তাই হিন্দু সংগঠনগুলোর মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতাই হিন্দুর কল্যাণের পূর্ব শর্ত।

আমার একান্ত শুভানুধ্যায়ী অধ্যাপক নির্মল কুমার মাইতি আমাদের কাজ সম্বন্ধে লিখেছেন :
“নিঃসন্দেহে প্রসংসনীয় কাজ হচ্ছে। বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনগুলির তফাৎ তো থাকবেই, কাজের ধরন বিভিন্ন বলে। কিন্তু সবগুলি প্রয়োজনীয়। তফাৎটা যেন প্রতিদ্বন্দিতায় পরিণত না হয়।”
আমার উত্তর :
নির্মলদা, আপনার কথা পুনর্বিবেচনা করুন। সুস্থ প্রতিযোগিতাই উন্নতির সব থেকে বড় উপায়। এই প্রতিযোগিতার অভাবেই আমাদের দেশের অর্থনীতি ৬০ বছর ধরে মার খেয়েছে। আজ বিশ্ব স্বীকার করে – সেটাই ছিল সমাজতন্ত্রের নামে নেহেরুভিয়ান ধাপ্পা। সমাজতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের গাল ভরা কথা বলে নতুন নতুন উদ্যোগকে সুযোগ না দিয়ে আসলে গুটিকয় শিল্পপতিকে একচেটিয়া (monopoly) ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া, আর তাদের টাকায় কংগ্রেসের দলীয় তহবিল ও নেহেরু পরিবারের তহবিল ভরা – এরই নাম ছিল নেহেরুভিয়ান সমাজতন্ত্র। তাই ওই শিল্পপতিরা protected market পেয়ে প্রোডাক্ট এর গুণমান বৃদ্ধির ও দাম কমানোর কোনো চেষ্টাই করল না। ফলে দেশের প্রযুক্তি পিছিয়ে গেল। উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গেল। লজ্জাজনক ২.৫% থেকে ৩% অর্থনৈতিক হার বৃদ্ধি গোটা বিশ্বে Hindu Rate of Growth বলে ধিক্কৃত হল, হিন্দুরা স্থবির এই ধারণা বিশ্বে বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল। ভারতকে ব্যঙ্গ করা হতে থাকল, দেশ অনুন্নয়নের গভীর অন্ধকারে ডুবে থাকল, গরীবের জীবনে অভিশাপ লেগে ছিল – এই ছিল নেহেরুবাদী সমাজতন্ত্রের ধাপ্পা, অভিশাপ। মূল কারণ, প্রতিযোগিতার অভাব। আজকের ভাষায় সিন্ডিকেট।
ভারতকে এই সমাজতন্ত্রের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন পি ভি নরসিংহ রাও। আর সেই মুক্তির রথ কে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বাজপেয়ীজী।
আপনারা জানেন কিনা জানিনা, ৭০ এর দশকে একটা বাজাজ স্কুটার কেনার জন্য নাম লিখিয়ে ৬ বছর অপেক্ষা করতে হত। একটা অ্যাম্বাসাডর গাড়ি কিনতে বম্বে থেকে কলকাতা আসতে হত। দেশের অর্থনীতিকে সমাজতন্ত্রের বদমাইসি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। গোটা পূর্ব ইউরোপে একই ঘটনা ঘটেছিল। সোভিয়েত এর পতনের পর দেখেননি, কি প্রচন্ড আক্রোশে সেখানকার জনগন মার্কস লেনিনের মূর্তি ভাঙছে, বার্লিন প্রাচীর ভাঙছে!
তাই হিন্দু সংগঠনগুলোর মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতাই হিন্দুর কল্যাণের পূর্ব শর্ত। লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড চাই। ওই ব্র্যান্ডেড হিন্দুত্ব, সিন্ডিকেটেড হিন্দুত্ব হিন্দু সমাজকে গভীর গাড্ডায় নিয়ে যাবে কিনা – ভেবে দেখুন।