মিয়ানমারের চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটের জন্য মুসলিম এই জনগোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং চিয়াং। রোববার শেরে বাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের এই অবস্থান প্রকাশ করেন তিনি। মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে ৩ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বিপুল সংখ্যক এই শরণার্থী বাংলাদেশের জন্যও সঙ্কট তৈরি করেছে, কেননা আগে থেকেই ৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “রাখাইন রাজ্যে পুলিশের উপর হামলার কারণে সহিংসতা শুরু হয়। এর পর রোহিঙ্গারা সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে। এ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ ভোগান্তিতে রয়েছে।” গত ২৫ অগাস্ট রাখাইন রাজ্যে সেনা ও পুলিশ ফাঁড়িতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর রাখাইনে শুরু হয় সেনা অভিযান। এতে পালিয়ে আসা ব্যক্তি বলছেন, অভিযানে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের কারণে মিয়ানমারের সমালোচনা করে আসছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন। সমালোচনায় পড়েছেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি। যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি দিয়েছেন। মিয়ানমারের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীন দেশটির দীর্ঘকালের মিত্র। নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রস্তাব চীন ও রাশিয়া আটকে দেবে বলে সু চির এক উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে যুক্তরাজ্যের দৈনিক টাইমস জানিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মিং চিয়াং বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে চীনও ভোগান্তিতে আছে। কারণ মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া বিসিআইএম (বাংলাদেশ -চীন-ভারত-মায়ানমার) করিডোরও আছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের সুরাহা শিগগিরই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন চীনের রাষ্ট্রদূত। সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দিয়েও সাড়া পাচ্ছে না বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন। এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিয়ানমারকে চাপ দিতে চীন ও ভারতের দ্বারস্ত হতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন।