অারব্য অশিক্ষিত বর্বর মানুষদের সংস্কৃতি। আজকের মটরগাড়ির যুগে গাধার পিঠে চড়ার মত ব্যাপার অারব্য ধর্ম পালন করা। শবে বরাতের চাঁদ দেখা নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটে গেছে বাংলাদেশে। কেউ নাকি চাঁদ দেখেনি ৬ এপ্রিল সে কারণে ৮ এপ্রিল সোমবার থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে। এই হচ্ছে মুর্খদের মাস গণণা! ইসলাম মতে দুইজন মুসলমান পুরুষকে নিজের চোখে চাঁদ দেখতে হবে তাহলেই মাসের শেষ ও শুরু বলে ধরা হবে। অথচ বিজ্ঞান এখন একশ বছরের অগ্রিম নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারছে নতুন চাঁদ কখন ধরা হবে কবে পূর্ণিমা, কবে অমাবস্যা। কিন্তু মূর্খরা এখনো চাঁদ দেখার জন্য কমিটি গঠন করে। সেই কমিটিতে আবার মুর্খ মোল্লার সঙ্গে যোগ দেয় মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা পর্যন্ত! এরা কিন্তু জানে এ মাসের নতুন চাঁদ কবে ধরা হবে। কিন্তু ধর্ম বলে কথা! ধর্ম বলেছে চাঁদ দেখবে মুসলিম পুরুষরা। খেয়াল করে রাখেন, কোন নারী দেখলে তার সাক্ষি গ্রহণযোগ্য নয়! যাই হোক, এখন কেউ কেউ বলছেন এই চাঁদ দেখার ব্যাপারটা বাদ দিয়ে আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে যেহেতু কবে চাঁদ উঠবে আগেই জানা যায় তাহলে সেটাকে ধরে ইসলামিক ক্যালেন্ডার তৈরি করা হোক। বছরের শুরুতেই মুসলমানরা জানতে পারবে কবে ঈদ, কবে রোজা হবে। ইনারা বলছেন এতে করে সারা দুনিয়ার মুসলমানরা একই সময়ে ঈদ রোজা পালন করতে পারবে! যারা এমন দাবী করছে তাদের সকলেই দাড়িঅলা মডারেট মুসলমান। এদের কেউ আলেম নয়। এদের অনেকে পর্দাথ বিজ্ঞানী পর্যন্ত! যেমন ড. শমসের আলী। বিবিসি তার সঙ্গে চাঁদ দেখা নিয়ে যে ধরণের সমস্যা হয় তার নিয়ে কথা বলেছিলেন। শমসের আলী বিজ্ঞানের একাডেমিক শিক্ষিত মানুষ হলেও তিনি ইসলামী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সুপরিচিত। ইসলাম নিয়ে তার প্রচুর বই আছে। এই ধরণের শিক্ষিত ব্যক্তি বলাই বাহুল্য ইসলামের ত্রুটিগুলি তাদের অন্ধত্বের কারণে দেখতে পায় না। নইলে তিনি যখন বিবিসিকে বললেন, ‘ধর্মীয় উৎসবের তারিখ নির্ধারণের জন্য ইসলামে যে বিধান আছে, তার সঙ্গে বিজ্ঞানের কোন বিরোধ নেই। কাজেই আধুনিক জ্যোর্তিবিজ্ঞান প্রয়োগ করে খুব সহজেই বলে দেয়া সম্ভব কখন হিজরি সনের নতুন চান্দ্র মাস শুরু হচ্ছে। ফলে সারা বিশ্বের মুসলমানরা চাইলে একই দিনেই পালন করতে পারেন তাদের ধর্মীয় উৎসব, এ নিয়ে এত বিভ্রান্তি বা সংশয় থাকে না’।
একদম ডাঁহা মিথ্যা কথা! ইসলাম কি বলছে দেখেন, ‘চাঁদ দেখে রোজা রেখো এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাংগো এবং মেঘের কারনে চাঁদ দেখা না গেলে শাবান মাসের ৩০ পূর্ণ কর’। একদম পরিস্কার কথাবার্তা। আরো একটা হাদিস দেখুন, ‘মুসলিম থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা) বলেছেন: ঊনত্রিশ দিনেই (রমযান) মাসটি (পূর্ণ হয়ে যেতে পারে)। অতএব একে (নতুন চাঁদ) না দেখা পর্যন্ত সিয়াম পালন শুরু করবে না এবং যতক্ষণ না একে (শাওয়্যালের নতুন চাঁদ) দেখবে সিয়াম পালন বন্ধও করবে না; আর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে গণণা করে নিবে’। অথচ এখন বিজ্ঞান একশ বছরের তালিকা নির্ভুল বলে দিতে পারবে আরবী শাওয়াল মাস ২৯ দিন হবে নাকি ৩০ দিন হবে! কিন্তু মুহাম্মদ তার অনুসারীদের বলেছেন তাদের খালি চোখে সেটা দেখতে হবে। পৃথিবী যে একদিন অগ্রিম সব বলে দিতে পারবে সেটা তো মুহাম্মদের পক্ষে ধারণা করা সম্ভব ছিলো না। ড. শমসের আলী মত লোকজন যতই বলুক মহাকাশ গবেষণার তথ্য অনুযায়ী আরবী ক্যালেন্ডার বানানোর কথা সেটা কখনই আলেম ওলামারা মানবে না কারণ তারা ধর্মীয় বিধান অক্ষরে অক্ষরে মানবে। আর সাধারণ মানুষ যেহেতু এইসব আলেমদের ভেড়ার পাল কাজেই তারা আলেমদের কথাই শুনবে।
পৃথিবী যে সমতল এবং তা মক্কা মদিনা সিরিয়া আবিসিনির চেয়ে বড় নয়, ইউরোপ মহাদেশ, ভারতীয় উপমহাদেশ, আফ্রিকা মহাদেশ সম্পর্কে কোন ধারণাই যে নবীর ছিলো না সেটা স্পষ্ট হয় তার চাঁদ দেখে মাস গণনার কাহিনী জানলে। সমস্যা প্রথম ধরা পরে মুহাম্মদের মৃত্যুর পর খলিফা ওমর যখন হিজরী মাস চালু করেন। ৬৩৮ খৃষ্টাব্দে ওমরের নির্দেশে মদিনার মুসলিম পন্ডিতবর্গ হিজরী ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করেন, যার গণনা ১৬ বছর পিছিয়ে ৬২২ খৃষ্টাব্দের ১৬ জুলাই থেকে শুরু করা হয় যখন মুহাম্মদ মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় পৌছলেন সেই দিনটিকে হিজরী সালের প্রথম দিন মানে প্রথম মহররম নির্ধারন করে হিজরী ক্যালেন্ডার প্রণীত হয়েছিলো। কিন্তু সমস্যা দেখা দিলো যখন ইসলামী সাম্রাজ্য আরব ছেড়ে বাইরের দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়ল। হিযরী মাস অনুযায়ী দেখা গেলো আররের লোকের সঙ্গে অন্যত্র মুসলিমদের ঈদ ও রোজা মিলছে না। চিঠিপত্রের যোগাযোগের মাধ্যমে এই ভিন্নতা দেখার পর ইসলামিক পন্ডিতদের মাথা গরম হয়ে উঠে। তারা পরে ফতোয়া দেন নির্দিষ্ট স্থানে যখন চাঁদ দেখা যাবে সেটা ধরেই আরবী মাসের গণনা ধরতে হবে। সেটাই আজতক চলছে। বলাই বাহুল্য এই ফতোয়া আলেমদের মনগড়া। কুরআন হাদিসে এই বিষয়ে কোন দিকনির্দেশনা নেই। কুরআনে কেন বলা থাকল না ভারতের লোকজন কিংবা আফ্রিকার লোকজনের চাঁদের সঙ্গে আরবের চাঁদের হিসাব মিলবে না? তখন মুসলমানদের করণীয় কি সেটা কুরআন হাদিসে বলা থাকাই তো উচিত ছিলো যেহেতু বিষয়টা ছোটখাটো কোন সমস্যা নয়। সমতল এবং পৃথিবীর পরিধি সম্পর্কে অজ্ঞতাই যে এই নিরবতার মূল কারণ সেটি পাদার্থ বিজ্ঞানী হবার পরও শমসের আলীদের চোখে ধরা পড়বে না কারণ তারা ধর্মের আফিম আগেই খেয়ে বসে আছেন!