আকবর দ্যা গ্রেট (প্রকৃত ইতিহাস) : [অষ্টম পর্ব] (শেয়ার অবশ্যই করবেন)

আকবর দ্যা গ্রেট (প্রকৃত ইতিহাস) : [অষ্টম পর্ব]
(শেয়ার অবশ্যই করবেন)
আকবরের ন্যায়পরায়ণতার বোধঃ
পূর্বের পর…
…ঐতিহাসিক কর্নেল তোড বর্ণণা দেন, কিভাবে আকবর হলদিঘাটের যুদ্ধের পর নিজ পায়ে শিব লিঙ্গের প্রতিমা ভেঙ্গে সেখানে জায়নামাজ পেতে দেন সৈন্যবাহিনীকে নামায পড়ার জন্য।…ধর্মীয় সহিষ্ণুতার কি অপূর্ব নিদর্শন রেখেছিলেম তিনি সেদিন !!!
…আকবরের বদরাগী মেজাজ বর্ণনা করতে গিয়ে আবুল ফজল বলেছেন, একবার আকবর দুপুরের একটু আগে ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার বিছানার কাছে এক ভৃত্য ঘুমোচ্ছে।…এতে তিনি ক্রোধে ফেটে পড়েন এবং তাকে মিনারের চূড়া থেকে ছুঁড়ে নিচে ফেলে দেন।
…১৬০০ সালে আগস্টে আকবর সেনারা পৃথিবীর দুর্ভেদ্য দুর্গগুলির একটি আসিরগাহ দুর্গ ঘিরে ফেলে কিন্তু উভয় পক্ষ একটা সমঝোতায় আসেন।…ভিনসেন্ট স্মিথের ভাষ্যানুযায়ী এই দুর্গটিকে ভেঙ্গে ফেলার এক অভিনব ফন্দি তিনি এঁটে রেখেছিলেন।…তিনি মিরান বাহাদুরকে আমন্ত্রণ জানান এই বলে যে, – শাহেনশাহ্‌ তার সাথে সমঝোতা করতে চান এবং তিনি তার মাথার দিব্যি দিয়ে বলেন যে তাকে নিরাপদে ফিরতে দেয়া হবে।
…সেই কারনে মিরান বাহাদুর শান্তির প্রতীক হিসেবে একটি সাদা কাপড় উঁচিয়ে বের হয়ে আসেন এবং আত্মসমর্পন করেন।…মিরান তিনবার আকবরকে কুর্নিশ করেন এবং আকবর হঠাৎ তাকে জোর করে ঠেলে মাটীতে শুইয়ে দেন সিজদা অথবা কুর্নিশ পূর্ন করার জন্য।…তারপর মাথায় পা তুলে দেন তিনি।…সমস্ত পৃথিবীর মানুষ আকবরের সামনে মাথা ঝুঁকাবে, এটাতেই আকবর অভ্যস্ত ছিল।
…তার পরে তাকে কথার খেলাপ করে গ্রেফতার করেন আকবর এবং মিরান বাহাদুরকে চাপ প্রয়োগ করেন তার সেনাপতিকে হুকুম দিতে সবাইকে আত্মসমর্পন করার জন্য।…কিন্তু সেনাপতি মালিক অম্বর এই হুকুম মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তার পুত্রকে পাঠান আকবরের সাথে আলোচনা করার জন্য, জানতে চান কেন আকবর তার কথা দিয়ে কথা রাখলেন না।
…আকবর সেনাপতির যুবক পুত্রকে জিজ্ঞেস করলেন তোমার পিতা স্বেচ্ছায় আত্মসম্পর্ন করবে কি করবে না ???…জবাবে সেই তরুণ বলেন তার পিতা কখনোই আত্ম সমর্পন করবে না এমনকি আপনি আমাদের রাজাকে মেরে ফেললেও না, তাদের রাজার আসনে নতুন রাজাকে বসানোর অন্য উত্তরাধিকারী আছে।
…এই কথা শোনা মাত্রই আকবর তাকে ISIS জিহাদি কসাইদের মত তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে ঐ তরুণকে হত্যা করেন।…পরিশেষে এমনই আরও অনেক ছল চাতুরী আর মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ধোঁকাবাজি করে সেই দূর্গ দখল করতে সমর্থ হয়।
[…বিঃদ্রঃ এই সকল ঘটনা গুলি ঘটেছিল তার মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে কারন অনেকে আবার মনগড়া গল্প ফেঁদে বলে উঠতে পারে যে পরে আকবরের মন মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।]
…একই ভাবে ক্ষমতা ও আধিপত্যের লালসায়, তিনি বুন্দেলখন্ডের (গণ্ডোয়ানা) মহীয়সী রানি দূর্গাবতী সাথেও যুদ্ধ করেন এবং তার মানুষদের হত্যা করেছিলেন।…রানী দুর্গাবতী তিন তিন বার মুঘলদের হারিয়ে দেন।…কিন্তু আকবর একদিন রাতের বেলায় রানীর সেনাকে আক্রমণ করেন।…রাতের বেলায় ভারতীয়রা যুদ্ধ করত না।…অতর্কিতে আক্রমণ করলেও রানী একটি হাতির পিঠে যুদ্ধক্ষেত্রে আসেন।…আকবর ৩০০ তীরন্দাজ রেখেছিলেন শুধু রানীকে মারার জন্যে, ২৪ শে জুন ১৫৬৪ ভোররাতে নির্দয় ভাবে তীরে তীরে বিদ্ধ করে মারা হয় দুর্গাবতীকে।…এরপর ৩৪০০০ গোণ্ড জনজাতির মানুষকে এক রাতে জবাই করা হয় মহান আকবরের নির্দেশে।

(চলবে)

( – Writankar Das – )