বাদুরিয়া দাঙ্গা: রাজ্য সরকারের নির্লজ্জ মোল্লাতোষণ নীতির বিষময় ফলঃ

বাদুরিয়া দাঙ্গা: রাজ্য সরকারের নির্লজ্জ মোল্লাতোষণ নীতির বিষময় ফলঃ
লিখেছেনঃ Gias Uddin ( মুর্শেদ )

এক সপ্তাহের মাথায় পরিস্থিতি আজও থমথমে। সংবাদপত্র বলছে- পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বসিরহাট এখনও ‘ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি (বর্তমান, ৮ই জুলাই)। লেখাটা যখন আপনারা পড়বেন তখন আশা করা যায় যে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। কিন্তু আগ্নেয়গিরিটা যে পরে জেগে উঠে লাভাস্রোত বইয়ে দেবে না এমন কথা হলফ করে বলা যায় না। বাদুরিয়া-বসিরহাট যদি নাও জেগে ওঠে, অন্য কোথাও জেগে উঠতে পারে যেকোনও মুহূর্তে। কারণ, গোটা রাজ্যেই এ’রকম অসংখ্য ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এই আগ্নেয়গিরি প্রাকৃতিক নয় সামাজিক, তাই নিরাময়যোগ্য। কিন্তু নিরাময় করার চেষ্টা নেই, উল্টে আড়াল করার চেষ্টা চলছে প্রাণপণ। ফলে একদিকে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিগুলো আরও শক্তি সঞ্চয় করার সুযোগ পাচ্ছে, অন্যদিকে নতুন নতুন এলাকায় নতুন নতুন আগ্নেয়গিরির জন্ম হচ্ছে। গোটা রাজ্য আগ্নেয়গিরিময় হয়ে উঠছে।

কে জানত যে বাদুরিয়া ছিল একটা ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, একটি আপত্তিকর হিন্দুত্ববাদী ফেসবুক পোস্টে জেগে উঠে গলগল করে বের করতে শুরু করবে ধর্মের বিষাক্ত লাভাস্রোত? ফেসবুকে ফটোশপ করা কাবা’র একটা ছবি পোস্ট করতেই তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ৩ জুলাই ভোরবেলা কেওশা বাজারে অবরোধ শুরু হয়, তারপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঁশতলা, রামচন্দ্রপুর, তেঁতুলিয়া, গোকুলপুর প্রভৃতি অঞ্চলসহ বাদুরিয়া থানার প্রায় ৩০ কিমি জুড়ে প্রধান রাস্তাগুলি উন্মত্ত জিহাদি মুসলিম জনতা কব্জা করে নেয়। বোমা-বন্দুক ও অন্যান্য ধারাল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের নাকের ডগায় দাপিয়ে বেড়াতে থাকে। টায়ার জ্বালিয়ে সমস্ত রাস্তা অবরোধ করে ফেলে, ফলে ট্রেন-বাস এবং অন্যান্য সমস্ত পরিবহণ চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। রাস্তা অবরোধেই ক্ষান্ত থাকেনি ওরা, হিন্দুদের দোকান ও বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় ও ভাংচুর করে। বাঁশতলায় একটি শবদেহ সৎকার করতে নিয়ে যাচ্ছিল একটি হিন্দু পরিবার। মুসলিম-রোষের কবল থেকে রক্ষা পায়নি শববহনকারী গাড়িটিও, ভাংচুর করে ফিরিয়ে দেয় পৈশাচিক মত্ততায়। শায়েস্তানগরের শফিরাবাদে একটি স্কুল থেকে বলা হয়েছিল যে দুপুরের খাবার খাওয়া শেষ হলেই স্কুল বন্ধ করে দেবে। কিন্তু সেটুকুও তর সয়নি, স্কুলটি ওরা ভাংচুর করে লণ্ডভণ্ড করে দেয়। হিংস্র মুসলিম জনতার হাত থেকে হিন্দুদের রক্ষা করতে পুলিশের কার্যকরী কোনও ভূমিকাই চোখে পড়েনি।

এদিকে পুলিশ একাদশ শ্রেণীর যে ছেলেটি (সৌভিক সরকার) ফেসবুকে আপত্তিকর ছবিটি পোস্ট বা শেয়ার করেছিল তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। তার ফলে উন্মত্ত মুসলমানদের ক্ষোভ একটুও প্রশমিত হয়নি, উল্টে তারা ধেয়ে যায় বাদুরিয়া থানায় এবং   অভিযুক্তকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে। পুলিশ সে দাবি না মানায় তারা থানা ও পুলিশের ওপর হামলা করে, বাদুড়িয়া থানার সামনেই পুলিশের তিন তিনটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। তথাপি উন্মত্ত জনতাকে প্রতিহত করার কোনও চেষ্টাই পুলিশ করেনি, সদর গেটে তালা ঝুলিয়ে থানার ভেতর থেকে সেই দৃশ্য দেখেছিলেন পুলিশকর্মীরা (সূত্রঃ আনন্দবাজার, ৬ই জুলাই)। রাস্তায় থাকা পুলিশরা কিন্তু মারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। সংবাদপত্রটি লিখেছে, গত তিন দিনে বসিরহাট, বাদুড়িয়ায় গোটা দশেক পুলিশের গাড়ি জ্বালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ভেঙেছে আরও বেশি। হাতে লাঠি আর মাথায় হেলমেট নিয়ে গোলমাল ঠেকাতে গিয়ে মার খেয়েছেন নিচুতলার পুলিশকর্মীরা। হিংস্র মুসলিম জনতার হাত থেকে রেহাই পায়নি পুলিশ সুপার এবং বসিরহাটের এসডিপিও দুজনেই।

বাদুরিয়ায় মুসলিমরা যে হিন্দুদের দোকান-বাড়িঘরে আগুন জ্বালে সে আগুনে হাত সেঁকে নিয়ে হিন্দুরাও পাল্টা শুরু করে বসিরহাট ও স্বরূপনগরের বিভিন্ন স্থানে। তাদের হাতে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়  নির্দোষ ও নিরীহ মুসলমানরা। বাদুরিয়ায় যা ছিল একতরফা, সেটা বসিরহাট ও স্বরূপনগরে দাঙ্গার চেহারা নেয়। স্বাধীনোত্তর কালে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা মুসলমানদের হাতে আক্রান্ত হলে পাল্টা আক্রমণ কখন করেছে আমার জানা নেই। এবার বাদুরিয়া দাঙ্গায় সেটা দেখা গেল। তবে এর পেছনে আরএসএস ও বিজেপির উস্কানি ও মদত এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ যে রয়েছে তা বলা বাহুল্য। কট্টরপন্থী হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন ‘হিন্দু সংহতি মঞ্চ’ যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই হিন্দুদের উস্কানি দিয়েছে ও দিচ্ছে। আমি যখন এই লেখা লিখছি (৯ই জুলাই) তখন শুনতে পেলাম তেলেঙ্গানার একজন বিজেপি বিধায়ক পশ্চিবঙ্গের হিন্দুদের বার্তা পাঠিয়েছেন যা তীব্র উস্কানিমূলক। পশ্চিমবঙ্গকে ২০০২-এর গুজরাট বানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন তা না করতে পারলে পশ্চিমবাংলার হিন্দুদের বাংলাদেশের হিন্দু ও কাশ্মীরের ব্রাহ্মণদের দশা হবে।

এই দাঙ্গার মধ্যেও সম্প্রীতি ও মানবতার মহান ছবিও কিন্তু দেখতে পাওয়া গেছে যা কিছুটা হলেও আমাদের ভরসা জোগায়। যে সৌভিকের পোস্টে দাঙ্গার সূত্রপাত, তাকে জিহাদি মুসলিমদের হাত থেকে বাঁচিয়েছে সেখানকার মুসলমানরাই। মুসলমানরা একের পর এক বাড়িতে যখন আগুন লাগিয়েছে, তখন দমকলে খবর দিয়ে কিছু মুসলিম যুবকই আগুন নেভানোর প্রাণপণ প্রচেষ্টা করেছে। আবার দাঙ্গাক্রান্ত ঘর ছাড়া অনেক হিন্দু পরিবারকে হিন্দু-মুসলিমরা জোট-বেঁধে আশ্রয় দিয়েছে, খাবারও দিচ্ছে। এই দৃশ্যগুলি প্রমাণ করে যে, মুসলমানরা সবাই হিন্দুবিদ্বেষী ও সন্ত্রাসী নয় যা  হিন্দুত্ববাদীরা হিন্দুদের মাঝে নিরন্তর প্রচার করে থাকে।

বাদুরিয়া দাঙ্গায় অন্তত চারটি নতুন বিশেষ বৈশিষ্ট আমার চোখে ধরা পড়েছে। সেগুলি হল– (১) ইসলামের পক্ষে আপত্তিকর পোস্টের প্রতিবাদে বাংলাদেশের মতোই মুসলিম মৌলবাদীরা নির্দোষ হিন্দুদের ওপর বীভৎস সন্ত্রাস ও অত্যাচার সংগঠিত করল। এবং সন্ত্রাসের সময় বাংলাদেশের সরকার যেমন আক্রান্ত হিন্দুদের নিরাপত্তা দেয় না, পশ্চিমবঙ্গের সরকারও তাই করল। (২) এ’রাজ্যে মুসলিম মৌলবাদীদের হাতে আক্রান্ত হলে হিন্দুরা সাধারণতঃ ভয়ে পিছু হটে এবং পুলিশের  কাছে নিরাপত্তা চায়। এবার কিন্তু বিপরীত ছবি দেখা গেল। হিন্দুরাও নির্দোষ মুসলমানদের উপর পাল্টা আক্রমণ ও সন্ত্রাস করল। (৩) মুসলিম মৌলবাদীদের হাতে হিন্দুরা আক্রান্ত হলে এ’রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমগুলি তা প্রচার করে না। মুসলিম মৌলবাদীদের আড়াল ও তুষ্ট করাই ছিল তাদের এতদিনের নীতি। সেই নীতি তারা এবার বর্জন করল। অবশ্য খবর নির্বাচন ও প্রচার করার ক্ষেত্রে মুসলিম মৌলবাদীদের তুষ্ট করার নীতি তারা ত্যাগ করেনি। (৪) মুসলিম মৌলবাদীদের যেকোনও সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডকে তুচ্ছ ঘটনা বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন চেপে গেছেন। তিনি এবার এই প্রথম রাজ্যপালের গুঁতায় সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ্যেই স্বীকার করলেন যে মুসলমানরাই দাঙ্গা শুরু করেছে। বলেছেন, ‘এই কমিউনিটিকে, যারা কাল থেকে শুরু করেছে তাদের বলব আপনাদের জন্য আমাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে….।’ এরপর অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি সমস্ত দোষ বিজেপির ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, বিজেপিই পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা লাগিয়েছে।

এ রাজ্যের প্রায় সব সংবাদমাধ্যম মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগটিকেই সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে মরিয়া হয়ে প্রচার চালাচ্ছে। তারা প্রাণপণে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে যে কাবা নিয়ে ফটোশপ করা পোস্টটির জন্যেই দাঙ্গা লেগেছে, এবং দাঙ্গা বাধানোর জন্যে বিজেপি পরিকল্পনা করেই ছবিটি পোস্ট করিয়েছে। হ্যাঁ, পোস্টটির সঙ্গে হিন্দুত্ববাদীদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা থাকতেই পারে। কিন্তু তারজন্যেই দাঙ্গা লাগবে কেন? কোনও একজন হিন্দু একটি আপত্তিকর ছবি পোস্ট করেছে বলে কি সমস্ত হিন্দুই দায়ী? কেন তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা হবে? কেন তাদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুট, ভাংচুর কিংবা আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা হবে? আমাদের  দেশে তো মানুষের বাক-স্বাধীনতা সীমিত ও খণ্ডিত, তাই এ দেশের আইনেই তো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানানোর সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া পুলিশ তো তৎপরতার সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতে ওকে গ্রেপ্তারও করেছিল। তাহলে তারপরেও হিন্দুদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকার কোনও কারণ ছিল কি? শুধু হিন্দুদের ওপরে সশস্ত্র হামলা অব্যাহত থাকেনি, হামলা চালানো হয়েছে পুলিশের ওপরেও, অভিযুক্তকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য। একটা সভ্য দেশে ‘অভিযুক্তকে আমাদের হাতে তুলে দিতে হবে, আমরা বিচার করব’, পুলিশের কাছে এমন দাবি করা যায়? নাকি, উচ্ছৃঙ্খল জনতা এমন দাবি করলে পুলিশের হাত গুটিয়ে বসে থাকা উচিত? মাওলানারা মুসলমানদের নিয়ে সংবিধান মেনে গণতান্ত্রিক পথে যদি আপত্তিকর পোস্টটির প্রতিবাদ করতেন এবং সরকার ও প্রশাসনের কাছে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেবার দাবি জানাত তাহলে কি বিজেপির দাঙ্গা বাধানোর পরিকল্পনা (যদি সত্যিই সে পরিকল্পনা ওদের থাকত) সফল হতে পারত?

একটি আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার ঘটনাকে উপেক্ষা করলে কি কাবা’র মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হত? না কি মাওলানাদের উস্কানিতে ধর্মান্ধ মুসলমানরা নিরপরাধ হিন্দুদের ওপর হামলা না করলে দাঙ্গা বাধতো? এই প্রশ্নগুলো কেউ তেমন করে তুলছেন না। না তুলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি, না তুলছে এ রাজ্যের কোনও মিডিয়া, না তুলছেন বিদ্বজ্জনেরা।

পরিশেষে যে প্রশ্নটি তুলতে চাই– বাদুরিয়া দাঙ্গার জন্যে শুধু দাঙ্গাবাজ হিন্দু ও মুসলিম মৌলবাদীরাই কি দায়ী? সরকারের কোনও দায় নেই? মুসলিম মৌলবাদীরা শয়ে শয়ে হিন্দুদের ওপর হামলা, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া ও পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা করার সাহস পায় কী করে? না, হঠাৎ করে এত সাহসী তারা হয়ে ওঠেনি। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মোল্লাতোষণ নীতির জন্যেই তারা এত বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। তারা জানে যে পশ্চিমবঙ্গ তাদের স্বর্গরাজ্য ও মৃগয়াক্ষেত্র, এখানে হিন্দুদের মারলে-কাটলে, পুলিশকে লাঠি-বোমা মারলে কিছু হবে না, কারণ সরকার তাদের পেছনে আছে। এ রাজ্যে তারা দেগঙ্গা, সমুদ্রগড়, ধূলাগড়, কালিয়াচক ঘটিয়েছে, কিচ্ছু হয়নি। তারা মুসলিম সমাজের প্রগতিশীল মানুষদের উপরও হামলা করেছে, কিচ্ছু হয়নি। ইমামরা তসলিমার মুণ্ডু কাটার এবং প্রধানমন্ত্রীর দাড়ি কাটার ফতোয়া দিয়েছে, কিচ্ছু হয় না। তাদের কথায় সরকার বিশ্বখ্যাত লেখক তসলিমা বিতাড়িত হন এবং সলমান রুশদি এ রাজ্যে ঢুকতে পারেন না। তাদের ফতোয়ায় এ রাজ্যে এমনকি মেয়েদের ফুটবল প্রদর্শনীও বন্ধ হয়ে যায়। তো তারা আইন মানবে কেন? বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল, তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের উস্কানি দেবে তা জানি। তাদের ধর্মীয় মেরুকরণের বিষাক্ত রাজনীতিকে নিন্দা জানিয়েও বলতে চাই যে, সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যদি মোল্লাতোষণের জঘন্য নীতি বর্জন না করে তবে পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গার প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

সৌজন্যেঃ বিতর্ক পত্রিকা
http://bitarka.com/general/westbengal-communal-clashes/