সত্যিই ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান! কুরআনে যেদিন আয়াত নাযিল হলো একজন মুমিন বান্দা সর্বচ্চ ৪টি স্ত্রী একসঙ্গে রাখতে পারবে তখন একটা বিতর্ক দেখা দিল। কেননা সাহাবীদের একেক জন ৭-৮ থেকে শুরু করে ১০-১২টা করে স্ত্রীও তখন বর্তমান।
এদের বিষয়ে তাহলে কি ফয়সালা হবে? নবীর কাছে সমস্যার কথা পৌঁছানো হলো। নবী ফয়সালা দিলেন, পছন্দ সই ৪ জনকে রেখে বাকীদেরকে তালাক দিয়ে দাও…।
আল্লার নবীর মুখের কথাই আইন। যেসব মুসলমানের ১০-১২টি বউ ছিল তারা দেখেশুনে বয়স কম ও সুশ্রী ও গায়ে গতরে শক্তিশালী যারা সংসার সামলাতে পারবো আরো বেশিদিন সেরকম ৪ জনকে রেখে বাকীদেরকে গণহারে তালাক দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়া হলো! অসহায় এই নারীদের কোন অপরাধ ছিল না।
অনেকেই তখন শারীরিকভাবে অক্ষম, বিগত যৌবনা, অসুন্দর কিংবা অনিদূরই যৌবন হারাবেন। এরকম অসহায় সম্বলহীন নারীদের কোথায় ঠাই হবে সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ’র পক্ষ থেকে কোন আয়াত আসেনি।
এদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল ইতিহাসে তা স্থান পায়নি। এরা ভিক্ষে করেছিল না দেহ বেচেছিল না পথে মরে পড়েছিল ইতিহাসে তা ঠাই পাবার কোন সুযোগই ছিল না কেননা মুসলিমরা কয়েক শতাব্দিকাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলো। আর ইতিহাস লেখে তারাই যারা রজমুকুট পরিধান করেন।
ইসলাম নারীদেরকে দিয়েছে সর্বচ্চ সম্মান। সুরা নিসাতে সেরকম কথাই বলা আছে- সুরা নিসাতে, আয়াত ১২৮ (৪:১২৮):যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পরের কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গুনাহ নাই।
কি আয়াত পড়ে কিছু বুঝা যাচ্ছে না? তাহলে আসুন এই আয়াত সম্পর্কে হযরত আয়েশা কি তাফসির করেছিলেন দেখি। সহিহ্ বোখারি, ভল্যুম ৭, হাদিস ১৩৪: সুরা নিসা আয়াত ১২৮ (৪:১২৮) পড়ে অয়েশা বর্ণনা করেছেন: এতে সেই স্ত্রীর কথা বলা হচ্ছে যার স্বামী তাকে রাখতে চায় না, তাকে তালাক দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। সে বলে – অন্য মেয়েকে বিয়ে করো, কিন্তু আমাকে তালাক দিয়ো না, আমার ওপরে খরচও করতে হবে না, আমার সাথে শুতেও হবে না।
তার মানে কি দাঁড়াচ্ছে? যে স্ত্রীদের অকারণে তালাক দেয়া হবে তারা যদি এইরকম কাকুতি মিনতি করে দয়া ভিক্ষা করে তাহলে স্বামী পুরুষটির মন গললে আল্লার কোন সমস্যা নাই। তবে পুরুষটিও তো নিরুপায়। তার তো ৪টির বেশি স্ত্রী একসঙ্গে রাখার কোন অনুমতি নেই। কাজেই তার পক্ষেও সবাইকে খুশি রাখার কোন উপায়ও নেই।
ইসলাম নারী জাতিকে দিয়েছে বিবাহিত জীবনের নিরাপত্তা। খুব সুন্দর একটি বহুল প্রচারিত বিজ্ঞাপন। কিন্তু ইসলামের বিধান যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তো দেখবেন সেখানে স্পষ্ট করে লেখা আছে, একজন মুমিন বান্দা একসঙ্গে ৪টি স্ত্রী রাখতে পারবে, বলেনি কিন্তু যে সারা জীবনের জন্য তাদের ৪টি কোটাই রাখা হয়েছে।
এর অর্থ হলো যখনই কোন স্ত্রীকে তালাক দেয়া হবে সেই কোটা পূরন করতে পারবে একজন মুমিন বান্দা। এরকম নিয়মের প্যাঁচ গলে হযরত মুহাম্মদের নাতি হাসানের বিভিন্ন সূত্র মতে ৭০ টির উপরে স্ত্রী গ্রহণ করেছিলেন! সৌভাগ্যের কথা সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে এরকম অসভ্যতা প্রচলিত নেই।
তারা বহু বিবাহকে নিন্দার চোখেই দেখে। এ জন্য নবীর একাধিক বিয়েকে তারা জাস্টিফাই করে বলে “ইসলাম প্রচারের স্বার্থে” নবী একাধিক বিয়ে করেছিলন। এর মানে হচ্ছে বহু বিবাহকে খোদ মুসলিমরাই ভাল চোখে দেখে না।
কুরআনে নবী হযরত মোহাম্মদের ১১ মতান্তরে ১৩ জন স্ত্রী থাকার পর তার কোটা বন্ধ করে দিয়ে তার অনুসারীদের ৪টি পর্যন্ত স্ত্রী একত্রে রাখার বিধান জারি রাখলেও মুহাম্মদের প্রধান সাহাবীরা তা নিজেরাই মানেননি!
হযরত ওমরের ছিল ১০ জন স্ত্রী! উম্মে কুলসুমকে তিনি ৪ বছরের শিশু অবস্থায় বিয়ে করেছিলেন। যেমনটা হযরত মুহাম্মদ করেছিল আয়েশাকে ৫ বছর বয়েসে। হযরত ওসমানের ছিল ৮ জন স্ত্রী। আলীর ছিল ৮ জন স্ত্রী।
আলী নবীর কন্যা ও তার নাতনি উমামাকেও বিয়ে করেছিলেন! ফাতিমা আবার আলীর সম্পর্কে ভাতিজি ছিলেন! একমাত্র আবু বকরের ৪ জন স্ত্রী ছিল। আর অগুণিত দাসীবাদীদের কথা বাদই দিলাম…।
আজকাল “হিজাব আমার অধিকার” বলে মেয়েদের মধ্যে যে ক্রেজ দেখছি তা দেখে কথাগুলো মনে পড়ে গেলো। সত্যিই ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বচ্চ সম্মান! …