পয়েন্ট টু পয়েন্ট
Developed by-
Uttam Kumar Das
(The extreme hindu fighter)
মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব
ফটো হিসেবে এই পোস্টের সাথে যেটা যুক্ত করেছি, তার জবাব দেওয়া ই আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য। তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক:
ফটোপোস্টের শুরুতেই লিখা হয়েছে,
“সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই, কোন প্রতিমূর্তি নেই, কোন প্রতিকৃতি নেই, কোন রূপক নেই, কোন ফটোগ্রাফ নেই, তাঁর কোন ভাস্কর্য নেই।”
এর রেফারেন্স হিসেবে লিখা হয়েছে,
“শ্বেতাসত্র উপনিষদ, অধ্যায় ৪, পরিচ্ছেদ ১৯ এবং যযুর্বেদ অধ্যায় ৩২, অনুচ্ছেদ ১৯।”
এবার দেখা যাক, সত্যিই সেখানে কী লিখা আছে এবং তার প্রকৃত অনুবাদটা কী ?
রেফারেন্স হিসেবে প্রথম বইয়ের নাম লিখা হয়েছে, “শ্বেতাসত্র উপনিষদ”, কিন্তু এর নাম প্রকৃতপক্ষে “শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ”, লিখেছে তো কোনো এক মুসলমান, তার কাছ থেকে আপনি আর কত শুদ্ধ বানান আশা করতে পারেন ? রেফারেন্সের বাকি অংশে লিখা হয়েছে- “অধ্যায় ৪, পরিচ্ছেদ ১৯”, অধ্যায় ৪ ঠিক থাকলেও এই উপনিষদে অনুচ্ছেদ বলে কিছু হয় না, এটি হবে আসলে শ্লোক নং ১৯। শুধু এই রেফারেন্সেই নয়, প্রতিটি রেফারেন্সেই দেখবেন কিছু না কিছু উল্টা পাল্টা আছেই। যে মুসলমানরা একটা রেফারেন্স ঠিক মতো দিতে পারে না, সেই মুসলমানরা যে এই সব সংস্কৃত শ্লোকের অর্থ ঠিক মতো বুঝতে পারবে বা দিতে পারবে, আপনি সেই আশা করছেন কিভাবে ? যা হোক, এই রেফারেন্সে গিয়ে পাওয়া গেলো, মুসলমানদের সেই বিখ্যাত ব্রহ্মাস্ত্র নয় আল্লাস্ত্র,
“ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদযশ”,
এর অর্থ হিসেবে তারা যা লিখেছে তা তো উপরেই উল্লেখ করেছি এবং ফটোপোস্টেও দেখতে পাচ্ছেন; এবার দেখা যাক, এই একই বিষয়ের দ্বিতীয় রেফারেন্স এর কী অবস্থা ?
দ্বিতীয় রেফারেন্স হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, “যযুর্বেদ অধ্যায় ৩২, অনুচ্ছেদ ১৯।”
এখানে ‘যযুর্বেদ’ বানানটাও ভুল, এটা হবে ‘যজুর্বেদ’, এছাড়া মুসলমানরা হয়তো জানেই না যে, ‘যজুর্বেদ’ একটা নয়, দুইটা- ‘শুক্লযজুর্বেদ’ ও ‘কৃষ্ণযজুর্বেদ’, তাই এই রেফারেন্সটা কোন ‘যজুর্বেদ’ থেকে নেওয়া হয়েছে, সেটা তারা উল্লেখ করতে পারে নি। আর পারবেই বা কিভাবে, তারা কি বেদ ঘেঁটে এসব লিখেছে ? তারা তো এসব লিখেছে জাকির নায়িকার কোনো বক্তব্য শুনে বা বক্তব্যের বই দেখে, তাই জাকির যা বলেছে, তারা তাই লিখে দিয়েছে, ফলে যা হবার তাই হয়েছে, ভুলে ভরা কোরানের মতো হয়েছে ভুলে ভরা রেফারেন্স।
যা হোক, এই রেফারেন্সটা কোন ‘যজুর্বেদ’ থেকে নেওয়া হয়েছে, সেটা মুসলমানরা বলতে না পারলেও আমি বলছি, এটা নেওয়া হয়েছে, “শুক্লযজুর্বেদ” এর ৩২ নং অধ্যায়ের ৩ নং অনুচ্ছেদ থেকে নয়, ৩ নং মন্ত্র থেকে । কারণ, শুক্লযজুর্বেদ এর অধ্যায় এর পর অনুচ্ছদে হয় না, হয় মন্ত্র।
যা হোক, এই মন্ত্রের অর্থ মুসলমানরা কী করেছে, সেটা তো জানেন; কিন্তু এই মন্ত্রের অর্থ হিসেবে- কোলকতার হরফ প্রকাশনী, যার মালিক একজন মুসলমান, তার প্রকাশিত বেদ এ, এর অনুবাদ দেওয়া আছে,
“এ পুরুষের তুলনা দেবার কোনো বস্তু নেই। তার মহৎ যশ আছে।”
যেহেতু এই শ্লোকের মধ্যে প্রতিমা ব’লে একটা শব্দ আছে, সেহেতু মুসলমানরা এর অনুবাদ করে, “ঈশ্বরের কোনো প্রতিমা নেই”, তাহলেও এতে কোনো ভুল নেই; কারণ, হিন্দুরা যাকে ঈশ্বর বলে মনে করে সেই পরমব্রহ্ম বা ব্রহ্মের তো কোনো প্রতিমা নেই ই। ব্রহ্মের তিনটা রূপ- ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের মূর্তি আছে, আছে আরো অন্য দেব-দেবীর, কিন্তু ব্রহ্মের কি কোনো মূর্তি আছে ? ব্রহ্মের তো কোনো মূর্তি বা প্রতিমা নেই। তাহলে তো তা ঠিকই আছে, বেদ এর নির্দেশকে মেনে হিন্দুরা ব্রহ্ম বা ঈশ্বরের কোনো মূর্তি তৈরি করে নি।
কিন্তু এর বিপরীতে ইসলামের অবস্থা কী, সেটা এবার দেখা যাক :
মুসলমানরা জোর গলায় বলে যে, আল্লা নিরাকার। কিন্তু আল্লা যে নিরাকার নয়, তার বহু প্রমান কোরান হাদিসে আছে, কয়েকটির উদারহণ দিচ্ছি-
কোরানের ৬৯/১৩-১৮ আয়াতে বলা আছে,
“পরে যখন শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। তখন ভূতল ও পর্বতরাশিকে উপরে তুলে একই আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেওয়া হবে।…সেই দিন আকাশ দীর্ণ বিদীর্ণ হবে এবং তার বাঁধন শিথিল হয়ে পড়বে। ফেরেশতাগণ তার আশ পাশে উপস্থিত থাকবে। আর আটজন ফেরেশতা সেই দিন তোমার রবের আরশ নিজেদের উপর বহন করতে থাকবে।”
এই সূরা অনুযায়ী, এটা বোঝা যায় যে, কেয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত আল্লা সপ্তম আসমানের উপর স্থাপিত একটি সিংহাসন, যার ইসলামিক নাম আরশ, তাতে বসে থেকে পৃথিবীসংশ্লিষ্ট সবকিছুর পরিচালনা করে। আবার শব-ই-বরাতের রাতে আল্লা নাকি সেই সপ্তম আসমান থেকে নেমে প্রথম আসমানে আসে এবং হকারের মতো নাকি চিৎকার করে বলতে থাকে যে, “কে আছো ক্ষমা প্রা্র্থনাকারী, আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেবো, ইত্যাদি ইত্যাদি”। এটা শব-ই-বরাতের রাতের মহিমা বোঝানোর জন্য মুসলমানদের বহুল প্রচারণা থেকেই শোনা, তাই এটার আর রেফারেন্স দিলাম না। ঘটনা যদি তাই হয়, তাহলে আল্লা শুধু শব-ই-বরাতের রাত বাদ দিয়ে সারা বছর সপ্তম আসমানে একটি আরশের উপর বসে থাকে, যে সপ্তম আসমান কেয়ামতের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে আল্লা সমেত, আল্লার সেই আরশ, ৮ জন ফেরেশতা বহন করবে বলে কোরানের ৬৯/১৩-১৮ আয়াতে বলা আছে। এই প্রেক্ষাপটে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে আল্লা, আরশ নামের কোনো সিংহাসনে বসে থাকে, সে নিরাকার হয় কিভাবে ?
শুধু এখানেই শেষ নয়, মুসলিম হাদিসের ৪০/৬৮০৯ ও ৩২/৬২৩৫ এবং বুখারির ৪/৫/৫৪৩ নং হাদিসে বলা হয়েছে যে, আল্লা ৬০ হাত বা ৯০ ফুট লম্বা।
নিরাকার আল্লা ৬০ হাত বা ৯০ ফুট লম্বা হয় কিভাবে ?
আল্লা যে ৬০ হাত বা ৯০ ফুট লম্বা, এই কাহিনীর উৎস হলো, হাদিসে বলা আছে, প্রথম মানব আদম ছিলেন ৬০ হাত বা ৯০ ফুট লম্বা, আর আল্লা, নিজের আদলে মানব আদমকে সৃষ্টি করেছেন (সহীহ মুসলিম, ২৮৭২), সেই হিসেবে আল্লা ৬০ হাত বা ৯০ ফুট লম্বা।
আল্লা যদি নিরাকার ই হয়, তাহলে ইসলামে আল্লার এই রূপের স্বীকৃতি কেনো ?
বেদ এ ঈশ্বরের কোনো রূপের বর্ণনা দেওয়া নেই এবং যেহেতু বলা আছে, যে ঈশ্বরের কোনো রূপ বা প্রতিমা নেই, সেহেতু হিন্দুরা ঈশ্বর বা ব্রহ্মের কোনো প্রতিমা নির্মান করে নি। অন্য দেব-দেবতার যেহেতু আকার আকৃতির বর্ণনা দেওয়া আছে, সেহেতু হিন্দুরা তাদের রূপ অনুযায়ী তাদের মূর্তি নির্মান করেছে, এটা হিন্দুরা পারে বলেই করেছে, কিন্তু মুসলমানরা যেহেতু শিল্পসংস্কৃতি বর্জিত একটি বর্বর জাতি এবং এজন্য যেহেতু তাদের কোনো কিছু নির্মান বা গড়ার কল্পনা শক্তি নেই, সেহেতু তারা কোরান হাদিসে আল্লার স্পষ্ট রূপের বর্ণনা থাকা সত্ত্বেও প্রচার করে যে, আল্লা নিরাকার, যাতে তাদেরকে আল্লার মূর্তি বানানোর মতো কষ্ট স্বীকার না করতে হয়।
মুসলমানদের বলছি, হিন্দুরা একটি সৃষ্টিশীল জাতি, যদি তোরা বলিস, কোরান হাদিসের বর্ণনা মতো, তোদেরকে একেবারে বিনা পয়সায় আল্লার মূর্তি তৈরি করে দেবো, তাকে মসজিদের ভেতর স্থাপন করে তার উদ্দেশ্যে প্রা্র্থনা করিস; কেননা, এটা অনেক মুসলমানেরই উপলব্ধি যে, হিন্দুদের তো সামনে মূর্তি থাকে, যার সামনে বসে তারা পূজা প্রার্থনা করে, আমাদের সামনে কী থাকে, কার উদ্দেশ্যে আমরা প্রার্থনা করি ? এর মানে হলো- কোনো কিছুর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করার জন্য হিন্দুদের সামনে কিছু থাকে, মুসলমানদের সামনে তো সেটাও থাকে না।
এরপর ফটোতে বলা হয়েছে, “যেসব লোক যাদের বিচারবুদ্ধি কেড়ে নিয়েছে জাগতিক আকাঙ্ক্ষা, তারাই মূর্তি পূজা করে।” রেফারেন্স হিসেবে বলা হয়েছে “ভগবদগীতা, অধ্যায় ৭, অনুচ্ছেদ ২০”।
যদিও রেফারেন্স হিসেবে লিখা হয়েছে, “অধ্যায় ৭, অনুচ্ছেদ ২০ ” কিন্তু এটা হবে আসলে অধ্যায় ৭, অনুচ্ছেদ ২০ এর পরিবর্তে শ্লোক নং ২০। কারণ, গীতাকে বিন্যস্ত করা হয়েছে অধ্যায় এবং শ্লোকে, এর মধ্যে অনুচ্ছেদ বলে কিছু নেই।
যা হোক, এই শ্লোকের অর্থ হিসেবে ইসকন প্রকাশিত গীতায় বলা হয়েছে,
“জড় কামনা বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয় এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।”
এই শ্লোকের দ্বারা গীতায় মূ্র্তি পূজাকে যে নিষিদ্ধ করা হয় নি, নিরুৎসাহিত করা হয়েছে মাত্র, সেটা একটু পরেই বুঝতে পারবেন। তার আগে এই শ্লোকের আসল অর্থটা আপনাদের কাছে একটু পরিষ্কার করি।
এই শ্লোকে বলা হচ্ছে, “জড় কামনা বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয়”- এখানে জ্ঞান মানে ক্ষমতা, যে ক্ষমতার দ্বারা কাউকে উপলব্ধি করা যায়, কারো কাছে পৌঁছানো যায়। এখন আপনি কল্পনা করুন, আপনি গ্রামের একজন সাধারণ মানুষ, আপনার পক্ষে কি কোনোভাবে, একাকি, সরাসরি, দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছানো সম্ভব ? সম্ভব নয়। যদি তার সাথে দেখা করার বিশেষ কোনো কারন আপনার কাছে থাকে এবং সেজন্য আপনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমে আপনার গ্রামের বা ইউনিয়নের সরকারীদলের কোনো পাতিনেতার দ্বারস্থ হতে হবে, সেই পাতিনেতা আপনাকে নিয়ে যাবে থানার নেতার কাছে, থানার নেতা নিয়ে যাবে জেলার নেতার কাছে, জেলার নেতা নিয়ে যাবে কোনো মন্ত্রীর কাছে, সেই মন্ত্রী নিয়ে যাবে কোনো প্রভাবশালী মন্ত্রীর কাছে, এবং তার পর প্রধানমন্ত্রী চাইলে তার সাথে আপনার দেখা হতে পারে।
হিন্দু ধর্মের ঈশ্বর হলো, এই প্রধানমন্ত্রীর মতো, যার ভক্ত হওয়া সহজ, যার গুণগান করা সহজ, কিন্তু যার কাছে পৌঁছানো সহজ নয়, তার কাছে পৌঁছতে হলে আপনাকে জ্ঞানে বিশেষ ক্ষমতাবান হতে হবে, এককথায় ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করতে হবে। কিন্তু সকলের পক্ষে কি সেই ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করা সম্ভব ? সম্ভব নয়। তাহলে এই ব্রহ্মজ্ঞান অর্জনের পথ বা ঈশ্বরকে পাওয়ার পথটা কী ? এই পথই হলো নিজের জ্ঞান ও বুদ্ধি অনুসারে বিভিন্ন দেব-দেবীর কাছে নিজেকে নিবেদন করে তার পূজা করা, যার স্বীকৃতি পরমেশ্বর দিয়ে রেখেছেন, গীতার ৭/২১ নং শ্লোকে,
“যো যো যাং যাং তনুং ভক্ত শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি।
তস্য তস্যাচলং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহম।।”
এর অর্থ, পরমাত্মারূপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখন কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে, তখনই আমি সেই সেই ভক্তের, তাতেই অচলা শ্রদ্ধা বিধান করি।
স্বল্পজ্ঞানীদের পক্ষে করা এই মূর্তি পূজা যে বৃথা নয় এবং এই মূর্তি পূজার ফল যে, স্বয়ং ঈশ্বরই তার ভক্তকে প্রদান করে, সে কথা বলা আছে গীতার ৭/২২ নং শ্লোকে,
“স তয়া শ্রদ্ধয়া যুক্তস্তস্যারাধনমীহতে।
লভতে চ ততঃ কামান্ময়ৈব বিহিতান্ হিতান্।”
এর অর্থ, সেই পুরুষ শ্রদ্ধাযুক্ত হয়ে যেই দেব বিগ্রহের পূজায় তৎপর হন এবং সেই দেবতার মাধ্যমে আমারই দ্বারা বিহিত কাম্য বস্তু অবশ্য লাভ করেন।
এখানে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, যে ব্যক্তি যে দেবতার পূজাই করুক, সে আমার দ্বারাই তার ফল লাভ করে। এখানেও দেবতাদের পূজাকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
কিন্তু এই দেব পূজার ফল যে অস্থায়ী, সে কথা বলা হয়েছে গীতার ৭/২৩ নং শ্লোকে এবং এই ৭/২০-২৩ নং শ্লোকের মাধ্যমে এই কথাও বলে দেওয়া হয়েছে যে, না জানা বা অল্পবুদ্ধির কারণে অন্য দেব-দেবীর পূজাকে স্বীকার করে নেওয়া হলেও চরম লক্ষ্য বা মোক্ষপ্রা্প্তির জন্য একমাত্র ঈশ্বরকেই ভজনা বা তার কাছে প্রার্থনা করতে হবে, কিন্তু যাদের কাছে সেই ব্রহ্মজ্ঞান নেই বা যাদের এখনও সেই জ্ঞান অর্জন হয় নি, প্রধানমন্ত্রী রূপ ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানোর জন্য নেতা বা পাতিনেতা রূপ দেব-দেবীর আশ্রয় তাদেরকে নিতেই হবে। কারণ, পৃথিবীর সকল মানুষ যেমন সমান জ্ঞান ও ক্ষমতা নিয়ে জন্ম নেয় না, তেমনি এক জন্মে সকল মানুষের পক্ষেও ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। জন্ম জন্মান্তর ধরে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করতে করতে কোনো এক জন্মে হয়তো ব্রহ্মজ্ঞান অর্জিত হবে এবং সেই জ্ঞান দ্বারা পরমেশ্বরের কাছে পৌঁছানো যাবে, যেমন নদী এঁকে বেঁকে বিভিন্ন পথ ধরে কোনো না কোনো এক সময় সমুদ্রে পৌঁছেই যায়।
এরপর মুসলমানরা লিখেছে, “সত্য একটাই। ঈশ্বর একজনই।”
রেফারেন্স হিসেবে লিখেছে- “ঋগবেদ, গ্রন্থ ১, পরিচ্ছদ ১৬৪, অনুচ্ছেদ ৪৬”;
এখানে ‘ঋগবেদ’ বানানটাও ভুল, হবে ‘ঋগ্বেদ’। ভুল বানানের পর এবার রেফারেন্সের বিন্যাস টা দেখুন, ঋগ্বেদে গ্রন্থ ১ বলে কিছু হয় না; কারণ, পুরো ঋগ্বেদ ই একটা গ্রন্থ; সেখানে লিখা হয়েছে, “ঋগবেদ, গ্রন্থ ১, পরিচ্ছদ ১৬৪, অনুচ্ছেদ ৪৬”, যার পুরো বিন্যাসটাই ভুল; ঋগ্বেদের বিন্যাস হয় এভাবে- মণ্ডল>সূক্ত>ঋক বা শ্লোক; এখানে পরিচ্ছদ বা অনুচ্ছেদ বলে কিছু নেই। যা হোক, যে রেফারেন্স তারা দিয়েছে, কষ্ট করে সেখানে পৌঁছে অর্থাৎ ঋগ্বেদের- ১ম মণ্ডলের ১৬৪ নং সূক্তের ৪৬ নং ঋক বা মন্ত্র যেটি পাওয়া গেলো, যার উপর মুসলমানরা ফোকাস করেছে, তা হলো-
“একং সদ্বিপ্রা বহুধা”
হরফ প্রকাশনীর বেদ এ এর অর্থ লিখা আছে, “তিনি এক হলেও বহু।” কিন্তু মুসলমানরা এই শ্লোকের আংশিক অর্থের সাথে কিছু মিথ্যে মিশিয়ে প্রকাশ করে বলেছে,
“সত্য একটাই। ঈশ্বর একজনই।”
সত্য তো একটাই। যেমন মানুষের ধর্ম হলো সনাতন মানব ধর্ম। আর যে সব ব্যক্তিগত মতবাদ ধর্মের নামে চলছে, সে সবই তো মিথ্যা। এখানে তারা আরো বলেছে, “ঈশ্বর একজনই”, ঈশ্বর তো একজনই, হিন্দুরা আবার কবে বললো যে, ঈশ্বর একাধিক ?
সেমিটিক ধর্মগুলো অর্থাৎ ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলামে একত্ববাদের ধারণা এসেছে যার মাধ্যমে সেই ইব্রাহিমের জন্ম খ্রিষ্টপূর্ব ২৩২০ সালে অর্থাৎ বর্তমান থেকে প্রায় ৪৩০০ বছর আগে, কিন্তু হিন্দু ধর্মে একত্ববাদের কথা বলা হয়েছে আজ থেকে প্রায় ৮/১০ হাজার বছর আগে ঋগ্বেদের এই শ্লোকের মাধ্যমে-
“একমেবাদ্বিতীয়ম”
এর অর্থ – পরমেশ্বর এক ও অদ্বিতীয়।
এখন মুসলমানরা নিজেদের মূর্খামির জন্য এটা মনে করে যে, হিন্দুরা বহু ঈশ্বররূপে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করে, ওরা যদি এটা মনে করে তাহলে আমাদের কী করার আছে ? হিন্দুরা ঈশ্বর হিসেবে একজনকেই মানে আর সেই ঈশ্বরেরই বিভিন্ন রূপ হিসেবে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করে। যেমন প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছামতোই দেশ পরিচালিত হলেও- মন্ত্রীপরিষদ, সচিবালয়সহ ইউনিয়ন বা পঞ্চায়েত পর্যন্ত পর্যায়ের প্রশাসন ছাড়া তার একার পক্ষে যেমন দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়; তেমনি, ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই সব কিছু পরিচালিত হলেও এই পরিচালনার পেছনে মন্ত্রী বা সচিব রূপ দেব-দেবীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। যেমন ইসলামের আল্লাও তার নিয়োজিত বিভিন্ন ফেরেশতার মাধ্যমে তার কাজ পরিচালনা করে থাকে, কিন্তু মুসলমানরা সেই সব ফেরেশতাকে তেমন মূল্যায়ন করে না বা সম্মান দেয় না, তারা শুধু এক আল্লার এবাদত করে, যেটা সম্পূর্ণ অবাস্তব; যেমন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে হবে, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে লাভ নেই; এজন্যই হিন্দুরা- শিক্ষা, ধন- এরকম এক এক সেক্টরের উন্নতির জন্য এক এক দেব-দেবীর মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে, ইসলামে এই ব্যবস্থা নেই বলেই ইসলাম সমম্পূর্ণ অবাস্তব।
এবারে যে তথ্যটা দেবো, তাতে পাবেন ভীষণ মজা; কারণ, মুসলমানরা যেমন মাছের গায়ে, মাংসের টুকরায় গাছপালা বা লতা পাতায় আল্লা লেখা দেখতে পায়, এর পাল্টা হিসেবে নাস্তিকরা কাফেরা যেমন আল্লা লেখা দেখতে পায় মেয়েদের নগ্ন ব্রেস্ট বা পাছায়, তেমনি মুসলমানরা বিভিন্ন সংস্কৃত শব্দের মধ্যেও লুক্কায়িত আল্লাকে দেখতে পায়, যেটা একটু পরেই আপনারা বুঝতে পারেন; কেননা, ফটো পোস্টে দাবী করা হয়েছে যে, “ঋগবেদ-এ ‘ঈশ্বর’ এর অন্য নাম ‘আল্লাহ’ দেওয়া আছে”, আর এর রেফারেন্স হিসেবে দেওয়া আছে, “ঋগবেদ, গ্রন্থ ২ পরিচ্ছেদ ১, অনুচ্ছেদ ১১; ঋগবেদ, গ্রন্থ ৩ পরিচ্ছেদ ৩০, অনুচ্ছেদ ১০; ঋগবেদ, গ্রন্থ ৯ পরিচ্ছেদ ৬৭, অনুচ্ছেদ ৩০”।
রেফারেন্সের- গ্রন্থ, পরিচ্ছেদ ও অনুচ্ছেদ- নিয়ে তো আগেই কথা বলেছি, কোরানের মতো তাই একই কথার আর পুনরাবৃত্তি করতে চাই না; দেখা যাক সেই রেফারেন্সগুলোতে আসলে কী বলা হয়েছে ?
প্রথম রেফারেন্স, ‘২য় মণ্ডলের সূক্ত ১ এর ১১ নং ঋক বা শ্লোক’ এখানে মুসলমানরা
“ত্বমিলা শতহিমাসি দক্ষসে……”
এই শ্লোকের ‘ত্বমিলা’ শব্দের মধ্যে আল্লাকে খুঁজে পেয়েছে, কেননা, ‘ত্বমিলা’ শব্দের শেষ ধ্বনিটি ‘লা’ বা এর মধ্যে ‘ইলা’ ধ্বনিটি রয়েছে! এই লা বা ইলা ই মুসলমানদের কাছে আল্লা এবং এর উপর ভিত্তি করেই মুসলমানরা বলেছে, “ঋগবেদ-এ ‘ঈশ্বর’ এর অন্য নাম ‘আল্লাহ’ দেওয়া আছে”, মুসলমানরা এই লা বা ইলাকে আল্লা ধরে নিতে পারে, কিন্তু হিন্দুরা এই লা বা ইলাকে ঈশ্বর মনে করে না; হিন্দু শাস্ত্রে ইলা, হিন্দু শাস্ত্র মতে মানব জাতির আদি পুরুষ মনুর মেয়ে হিসেবে পরিচিত।
এবার দেখা যাক দ্বিতীয় রেফারেন্সে মুসলমানরা কোন শব্দের মধ্যে আল্লাকে খুঁজে পেয়েছে ?
২য় রেফারেন্সটি হলো- “৩য় মণ্ডলের ৩০ নং সূক্তের ঋক নং ১০”। এখানে ২ চরণ বিশিষ্ট শ্লোকের প্রথম লাইনে বলা আছে,
“অলাতৃণো বল ইন্দ্র ব্রজো গোঃ পুরা হন্তোর্ভয়মানো ব্যার”
এর অর্থ যা ই হোক, মুসলমানদের টার্গেট এই লাইনের প্রথম শব্দ ‘অলাতৃণো’ এর উপর; আল্লা শব্দের সাথে যেহেতু এর সামান্য পরিমান ধ্বনিগত মিল আছে, সেহেতু মুসলমানরা ধরে নিয়েছে এখানে ঈশ্বরের অন্য নাম হিসেবে আল্লা দেওয়া আছে! এখানে ‘অলাতৃণো’ শব্দের অর্থ ‘বিশ্লিষ্ট হওয়া’ এবং পুরো লাইনটির অর্থ- “হে ইন্দ্র, বল নামক গোব্রজ, বজ্র প্রহারের পূর্বেই ভীত হয়ে বিশ্লিষ্ট হয়েছিলো”। এই অলাতৃণো শব্দের মধ্যে মুসলমানরা আল্লা শব্দের প্রতিশব্দ খুঁজে পেলেও, এই শব্দটি আসলে ঘাস-পাতা বা খড়-কুটার মতো তুচ্ছ জিনিস বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
এবার দেখা যাক, তৃতীয় রেফারেন্স এর অবস্থা কী ?
তৃতীয় রেফারেন্সটি হলো- “মণ্ডল ৯, সূক্ত ৬৭ এবং শ্লোক ৩০”। এই শ্লোকে লিখা আছে,
“অলাযস্য পরশুর্ণনাশ তমা পবস্ব দেব সোম। আখুং চিদেব দেব সোম।।”
এর অর্থ হলো- সর্বস্থান আক্রমনকারী সেই বিপক্ষের কুঠার যাতে নষ্ট হয়ে যায়, হে দেব সোম, তুমি সেরূপে ক্ষরিত হও, তুমি সেই পীড়াদায়ক শত্রুকেই সংহার করো।
এখানে ‘অলাযস্য’ শব্দের অর্থ ‘সর্বস্থান আক্রমনকারী’ এবং মুসলমানরা এই শব্দের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছে তাদের আল্লাকে, কারণ আর কিছুই নয় ধ্বনিগত সাদৃশ্য। একদিক থেকে অবশ্য আল্লা শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে ‘অলাযস্য’ ঠিকই আছে, কারণ অলাযস্য মানে যেমন সর্বস্থান আক্রমনকারী, তেমনি আল্লাও তো বিনা কারণে, কোরানে, যেখানে সেখানে অমুসলিমদেরকে আক্রমন করার জন্য মুসলমানদেরকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছে।
এইভাবেই মুসলমানরা উপর্যুক্ত তিনটি রেফারেন্সের মাধ্যমে বেদ এর মধ্যে আল্লাকে খুঁজে পেয়েছে, প্রচেষ্টাটি মন্দ নয়, এটি সমুদ্রের বিশাল জলরাশির মধ্যে ইঁদুর খোঁজার মতো, যে ইঁদুররা কোনো দিন জল খাওয়া তো দূরে থাক, জল স্পর্শও করার চেষ্টা করে না।
হিন্দুদের মূর্তিপূজা এবং ঈশ্বর নিয়ে নানা আজেবাজে কথা বলার পর, মুসলমানরা ফটোতে তুলে দিয়েছে কোরানের দুটি আয়াত, যার প্রথমটি বলেছে,
“বল, আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।”
এখানে কে কাকে বলতে বলেছে, মুহম্মদ তার অনুসারীদের, না আল্লাহ মুহম্মদকে ?
বাক্যটা যেহেতু মুহম্মদের মুখ দিয়ে বেরিয়েছে, সেহেতু ধরে নেওয়া যায় যে, মুহম্মদ তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে এই কথা বলেছে, তাহলে প্রমান হয় কোরান আল্লার নয়, মুহম্মদের বাণী। আর এই কথাটি যদি আল্লা, মুহম্মদের উদ্দেশ্যে বলতো, তাহলে বাক্যটি হতো এমন, “বল, আমি এক ও অদ্বিতীয়” কারণ, আল্লা তো কখনো নিজেকে আল্লা বলে সম্বোধন করবে না। এইটুকু ব্যাকরণ না বুঝে মুসলমানরা কেনো বাংলা ব্যাকরণের জনক হিন্দুদের সাথে কথা বলতে আসে বা হিন্দুদের বিষয়গুলো নিয়ে চুলকায় ? বাঁশ খাওয়ার জন্য ? তো খা বাঁশ, দেখি আর কত নিতে পারিস ?
ঐ আয়াতেই আরো বলা হয়েছে, “আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নয়।”
আল্লা যদি কারো মুখাপেক্ষী না হয়, তাহলে পৃথিবীতে ইসলাম প্রচারের জন্য মুহম্মদকে তার এজেন্ট বানাতে হয় কেনো ? কেনো ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য মুসলমানদের হাতে তাকে অস্ত্র তুলে দিতে হয় (কোরান, ৮/১২) ?
আল্লা যদি কারো মুখাপেক্ষী না হয়, তাহলে তার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে কেনো (কোরান, ২/৪৫) ?
এই আয়াতে আরো বলা হয়েছে, “তিনি কাউকে জন্ম দেন নি।”
তিনি যদি কাউকে জন্ম না দিয়ে থাকেন, তাহলে তো আল্লার সেক্স করার প্রয়োজন পড়ে নি বা পড়ে না। তাহলে আল্লা গনিমতের মালের ভাগ, যার মধ্যে যুবতী মেয়েরাও থাকে, সেই গনিমতের মালের ভাগ নিয়ে আল্লা কী করে (কোরান, ৮/৪১)?
এই আয়াতে আরো বলা হয়েছে, “এবং তাকেও জন্ম দেওয়া হয় নি।”
যদি তাকে জন্মই দেওয়া না হয়, তার যদি অস্তিত্বই না থাকে, তাহলে সে সাত আসমানের উপর স্থাপিত আরশে বসে থাকে কিভাবে ( কোরান, ৬৯/১৩-১৮) ? শুধু তাই নয়, সেই আল্লার যদি মানুষের মতো জন্মই না হয়ে থাকে, তাহলে সে কিভাবে মানুষের মতো রাগে (কোরান, ২/৪০, ৪১); মানুষের মধ্যে অমানুষের মতো হিংসা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে (কোরান, ৫/১৪); নবীর জন্য দালালি করে (কোরান, ৬৬/১); ভুলে যায় (কোরান, ২/১০৬, ২/১০৬); মত বদলায় (কোরান, ৫৮/১২,১৩); মুহম্মদকে ধমক দেয় (কোরান, ১৩/৩৭); স্বৈরাচারের মতো যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেয় ও যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেয় (কোরান, ৫/১৮); অমুসলিমদেরকে হুমকি দেয় (কোরান, ১১/২৫, ২৬); সন্ত্রাস করে বেড়ায় (কোরান, ৪৪/১৬); অসহায় হয়ে পড়ে (কোরান, ৪৭/ ৭); এছাড়াও আল্লার রয়েছে বহু অমানবিক দোষ, প্রাণীর মতো আল্লার যদি জন্মই না হয়ে থাকে, তাহলে আল্লার এসব জৈবিক দোষ আসে কোথা থেকে ?
এবং এই আয়াতে আরো বলা হয়েছে, “এবং কেহই তার সমকক্ষ নয়”,
যদি কেউই তার সমকক্ষ না হয়, তাহলে তার বড় শখের সৃষ্টি যে মানুষকে শয়তান প্রতিনিয়ত বিপথে নিয়ে গিয়ে দোযখগামি করছে, তাকে আল্লা হত্যা করতে পারে না কেনো ?
এতক্ষণ কোরানের ১১২ নং সূরার পোস্টমর্টেম করলাম, এবার ফটোপোস্টের শেষ আবর্জনা, ৩/১৯ নং আয়াতে কী বলা হয়েছে, সেটা দেখা যাক। এই আয়াতে বলা হয়েছে,
“নিশ্চয় ইসলামই আল্লার একমাত্র মনোনীত ধর্ম।”
এই কথা কার মুখ দিয়ে বের হয়েছে ? মুহম্মদের। যে মুহম্মদের সারা জীবনের ধ্যান জ্ঞান ছিলো ইসলামকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করার এবং মুসলমানদের প্রতি যার নির্দেশ হলো- কেয়ামত পর্যন্ত ইসলাম প্রতিষ্ঠার এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। গাঁজাখোরদের কাছে গাঁজা তো অবশ্যই শ্রেষ্ঠ জিনিস, তেমনি মদখোরদের কাছে মদ, কিন্তু তাই বলে কি মদ ও গাঁজা সবার জন্য ভালো জিনিস ? নিশ্চয় নয়। এই পোস্টের লেখক হিসেবে আমি এই দাবী করতেই পারি যে, এটা ফেসবুক জগতের একটি শ্রেষ্ঠ পোস্ট, তাতে কি এই পোস্ট শ্রেষ্ঠ হয়ে যাবে ? নিশ্চয় নয়। যত লোক এটা পড়বে, সবাই যদি এটাকে শ্রেষ্ঠ বলে তবেই এটা শ্রেষ্ঠ হতে পারে।
পৃথিবীতে ইসলামের আগমেনর ১৪০০ বছর পার হয়ে গেছে, এখনও ৮০% লোক ইসলামকে স্বীকার করে নি বা তাকে শ্রেষ্ঠ বিধান মনে করে গ্রহণ করে নি, বরং মুসলমান হিসেবে জন্ম নেওয়া মানুষেরাই এখন স্রোতের বেগে ইসলাম ত্যাগ করছে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে মুহম্মদ যেমন গুটিকতক নিচু মন মানসিকতাসম্পন্ন মানুষের শ্রদ্ধা ভক্তি পাচ্ছে, তেমনি তার ৪ গুন মানুষের ঘৃণাও পাচ্ছে, তাহলে মুহম্মদের জীবনের স্বার্থকতা কোথায় ? শুধু তাই নয়, ইসলাম ছাড়াই পৃথিবীর ৮০% মানুষ ভালো আছে, সুখে আছে, উন্নতি করছে, ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম আল্লার কাছে মনোনীত না হলে অন্য ধর্মের মানুষেরা পৃথিবীতে টিকে আছে কিভাবে, ভালো বা সুখে আছে কিভাবে বা কিভাবে উন্নতি করছে ? শুধু তাই নয়, যারা মনে প্রাণে হান্ড্রেড পার্সেন্ট মুসলমান হয়ে ইসলাম পালন করে, দেখা যায় তারাই রয়েছে নানা দুর্দশায় বা সমস্যায়। এ থেকেই প্রমান হয়, “নিশ্চয় ইসলাম আল্লার কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম”- এটা একটা বোগাস কথা, যেমন বোগাস ইসলাম এবং তার আল্লা।
শেষে আবার বড় করে লিখেছে, “শেয়ার করুন”, শেয়ার তো করবেন অবশ্যই, তা না হলে মুসলমানদের এই ধান্ধাবাজি ও মিথ্যাচারের অন্ধকার ভেদ করে সূর্যের আলো সবার কাছে পৌঁছাবে কিভাবে ?
জয় হিন্দ।
To read the next discussion of it please go to the link– facebook.com/story.php?story_fbid=416096925404952&id=100010139433312&refid=17&_ft_=top_level_post_id.416096925404952%3Atl_objid.416096925404952%3Athid.100010139433312%3A306061129499414%3A2%3A0%3A1491029999%3A2326991921269097045&__tn__=%2As