বিয়ের পর হিন্দুনারীরা সিদুঁর ব্যবহার করে কেন ???

বিয়ের পর হিন্দুনারীরা সিদুঁর  ব্যবহার করে কেন ???
#মহারাজ  শান্তুনু গঙ্গাদেবীকে বিবাহ করিবেন বলিয়া মনস্থির করিলেন।যেহেতু গঙ্গা দেবী দেবকুল এবং শান্তুনু  মানবকুল,তাই তাহারা উভয়েই সংকটে পড়িলেন যে,এই বিবাহের বৈধতা থাকিবে কি না!
#যেহেতু ব্রক্ষ্মা  সকল কুলের সৃষ্টিকারী,তাই তাহারা উভয়ে ব্রক্ষ্মার  শরনাপন্ন হইলেন এবং স্ময়ং ব্রক্ষ্মাও  উপস্থিত হইলেন।


#ব্রক্ষ্মা  এ বিবাহে অস্বীকৃতি জানাইলেন।কারন কুল,ধর্ম,বর্ন,গোত্র বিপন্ন হইলে, বিবাহের পরবর্তী সময়ে সংঘাত  অনিবার্য। তখন দেবকুল রানী গঙ্গা দেবী ব্রক্ষ্মা কে একটি প্রশ্ন করিলেনঃ-

“যদি দেবকুলের কোন নারী দেবকুলের কোন বরপতি  খুজিঁয়া না পায়,তাহাহইলে কি সে নারী সারাজীবন অবিবাহিত থাকিবেন?”
তাহাহইলে তো সমাজে অনাচার এবং সংঘাত  অহরহর  ঘটিতে থাকিবে কারন উপযুক্ত অবিবাহিত  নারী স্বর্প বিষের সমতুল্য।কারন তাহারা  যে কোন সময় পরিবার,সমাজ এবং ধর্ম সকলকে আঘাত করিতে পারিবে,তাই ইহা একমাত্র বিবাহের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন সম্ভব।
#তখন ব্রক্ষ্মা   পড়িলেন বিপাকে!ব্রক্ষ্মা  তখন মহারাজ  শান্তুনু কে কহিলেন,ঠিক আছে তোমরা যদি এমন একটা  কিছু করিয়া দেখাইতে পার যেখানে দেহ থাকিবে দুইটা কিন্ত  মন এবং প্রান থাকিবে একটা,তাহাহইলে আমি এ বিবাহের অনুমতি দিতে  পারিবো।মহারাজ শান্তুনু  তখন চিন্তা করিলেন,যদি দুইজনকে এক প্রানে আনিতে হয় তাহাহইলে যদি আমার রক্ত ওর দেহে প্রবেশ করাইলে আমরা উভয়েই এক প্রানের স্তম্ভ লাভ করিতে পারিবো।
#মহারাজ শান্তুনু  সাথে সাথে নিজের বাম হস্তের বৃদ্ধাংগুলী কাটিয়া নিজ রক্ত গঙ্গা দেবীকে খাওয়ানোর জন্য উদ্যত  হইলেন।ব্রক্ষ্মা   ইহাতে বাঁধা প্রদান করিলেন এবং কহিলেন, আমিই জগতের সকল কুল সৃষ্টি  করিয়াছি।তোমাদের কে পৃথিবীতে  এবং স্বর্গলোকে পাঠাইনো হইল শান্তি এবং ধর্ম স্থাপনের আশায়।রক্ত পান করিলে তোমাদের মধ্যে  আর রাক্ষস, দৈত্য, দানব এবং অসুর কুলের মধ্যে কোন ভেদাবেদ  থাকিবে না।
#তাই আমার মতে,তুমি  গঙ্গা দেবীর শরীরে তোমার রক্ত এমন একটা জায়গায় লেপন কর, যেখানে যে কোন নারীর সর্ব্বলোকের সর্ব্ব দৃষ্টি ঐ খানে গিয়া পড়িবে।
আরো মনে রাখিতে হইবে যে,তাহা কোন নারীর  জীবনে  মাত্র একবার রক্ত তিলক গ্রহন করিতে পারিবে এবং দ্বিতীয়  বারের ইহার কোন বৈধতা থাকিতে পারিবে না।
#তখন মহারাজ শান্তুনু  নিজের বাম হস্তের বৃদ্ধাংগুলীর রক্ত গঙ্গা দেবীর ললাটে লেপ্টাইয়া দিলেন এবং সেই থেকে হিন্দু সমাজের নারীদের ললাট রক্ত তিলকের শোভা বর্ধনে সিদুঁর  ফোঁটার প্রচলন ঘটাইলো
#সিদুঁর  স্থাপনের আরো কিছু যুক্তি রয়েছে যেমন;
(১) যাহার কপালের সিদুঁরেরর ফোঁটা যত উজ্জল থাকে তাহার প্রতি পরপুরুষের কামশক্তির দৃষ্টি  তত ম্লানের দিকে ধাবিত হয়।
(২)কপালে সিদুঁর  নিয়ে চলাচল মানেই স্বামীর রক্ত নিজ শরীরে বয়ে বেড়ানো।
(৩) সিদুঁরের রং যদি লাল না হইয়া অন্য রং সৃষ্টি হইত, তাহা হইলে কখনো ইহা কপালে স্থান পাইতো না কারন ইহা মূলত রক্ত তিলক হইতে উৎপত্তি।
(৪) সিদুঁর  মূলত কালীমাতার ভয়ংকর রুপ।কারন অসুরদের রক্ত ঝরানোর মুহুর্তে  কালী মাতার শরীরে মহাদেবের রক্ত তিলক ছিলো।অসুরেরা তাই লাল রংকে বেশী ভয় পায়।তাই ইহা অসুর প্রতিষেধক  হিসাবে কাজ করে।