ধর্ম গ্রাস করেছে সামাজিক রীতিনীতিকে।

দুই বাংলা যদি একসাথে হিসাব করা হয়, তাহলে দেখা যাবে “বাঙালীদের” মধ্যে হিন্দু ৩৩% ও মুসলিম ৬৭% প্রায়। এবার সমাজ সংস্কৃতিতে বাঙালীদের অবদানের কথা স্মরণ করলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে যাঁদের নাম আসে তার একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা দিলাম।
  ● সাহিত্য : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ মুজতবা আলী, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ইত্যাদি।
● বিজ্ঞান : জগদীশ চন্দ্র বসু, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, মেঘনাদ সাহা, প্রশান্ত মহালনবীশ ইত্যাদি।
● সমাজ সংস্কারক : শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভূ, রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্বামী বিবেকানন্দ ইত্যাদি।
● ঐতিহাসিক : রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, যদুনাথ সরকার, রমেশচন্দ্র মজুমদার ইত্যাদি।
● ভাস্কর চিত্রশিল্পী : রামকিঙ্কর বেইজ, নন্দলাল বসু, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গণেশ পাইন ইত্যাদি।
● চলচ্চিত্র : সত্যজিৎ রায়, উত্তম কুমার, উৎপল দত্ত, তুলসী চক্রবর্তী ইত্যাদি।
● ক্রীড়া : গোষ্ঠ পাল, লিয়েন্ডার পেজ, সূর্যশেখর গাঙ্গুলী, সৌরভ গাঙ্গুলী ইত্যাদি।
● সঙ্গীত : রাইচাঁদ বড়াল, শচীন দেববর্মন, আব্বাসউদ্দীন আহমেদ, হেমন্ত মুখার্জী, গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার, বটুক নন্দী ইত্যাদি।

   ৩৩% কেন সর্বক্ষেত্রে অগ্রগামী? ৬৭% কেন আণুবিক্ষনিক? উত্তর দিয়ে গেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী। বলেছিলেন –
     “শিক কাবাব যাদের এত প্রিয়, শিক্ষাভাব তাদের আসবে কি করে!”
উত্তর দিয়েছেন নজরুল ইসলাম —
    বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে,
               আমরা তখনও বসে-
   বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি,
               ফিকাহ ও হাদিস চষে।

    মুজতবা আলী বলতে চেয়েছেন- শুধু চাই চাই করে গেলে হবে না। নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা করতে হবে। বাস্তবেও তাই দেখা যায়। শুধুই দাবী আর দাবী। প্রগতি দূর অস্ত। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় উপস্থিতি মুষ্টিমেয়, কিন্তু নতুন দেশের দাবী জানানোর সময় চিল চিৎকারে কান পাতা দায়। নজরুলের বক্তব্য আরো প্রাঞ্জল। ধর্ম গ্রাস করেছে সামাজিক রীতিনীতিকে।
    কোনো সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর, কোনো সাচার কমিটি, কোনো সমীক্ষা ভিত্তিক পদক্ষেপ কিচ্ছু করতে পারবে না। ইরাকে পারেনি, আফগানিস্তানে পারেনি, এখানেও পারবে না‌।

Credit – সুপ্রিয় ব্যানার্জী