অমুসলিম রাষ্ট্র’ বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। এটা মুসলমানদের ভাষাতে কেবল বিভেদের

জেরুজালেমকে ইজরাইলের রাজধানী করার আমেরিকার প্রস্তাব জাতিসংঘে ১২৮টা দেশই ভেটো দিয়েছে। এই দেশগুলোর বেশির ভাগই অমুসলিম অধ্যুষিত। তারা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করেছে সম্পূর্ণ অধর্মীয় বিবেচনায়। অপরদিকে মুসলিম দেশগুলো, ওআইসি ফিলিস্তিন সমর্থন এবং ইজরাইল বিরোধীতা সম্পূর্ণ ধর্মীয় সংকীর্ণতা থেকে। আমরা খুব ভাল করেই জানি, ঘটনা যদি উল্টোটা হতো অর্থ্যাৎ ইজরাইল কোন মুসলিম দেশ হতো তাহলে মুসলিম দেশগুলো এবং ওআইসি নির্লজ্জর মত মুসলিম জাতি পরিচয়ে তাদেরকেই সমর্থন করত।

‘মুসলিম রাষ্ট্র’ এরকম স্টুপিট কনসেপ্ট শুধুমাত্র মুসলমানরা ছাড়া দুনিয়াতে আর কাউকে এখন চিন্তা করতে দেখা যায় না। ওআইসি হচ্ছে বাকী বিশ্বকে ধর্মীয়ভাবে পৃথক করে দেয়ার সংগঠন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে জাতিসংঘ এরকম সাম্প্রদায়িক বিশ্বচিন্তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ওআইসি চলে কুরআন-হাদিস অনুসারে। হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন’ (বুখারী, মুসলিম, আলবানী মিশকাত হা/৪৯৫৮, ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/৪৭৪১)। এ কারণেই ওআইসিতে পাকিস্তানীদের ৭১ সালে বাংলাদেশের উপর চালানো গণহত্যা, ধর্ষণ নিয়ে কখনই আলোচনা হয়নি। তিরস্কার করা হয়নি তাদেরকে। তুরস্ককে আরমেনিয়া গণহত্যার জন্য জবাবদেহী করেনি। কারণ এসব করলে মুসলমনাদের দোষ স্বীকার করে নেয়া হয়।

এই বিশ্ব চলে রাজনীতি অর্থনীতির পাশা খেলায়। সাধারণ মুসলমানদের বুঝতে হবে তাদের জীবন, স্বদেশ, বসতির নিশ্চয়তা ‘মুসলিম বিশ্ব’ দেয়ার কোন ক্ষমতা রাখে না। বস্তুত ‘মুসলিম বিশ্ব’ একটি ধোঁকাবাজীর নাম। তথাকথিত মুসলিম বিশ্বের বড় ভাই আরব অঞ্চলের কোন রাষ্ট্রই মুসলমান হলেও কোন অনারবকে নাগরিত্ব দেয় না। তারা কঠিনভাবে আরব জাতীয়তাবাদী। ‘মুসলিম রাষ্ট্র’ এরকম রাষ্ট্রচিন্তা করে মুসলমানরা অমুসলমানদের প্রতি বৈষম্য করে। তাদের নাগরিক অধিকার হরন করে। অথচ এই মুসলমানরাই তথাকথিত ‘অমুসলমান রাষ্ট্রে’ রাষ্ট্রনায়ক পর্যন্ত জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারে। যখন কোন মুসলমান অমুসলিম দেশের প্রেসিডেন্ট, মেয়র হয় তখন মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় পরিচয়ে তা নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু তাদের বুঝা উচিত এই গর্ব আসলে সেক্যুলারিজমের। কারণ ঘোষিত মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এই পদগুলো অমুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ করে রাখে।

‘অমুসলিম রাষ্ট্র’ বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। এটা মুসলমানদের ভাষাতে কেবল বিভেদের বর্হিপ্রকাশ। রাষ্ট্রগুলোকে হতে হবে সেক্যুলার। জাতি ধর্ম বর্ণ পরিচয়ের উর্ধে উঠে জনগণের রাষ্ট্র হতে হবে। সাধারণ মুসলমানদের এটি গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে…।
https://www.facebook.com/susupto.pathok.page/

পৃষ্ঠা লাইক করুন-
https://www.jugantor.com/first-page/2017/12/23/181548/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%98%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%AC-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%87-%E0%A6%96%E0%A7%81%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8B%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC