Untitled Post

টান টান উত্তেজনায় আপনার লেখাটি পড়তে পড়তে “আমি একজন জ্যোতিষী” এখানে এসে হোঁচট খেলাম। কারণ আমি জানি যে যতবড় জ্যোতিষী সে ততবড় প্রতারক।

আমার, হিজড়ার মুখোশ উন্মোচন পোস্ট এ Sargam Chatterjee নামের একজন এই মন্তব্য করেছে। জন্ম সূত্রে সে হিন্দু হলেও সে এখন প্রকৃত হিন্দু কিনা তাতে আমার সন্দেহ আছে। কারণ, তার প্রোফাইল পিকচারে দেওয়া আছে, আমির খানের পিকে ছবির পোস্টার।

যা হোক, যারা জ্যোতিষীকে প্রতারক মনে করেন বা যারা জ্যোতিষ বিশ্বাস করেন না, তাদের জন্য আমার এই লেখা।

এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, মানুষের ভবিষ্যৎ যেহেতু অজানা, সেহেতু কিছু কিছু জ্যোতিষী মানুষের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে থাকে। এর মানে এই নয় যে, জ্যোতিষ শাস্ত্র ভূয়া। জ্যোতিষ শাস্ত্র বেদ এর অংশ। হিন্দু ধর্মকে স্বীকার করলে আপনাকে অবশ্যই জ্যোতিষ বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু এটাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, এর প্র্যাকটিক্যাল উপযোগিতা ও উপকারিতা রয়েছে।

২০১২ সাল পর্যন্ত জ্যোতিষ আমি নিজেই বিশ্বাস করতাম না। তারপর আমার জীবনের একটা ঘটনার ব্যাখ্যা কোথাও খুঁজে না পেয়ে জ্যোতিষ নিয়ে পড়াশুনা শুরু করি এবং তারপর আমার যে উপলব্ধি, তা হলো, যে ব্যক্তি জ্যোতিষ শাস্ত্রকে অবিশ্বাস করছে আসলে  সে অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থেকে অক্সিজেনের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করছে।

জ্যোতিষ শিখে আমার কী লাভ হয়েছে, এবার সেটা বলি। আগে রোড এ্যকসিডেন্টে মরার ভয়ে আমি বাসে চলা ফেরা করতাম না। কারণ, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ১৭ জন লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। পরে যখন দেখলাম, সড়ক দুর্ঘটনায় আমার মৃত্যু যোগ নেই, তখন আমার এই ভয় কেটে গেলো, এখন আমি নিশ্চিন্তে বাসে চলা ফেরা করতে পারি। শুধু তাই নয়, সম্ভাব্য কত বছর বয়সে আমার মৃত্যু হবে, সে সম্পর্কেও আমার একটি ধারণা আছে, তাই এ নিয়েও আমার কোনো টেনশান নেই। আর আমার অদম্য সাহসের এটিও একটি কারণ। যারা মৃত্যু ভয়ে ভীত, তাদের দ্বারা সমাজ সংসারের কোনো কল্যান হয় না।

জ্যোতিষে যাদের একেবারেই বিশ্বাস নেই, তাদের কাছে একটি প্রশ্ন : আপনার নিশ্চয় কোনো না কোনো একটি রং পছন্দ বা কোনো রং এর প্রতি দুর্বলতা আছে। এর কারণ কী ? কেনো ঐ বিশেষ রংটি ই আপনার পছন্দ ? এটা কখনো ভেবে দেখেছেন ? এর উত্তর বিজ্ঞানে নেই। এর উত্তর যদি আপনি খুঁজতে থাকেন, এক সময় দেখবেন, আপনি নিজেই জ্যোতিষী হয়ে গেছেন।

বেদ এর বাণী যাদের কাছে এসেছে, সেই মুনি-ঋষিদের জ্ঞানের পরিধির কিছু কথা এবার বলি। জ্যোতিষ শাস্ত্র লেখা হয়েছে ৫ হাজার বছর আগে, সেই সময় আমাদের মুনি-ঋষিরা আমাদের সৌরজগতের প্রধান নয়টি গ্রহ সম্পর্কে কিছু কথা বলে গেছেন, খেয়াল রাখবেন, তখন দুরবীন-টেলিস্কোপ কিছুই ছিলো না। তখন তারা বলেছেন, মঙ্গলের রং লাল। বিজ্ঞান কয় দিন আগে এই কথাটা বলতে পেরেছে ? মঙ্গল যে সকল প্রকার দুর্ঘটনার কারণ, সে কথা না হয় বাদ ই দিলাম।

জ্যোতিষী এবং জ্যোতিশ শাস্ত্র নিয়ে কথা বলার আগে, এটা ভেবে কথা বলতে হবে যে,  জ্ঞানের স্বল্পতা হেতু ডাক্তার খারাপ হতে পারে, কিন্তু চিকিৎসা শাস্ত্র ভূয়া নয়। সেরকম জ্যোতিষীর  জ্ঞানের স্বল্পতা থাকতে পারে কিন্তু জ্যোতিষ শাস্ত্র অভ্রান্ত।

আজকাল কোনো বিষয় সম্পর্কে পর্যাপ্ত পড়াশুনা না করে বা ভালো করে না জেনে ঐ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এতে অবশ্য আমি কিছু মনে করি না। কারণ, এসব মন্তব্যকে জ্ঞানী লোকেরা খুব কমই গুরুত্ব দিয়ে থাকে, আর আমি তো গুরুত্ব দিই ই না।কিন্তু এ প্রসঙ্গে জ্যোতিষ নিয়ে কিছু কথা বলার সুযোগ এলো এবং এর উপকারিতা ও কার্যকারিতা কিভাবে আমার জীবনকে পাল্টো দিয়েছে বা পথ চলতে সাহায্য করছে, সে সম্পর্কে  কিছু বলার সুযোগ এলো বলেই লেখাটা লিখলাম।

Scroll to Top