আমার বান্ধবী অস্ট্রেলিয়াতে থাকে দশ বছর হলো। ওখানের নাগরিকত্ব পেয়েছে সে। তাঁর থেকেই শুনেছি, সেখানের সমাজে স্বল্প পোষাক পরেই নারীরা চলাফেরা করতে পারে। অফিস বা বিশ্ববিদ্যালয়েও মেয়েরা ইচ্ছেমতো পোষাক পরেই যেতে পারে। আশপাশের পুরুষগুলো হা করে তাকিয়ে থাকে না। রাস্তাঘাটে কোন পুরুষই অপরিচিত মেয়েদের দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে মনে মনে তার শরীর আর যৌনাঙ্গ কল্পনা করে সুখ লাভের চেষ্টা করে না। যারা ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা বা ইউরোপে গেছেন, তারা বিষয়টি অবশ্যই জেনে থাকবেন।
এমন কোন বাঙালি নারী নেই যিনি সেখানে ইভটিজিং বা শ্লীলহানির ঘটনার মুখে পরেছেন।
রাস্তাঘাটে নারীদের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য আর, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পুরুষেরা। মেয়ে দেখলেই হলো, কামভাব জেগে ওঠে। কাপড়ের ফাক ফোকরে নারীর শরীর খোঁজে। কিছু অংশ দেখা গেলেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে। মূলত এরা নারীকে মানুষই মনে করে না, মনে করে যৌনযন্ত্র। বেশিরভাগ পুরুষই নারীকে মিষ্টি বা তেতুল জাতীয় খাবারের সাথে তুলনা করে। তাদের কথা শুনলে আপনার মনে হবে, নারী শুধুমাত্র খেলার বস্তু, পুরুষের দাস মাত্র। নারীকে এরা কখনোই মানুষ মনে করে না।
নারী পোষাকের স্বাধীনতা চাইলেই, এরা মনে করে নারী বুঝি ব্রা আর প্যান্টি পরেই রাস্তাঘাটে ঘুরতে চায়। পোষাকের স্বাধীনতা মানে এই ব্রা প্যান্টি ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারে না।
ঐসব পশ্চিমা দেশগুলোতে নারীরা রাত বারোটা একটাতেও রাস্তায় একা চলাচল করতে পারে। বাসে ট্রেনে নারীপুরুষ সমানভাবেই স্বাধীনতা নিয়ে যাতায়াত করে। নারীর কোন প্রকার বিপদ বা কোন ধরনের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তারা নারীরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারে, এবং দুর্বৃত্তকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারে একা একাই।
কিন্তু যারা বলে, আমরাই দিয়েছি নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান, তাদের দেশের কোন নারীই নিজেকে নিরাপদ ও স্বাধীন কিংবা সম্মানিত মনে করে না। রাস্তায় মর্জিমত চলবার স্বাধীনতাই যার নেই, যেখানে রাস্তাঘাটে পুরুষেরা নারীদেরকে মাল আর মাগী সম্বোধন করে, তারা যে নারীকে কত কত সম্মান দেয়, সেটা জানতে চেয়ে লজ্জা দিবেন না।
সালমা জান্নাত মুন।