আমাদের প্রাচীন চিকিৎসা শাস্ত্র চরক ও সুশ্রুতের লেখা বইগুলো জোগাড় করে রেখেছিলাম। কিন্তু বিপুলায়তন হওয়ায় সেটা আর খুলে দেখার সাহস হয়নি। যাই হোক, অল্প অল্প করে পড়তে শুরু করেছিলাম মাস তিনেক আগে।
চরক হচ্ছে প্রাচীন ভারতের একজন চিকিৎসক। তিনি ছিলেন তৎকালীন ভারতেবর্ষের কনিষ্ক রাজার চিকিৎসক।
সেই সময় কালে তিনি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতির সর্বপ্রথম সংকলন গ্রন্থ রচনা করেন, যা চরক সংহিতা নামে সমধিক পরিচিত।
খ্রিস্টীয় এক শতাব্দীতে লেখা এই শাস্ত্র এক অমুল্য ভাণ্ডার। ভেষজ, এভিডেন্স যাচাই, পথ্য, রোগ নির্ণয়। লজিক, এসবকিছু দিয়েই এমন এক বিপুল শাস্ত্র রচনা করেছিলো আমাদের পুর্বপুরুষেরা যে তা ভাবলে বিস্মিত হতে হয়। আমি কয়েকটা উদাহরণ দেব আপনাদের জন্য যা এখনো প্রাসঙ্গিক।
চরক সংহিতা মতে চিকিৎসকের গুণ চারটি থাকতে হবে।
১/ চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রকৃত তত্ত্ব সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান।
২/ ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও বহুল দৃষ্টান্তের সাথে পরিচয়।
৩/ হাতের কাজের উৎকর্ষতা।
৪/ শুচিতা।
পথ্য ও ওষুধপাতি হিসেবে যা ব্যবহার হবে তার অভিপ্রেত গুণ।
১/ প্রাচুর্য বা প্রচুর পরিমাণে লভ্য হওয়া।
২/ সঠিক ব্যবহারের পক্ষে উপযুক্ততা।
৩/ ব্যাপক প্রয়োজনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বা ব্রড স্পেক্ট্রাম।
৪/ কার্যকারীতা।
শুশ্রূষাকারীর অভিপ্রেত গুণ
১/ শুশ্রূষা কৌশলের জ্ঞান।
২/ দক্ষতা।
৩/ রোগীর প্রতি অনুরাগ।
৪/ শুচিতা।
রোগীর অভিপ্রেত গুণ
১/ রোগের ইতিহাস স্মরণ করার ক্ষমতা।
২/ চিকিৎসকের নির্দেশ পালন বা কমপ্লায়েন্স।
৩/ মনোবল বা সাহস
৪/ রোগ সংক্রান্ত তথ্য না লুকানো।
এগুলো কি আজ ও প্রাসঙ্গিক নয়?
চরকের মতে পৃথিবীর সকল প্রাণীতে ও বস্তুতে কম বা বেশী ঔষধি গুণ আছে।
আরো কিছু দারুণ বিষয় শেয়ার করবো সময় পেলে। এই প্রাচীন শাস্ত্র নিয়ে মুগ্ধ হবার মতো অনেক কিছুই আছে।