফিউসন । আগে সূর্য নিয়ে লেখাতে এর উপর কিছু বিস্তারিত পাবেন তাই ওটা নিয়ে এইখানে আর বললাম না,যাই হোক, এই ফিউসন কে একটা পারমানবিক চুল্লি ভাবতে পারেন যাতে ওই তারার ভিতরে প্লাজমা রূপে থাকা গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় আর বেরিয়ে আসে তাপ শক্তি ইত্যাদি।
একদিকে ওই ফিউশন চেষ্টা করছে তারাটিকে বিস্ফোরিত করতে আর অন্য দিকে এই তারার নিজস্ব মাধ্যাকর্ষন তাকে কেন্দ্রে টেনে রাখছে ।এই দড়ি টানাটানির এক সাম্য মানে ব্যালেন্সের কারণে তারা টিকে যাচ্ছে অনেক বছর ।
এই দড়ি টানাটানি চলতে থাকে যতক্ষন ওই তারার সঞ্চয়ে থাকা গ্যাসীয় বস্তুগুলো বা আরো সোজাসুজি হাইড্রজেন গ্যাস এর ভাড়ারে টান না পরে । তারপর?ওই অন্যদিকে থাকা অভিকর্ষ বল জয়ী হয়ে আসেপাশের সব কিছুকে কেন্দ্রের দিকে টানতে থাকে । একটি তারাতে হাইড্রজেন ছাড়া এর থেকে পরিবর্তিত হিলিয়াম,কিছু অক্সিজেন এবং ধাতু ও থাকে যা ওই চাপে পরিবর্তিত হয়ে জ্বালানিতে পরিনত হয়ে যায় ।
এই ভাবে এক সময়ে ওই বাজে তুবড়ির মতো ফেটে যায় যাকে বলে সুপারনোভা । এতে ওই অবশিস্ট ধাতু এবং বিকিরণ ছড়িয়ে যায় মহাকাশে । এতেই শেষ হলে আর এই লেখার দরকার হতো না,ওই যে উপরে বলেছি তারার কেন্দ্রের অভিকর্ষ এবং তার টানে থেকে যাওয়া কিছু বস্তু এতটাই সংকুচিত হতে থাকে যে ওই অঞ্চলে একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরী হয় ।
আইনস্টাইনের ভাষাতে আপেক্ষিক স্থান এবং কাল এর এই জগতে ওটা একটা ছিদ্র তৈরী করে । খটমট লাগছে?দাড়ান,একটু সহজ করি,স্থান এবং তার সাথে যুক্ত সময় একটি চাদর হলে ওই কৃষ্ণগহ্বর তাতে একটি ছ্যাদা তৈরী করে ফেলে । এই বস্তুটির অভ্যন্তরীণ আকর্ষন এতটা প্রবল যে প্রায় সর্বগামী আলো পর্যন্ত এর টানে হার মেনে যায় ।অর্থাত আলো শোষণ করে নিজের অবস্থান কে একেবারে অদৃশ্য করে ফেলে তাই আমরা এ যাবৎ এর কোনো রূপরেখা তুলে ধরতে স্বক্ষম হই নি ।
এই কৃষ্ণগহ্বর সমন্ধে কিন্তু ধারণা প্রথম দিয়েছিলেন পিয়ের সিমন (উচ্চারন ঠিক জানি না ,ইংরেজিতে আছে Pierre Simon মজার কথা হলো এই সূত্র তিনি পেয়েছিলেন ১৭৯৫ এ আর পেয়েছিলেন নিউটনের অভিকর্ষ তত্বের থেকে । তার কাছ থেকেই আমরা জানতে পেরেছি যে অতীব সংকোচনের ফলে কোনো এই অভিকর্ষের কারণে ওই ক্ষেত্র থেকে আলো ও নিস্ক্রান্তি পায় না ।
কৃষ্ণগহ্বর এর রকম সকম :
এটি এখনো যা জানতে পারছি তাতে দু ধরনের হয় তার গতিবিধির ভিত্তিতে মানে একটা স্থির আর অন্যটা একই জায়গায় ওই চরকির মতো ঘুরতে থাকে ।এই চরকির মতো ঘোরার গুলোই সংখ্যায় বেশি এই চরকির মতো ঘোরা গুলো সেই তারার বা কয়েকটি তারার থেকে তৈরী কৃষ্ণগহ্বর যেগুলোর ওই কেন্দ্রের বস্তু ঘুরতে থাকে অনেকটা ওই বাজির চরকির মতো।
এই কৃষ্ণগহ্বর আবার তার প্রকৃতির অনুযায়ী আরো কিছু বিশেষত্ব নিয়ে আছে তা হলো :
১। ভিতরের মূল অংশ যা কি আমরা জানি না ২। ভিতরের অংশের প্রান্ত মানে যাকে ইভেন্ট হরাইজন (আমার অনুবাদে,কাল রেখা ) ৩ । এরগোস্ফিয়ার বা ওই কাল রেখার বাইরের ডিম্বাকৃতি একটি মহাশূন্যের অংশ যাতে ওই কৃষ্ণগহ্বরের প্রভাব শুরু হয় ৪।শুন্য ক্ষেত্র বা স্পেস লিমিট যা ওই এর্গস্ফিয়ার এবং সাধারন মহাকাশের সীমান্ত মানে প্রভাবের সীমারেখা ।
এইখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, ওই কৃষ্ণগহ্বরের বাইরের ক্ষেত্র মানে এরগোস্ফিয়ার থেকেও কোনো বস্তু বাইরে ছিটকে যেতে পারে ওই কৃষ্ণগহ্বরের অভ্যন্তরীণ ঘুর্ণনের শক্তির কারণে সোজা কথায় ওই ঘুরতে থাকা একটা লাট্টুর উপরে কোনো কাগজের টুকরো ফেলুন,দেখবেন ছিটকে বেরিয়ে যাচ্ছে,অনেকটা ওই রকম। অবশ্য,ওই বাইরের ক্ষেত্রের ভিতরের ওই কালরেখার মধ্যে যদি কিছু ঢুকে যায় তবে তার আর পরিত্রান নাই !
অদেখা এই কৃষ্ণগহ্বরকে আমরা নির্ণয় করি কি করে ?
শুরুতেই বলে রাখি,জ্যোতির্বিজ্ঞানে এক্স রে ব্যবহারের পরেই আমরা জানতে পেরেছি এর বাস্তবে উপস্থিতি ,এর কারন ওই এক্স রে বিকিরণ এর পরিচিতি আমাদের সামনে তুলে ধরেছে ।
১। এরজন্য এই বস্তুটির বাইরের দিকে ঘটে যাওয়া কাজ কারবার কে ধরেই এর অবস্থান নির্ণয় বা প্রকৃতি ইত্যাদি জানা যায় । আরো সহজ করি ? প্রথমত ওই কৃষ্ণগহ্বর আমাদের এই সূর্য আর তার পরিবার মানে যত গ্রহ উপগ্রহ ইত্যাদি আছে তার কয়েক হাজার বা লক্ষ গুন বেশি বস্তু নিয়ে থাকে তাই এর আসে পাশে কোনো তারা যখন তার অক্ষে ঘুরতে থাকে তার নিজস্ব আবর্তের কিছু পরিবর্তন দেখা যায় যেই ওই এর্গস্ফিয়ারের কাছে আসে ,এই ব্যতিক্রম ধরেই আমরা বুঝতে পারি কেন এই চ্যুতি হচ্ছে । এর উপর সম্পর্কিত একটি ছবি দিচ্ছি ,ছবি নম্বর ।।।। , ওই চলাচলের হেরফের নিজেরাও বুঝতে পারবেন ।
২। এছাড়াও আরো একটি উপায় আছে,সেই আমাদের গুফো লোকটা যে তত্ব দিয়েছে তার ভিত্তিতে যদি দেখেন তা হলে কোনো মহাজাগতিক বস্তুর পাশ দিয়ে যাওয়া আলোক অভিকর্ষের কারণে বেঁকে যায় ,এখন দৃশ্যমান বস্তুর জায়গায় যেমন বেঁকে যাবে একই কাজ হবে কোনো কৃষ্ণগহ্বরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়েও ,এই ভিত্তিতে একটা পরিমাপ পাওয়া ও সম্ভব হচ্ছে ।
৩। আরো একটি উপায় হলো কোনো বস্তু যখন ওই কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে মানে ওই কালরেখাতে ঢুকে যায় তখন তার ভর শক্তিতে রুপান্তরিত হয় এই সময়ে মানে ওই বস্তুর তীব্র বেগে কৃষ্ণগহ্বরে ঢুকে যাওয়ার সময়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লক্ষ লক্ষ কেলভিন ডিগ্রিতে যার ফলে এর থেকে ওই কৃষ্ণগহ্বরের বাইরের দিকে বিকিরণ ঘটে এক্স রে ।এর নির্ণয় করা হয় চন্দ্রা টেলিস্কোপ দিয়ে (হ্যা , আমাদের দেশের বিজ্ঞানী এবং নোবেল জয়ী চন্দ্রশেখরের নামে ওটার নামকরণ হয়েছে) এছাড়াও আরো কিছু বিকিরণ হতে থাকে ওই প্রবেশের সময়ে যা নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে ।
খুব গুরুত্বপূর্ন একটা কথা মাথায় রাখবেন,এই ভুল অনেক শিক্ষিত লোকে ও করে , এই কৃষ্ণগহ্বর কোনো ভ্যাকুম ক্লিনার এর মতো না ।মানে কান ধরে কোনো পদার্থ কে নিজের দিকে নিয়ে আসে না , যদি কিছু ওই কালরেখার মধ্যে ঢুকে যায় তবেই ওটা টেনে নেয় । এক কথায় এটি আমাদের জন্য কোনো বিপদজনক বস্তু না ! সে তার অবস্থানে থাকে এক অযুত নিযুত সময়ে !
কৃষ্ণগহ্বর এর টিকে থাকা
আগেই বলে রাখি, আমাদের এই গ্যালাক্সিতে মধ্যভাগে যে কৃষ্ণগহ্বর আছে ওটা আমাদের সূর্যের ৪০ লক্ষ গুন বড়,হু হু ।।।বুঝেছেন নিশ্চই কি জিনিস এই বস্তুটি ! আরো বলে রাখি যা দেখছি গড়পরতা এক একটি এই জিনিস আমাদের সূর্যের ২০ গুন বড় হয়ে থাকে ! আমাদের এই গ্যালাক্সিতে মানে আকাশগঙ্গা বা মিল্কি ওয়েতে এই রকম জিনিস শত শত আছে !
চমকপ্রদ বিষয় হলো ,সৃষ্টি বা বিগ ব্যাং অথবা যাই হয়ে থাকুক ,সে সময়ের কৃষ্ণগহ্বর কিন্তু আজও টিকে আছে ! এর কারন হলো এর প্রকৃতি ।ধরুন,কোনো কৃষ্ণগহ্বর তৈরী হলো ছোট আকৃতির এরপর প্রতি পলে এটি কোটি কোটি মহাজাগতিক বস্তু হজম করে চলে নিজের মধ্যে ফলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পায় । আরো মজার হলো একটি কৃষ্ণগহ্বর আরো একটির পাছে অবস্থান করতে করতে এক সময়ে একদেহে লিন হয়ে আরো বৃহত হয়ে ওঠে ।
এর বিনাশ এত ধীরে কেন ?
এর কারন হলো যা নিয়ে নিচ্ছে তার নির্গমন অতীব কম ,যাও বা হয় তার সময় রেখা এত ধীরে যে আমরা আজো এর নির্গমন দেখে উঠতে পারি নি । প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিঙ এর নির্গমনের উপর তার তাত্ত্বিক বর্ননা দিয়েছেন তবে তার নিরীক্ষা করার জন্য সে সময় সীমা আছে তা এত বেশি যা আমরা কবে ওটা প্রতক্ষ্য করতে পারবো বলা অতীব কঠিন ।
এই কৃষ্ণগহ্বরের থেকে বিকিরণ নির্গমনের তাত্ত্বিক প্রতিষ্ঠা করেন স্টিফেন হকিঙ,এর নাম ও হয়েছে তার নামের উপরে মানে ওটা কে বলা হয় হকিং রেডিয়েশন ।এই নির্গমন ও হয় অতীব কম পরিমানে ফলে এর বিনাশ এত ধীরে হয় । প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো একদম শুরুর কৃষ্ণগহ্বর আজো বর্তমান এমনকি ওটা ওই বিগ ব্যাং এর পরেই তৈরী যা থেকে পরে তারার সৃষ্টি না তারা থেকে ধংশ হওয়ার পরে হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর তর্ক বিতর্কের অবকাশ আছে!
এই নির্গমনের মূল ভিত্তি সেই কোয়ান্টাম তত্ব যা নিয়ে এই পরিসরে বলা সম্ভব না তাই বললাম না ।
কৃষ্ণগহ্বর এর কিছু আকর্ষনীয় বিষয় :
১। কোনো বড় মাপের মানে ধরুন বাপের বাপ গোছের তারা যার তুলনায় ওই কৃষ্ণগহ্বর যদি কম আকৃতির হয় তা হলে উল্টে ওই তারা এটিকে গিলে ফেলতে পারে !
২। ১৯৭৪ এ সিগনাস X-1 কৃষ্ণগহ্বর টি আদপে ওই বস্তু কি না তা নিয়ে স্টিফেন হকিং এবং তার বন্ধু এবং বিজ্ঞানী কিপ থর্ন এর মধ্যে একটি বাজি হয়েছিল । হকিং ১৯৯০ সালে বাজিতে হার মানেন কারন তিনি ওটা কৃষ্ণগহ্বর না বলেছিলেন আর এটি যে তাই তার নির্ণয়ের নিশ্চয়তা পাওয়া গিয়েছিল এত বছর পরে!
২। তাত্ত্বিক ভাবে এর অপর প্রান্তে ওয়ার্ম হোল বা শ্বেত গহ্বর এর উপস্থিতি কে আন্দাজ করা হয় যদিও পুরো বিষয়টি অতীব উচ্চাঙ্গের কিছু ভাবনা,তার যথার্থতা নিয়ে বলার সময় অনেক দেরিতে আসতে পারে ।
৩। প্রত্যেকটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রে একটি করে কৃষ্ণগহ্বর আছে ওটা বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন ,আমাদের এই আকাশগঙ্গা মানে গ্যালাক্সিতেও তার উপস্থিতি আছে ।
৪। বর্তমান ধ্রুপদ পদার্থবিদ্যার মাধ্যমে এবং হালের স্ট্রিং থিওরির দৌলতে এই কৃষ্ণগহ্বরের সংখ্যা যে শত শত কোটি তা বিজ্ঞানীরা বুঝতে চলেছে ।
৫। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো তারা এই কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষেত্রের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে স্রেফ এর প্রভাবে খন্ড খন্ড হয়ে যেতে পারে ।
উপরে যেমন বলেছি,ওই শুরুর কোনো কৃষ্ণগহ্বরের অবসানের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে 10^54
বছরের মতো,তা হলেই বুঝে নিন এর আয়ু কি পরিমানের! গবেষনাগারে কম্পিউটার সিমুলেশন মানে একটা রূপক তৈরী করে ওই কৃষ্ণগহ্বরের থেকে উল্টো বিকিরণের যে তত্ব হকিং দিয়েছেন তার একটা প্রমান পাওয়া যায় তবে বাস্তবে ? উহু,আমাদের মানুষের বা সভ্যতার আয়ু এত কম বা প্রযুক্তি এখনো এতই কম উন্নত যে কৃষ্ণগহ্বরের শেষ ঠিক কি হবে তার কোনো ধারণা পাওয়া বড় শক্ত !
আরো মজার কিছু তথ্য এই কৃষ্ণগহ্বরের উপর :
১। ধরুন আপনি এই গর্তে ঢুকে গেলেন, তা হলে কি হতে পারে ?
উপরে যেমন বলেছি,এই কালরেখা এক মজার বিষয়,এইখেনে সময় ও থমকে দাড়িয়ে আছে,প্রথমত আপনি ওই কথ্য ভাষাতে যেমন বলে তেমনি এর টানে এত লম্বা হয়ে যাবেন যে বলার না!তবে তার আগেই আপনার পঞ্চত প্রাপ্তি হবে !তারপর?স্রেফ ভেঙ্গে গিয়ে পরমানু এবং আপনার ওই ঢুকে যাওয়ার একটা ছাপ কিছুক্ষন বর্তমান থাকবে কাল রেখার বহিস্থ ভাগে ।চাপ নেবেন না,কোনো জীবিত বস্তুর ওতে ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই,অন্তত এই পৃথিবীর আয়ুস্কালে কোনো সম্ভাবনাই নেই! কারন আমাদের সবচেয়ে কাছের এই কৃষ্ণগহ্বরের থেকে আমরা ১৬০০ আলোকবর্ষ দুরে আছি ।সুতরাং টেনশিত হবেন না !
২। দুটি কৃষ্ণগহ্বরের লিন হয়ে যাওয়ার সময়ে যে মহাজাগতিক অভিকর্ষের তরঙ সৃষ্টি হয় তা আমরা নির্ণয় করতে পেরেছি এবং এর উপর নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী রেইনার ওয়েস ,ব্যারি এবং কিপ থর্ন । তারা এই তরঙ যা আমাদের পৃথিবী থেকে নির্ণয় করার কাজ করেছিলেন।তাদের সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান LIGO (।।।। ) র দৌলতে আমরা একাধিক এই ধরনের কৃষ্ণগহ্বরের সংযুক্তি আর এই অভিকর্ষ তরঙ্গের প্রমান পেয়েছি এই ২০১৫ থেকে এই যাবৎ
3। কৃষ্ণগহ্বরের ক্ষুধা অপরিসীম মানে ধরুন একটা গ্যালাক্সি হজম করে ফেলতে পারে একটি এই জিনিস ! কারণ ওটা এই কৃষ্ণগহ্বরকে আরো স্ফীত করবে মাত্র তাই ধারণ করার কোনো চরম সীমা আমরা জানি না !
এই কৃষ্ণগহ্বরের উপর এক একটি ভাগে প্রচুর লেখা যায় ,আমি অতীব অলস লোক তাই এইখানেই থামলাম । এর বেশি জানার জন্য নিচে বেশ কিছু তথ্যসূত্র দিলাম আর দিলাম কিছু সম্পৃক্ত ভিডিও । আগেও যেমন বলেছি,আমার খুব ইচ্ছে এই ধরনের কাজ গুলো একটু সার্বজনীন করে তুলতে কারন বাংলাতে এই কাজ অতীব কম ।
পরবর্তিতে ওয়ার্ম হোল বা শ্বেতগহ্বরের উপর কিছু লেখার আগ্রহ রইলো তবে মনে রাখবেন এই বিষয়গুলো অধিকাংশই তাত্ত্বিক ,ফলিত অংশ খুব কম কারন বিজ্ঞানের বিশেষত মহাকাশের উপর আমাদের জানার পরিধি অতীব কম এবং বেশ কয়েকশো বছর পরে হয়ত স্রেফ মূল বিষয়গুলো আমরা ধরতে পারবো। আর কয়েক হাজার বছরে শুরু করব মহাজাগতিক বসুত্গুলোকে নিয়ন্ত্রন করা,সেই স্বপ্ন নিয়েই এই লেখা শেষ করছি । ভালো থাকুন সবাই আর বিজ্ঞান মনস্কতা কে ছড়িয়ে দিন সর্বস্তরে ! আমার লেখা স্বার্থক হবে যদি নতুন প্রজন্মের কোনো মানুষ এই লেখাগুলো পড়ে একটু বিজ্ঞান কে ভালবাসে !
অনেক ধন্যবাদ !
তথ্যসূত্র :
১. প্রথমেই ‘নাসারা ‘ দের থেকে মানে নাসার থেকে পাওয়া সূত্র https://www.nasa.gov/black-holes
২. এই কৃষ্ণগহ্বরের উপর আলোকপাত করে আমাদের আলোকিত করা স্টিফেন হকিং এর কাজের কিছু বিবরন https://www.livescience.com/62016-stephen-hawking-black-holes.html
৩. একটু উইকি ধরে https://en.wikipedia.org/wiki/Black_hole
৪. ভিডিও প্রতিবেদন , কৃষ্ণগহ্বরের জীবন বৃত্তান্ত থেকে তাত্ত্বিক ধ্বংসের চালচিত্র https://www.youtube.com/watch?v=e-P5IFTqB98
৫. আরো একটি ভিডিও,কৃষ্ণগহ্বরের ভিতরের কথা https://www.youtube.com/watch?v=vNaEBbFbvcY
৬. একটু উচ্চাঙ্গের আলোচনা এই বিষয়ে https://www.space.com/15421-black-holes-facts-formation-discovery-sdcmp.html
৭. কৃষ্ণগহ্বরের উপর বেশ কিছু কাজের সূত্র https://www.theguardian.com/science/black-holes
৮. পুরো পৃথিবী জুড়ে একটি নেটওয়ার্কে তৈরী করা টেলিস্কোপ বা দুর্বিক্ষণের মাধ্যমে এই প্রথম কৃষ্ণগহ্বরের একটা রূপরেখা খাড়া করার চেষ্টার উপর জানুন https://www.nature.com/news/how-to-hunt-for-a-black-hole-with-a-telescope-the-size-of-earth-1.21693
আরো পড়ুন….