আশার কথা ভারতসরকারের টনক নড়েছে।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ ও প্রফেসর শঙ্কু / প্রবীর মজুমদার
—————————————————

প্রফেসর শঙ্কু একবার গোটা একটা গ্রহের সমস্ত বাসিন্দাদের হত্যা করেছিলেন। কারণ সেই বাসিন্দারা ছিল মারণ ব্যাধি সৃষ্টকারী জীবানু। মানব সভ্যতা রক্ষার জন্য মাঝে মাঝে অমানবিক হতে হয়। রহিঙ্গাদের জন্যেও ঐ একই কথা প্রযোজ্য। ওদের অপরাধ– ওরা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নিজেদের অপরাধের ফলাফল এখন নিজেরাই ভুগছে। কিন্তু আশ্চর্য লাগে ভারত ও বাংলাদেশের রহিঙ্গাপ্রেমী সাধারণ মুসলমানদের বক্তব্য শুনে। ওরা আশা করে ভারত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিক। ইতিমধ্যেই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে জম্মু-কাশ্মীরে ঘাঁটি গেড়েছে– এলাকাবাসীদের প্রত্যক্ষ মদত ছাড়া যা কখনোই সম্ভব নয়। জম্মু-কাশ্মীরে অন্য রাজ্যের ভারতীয়দের ঠাঁই নেই, অথচ কেমন সহজেই রহিঙ্গারা ওখানে জায়গা পেয়ে গেল! আশার কথা ভারতসরকারের টনক নড়েছে। ভারত সরকার দেশকে রোহিঙ্গামুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মুসলমানেরা গর্ব করে বলে সারা বিশ্বে মুসলমান শাসিত ৫০টা দেশ আছে। তাহলে রহিঙ্গা মুসলমানেরা কেন ওই সব দেশে জায়গা পাচ্ছে না? কেন ভারতকে দায়িত্ব নিতে হবে? ভারত কী ডাস্টবিন? এক্ষেত্রে ইসলামিক ভ্রাতৃত্ববোধ কোথায় গেল? সেটা কী শুধু কথার কথা? আসলে এখানেও একটা জেহাদী-মানসিকতা কাজ করছে। অমুসলমান দেশে মুসলমান পাঠিয়ে সেই দেশকে কব্জা করার একটা সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা! সূচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরনোর এই ষড়যন্ত্র যে দেশ বুঝবে না সেই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার যথেষ্ট কারণ আছে। সিরিয়ার শরণার্থীদের জায়গা দিয়ে জার্মানি সহ গোটা ইউরোপ টের পাচ্ছে সাধ করে ব্যাধী সৃষ্টিকারী জীবানু ডেকে আনলে কী হতে পারে। রোগসৃষ্টিকারী জীবানু আশ্রয়দাতাকেও ছাড়ে না।

কমিউনিস্টদের অবস্থা আরো করুণ। তারা রহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। ভারত সরকারের রহিঙ্গা বিতাড়নের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। কিন্তু অন্যদিকে কমিউনিস্ট চীন আর রাশিয়া এক যোগে যখন রহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্র সঙ্ঘের প্রস্তাবে ভেটো দেয় তখন কিন্তু ভারতীয় কমিউনিস্টদের মুখে বুলি ফোটে না। ভণ্ডামির  নিদর্শণ স্থাপন করেই চলেছে আমাদের দেশের কমিউনিস্টরা। এদের মানবিকতা রহিঙ্গাদের প্রতি উথলে উঠলেও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিষয় নিয়ে এরা রা কাড়ে না, পাছে মুসলমান-ভোটব্যাঙ্ক হাতছাড়া হয়! এরা কাশ্মীরের আজাদি নিয়ে আকাশ বাতাস মথিত করে, কিন্তু কখনো বলে না, “তিব্বত মাঙ্গে আজাদি”, পাছে খোরপোষ বন্ধ হয়ে যায়!

আপনি কমিউনিস্টই হোন, বা ইসলামিস্ট– যদি ভারতীয় হন, তাহলে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন– যে রহিঙ্গা মুসলমানেরা এত বছর বার্মায় থেকেও বর্মিজ হতে পারল না, তারা ভারতে জায়গা পেলেও ভারতকে আপন করে নেবে কি? তারা নিজেদের ধর্মকে দেশের উপরেই স্থান দেবে। ধর্মীয় তাগিদে তারা ভারতের বিরুদ্ধেও যে জেহাদে নামবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? আমাদের নিজেদেরই অনেক সমস্যা আছে, সাধ করে আমরা সমস্যা বাড়াব কেন? বাংলায় একটা প্রবাদ আছে:– নিজে পায় না ঠাঁই, শংকরাকে চাই। অন্যায় দাবি করে আপনারা কিন্তু ক্রমে অপাংক্তেয় হয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের ছদ্ম-ধর্মনিরপেক্ষতা ও ছদ্ম-মানবতার মুখোশ খুলে পড়ছে। আপনারা মুখ খুললে সাধারণ জনতা বিরক্ত হচ্ছে। ভেবে দেখুন, শংকরার প্রেমে পড়ে আপনারা নিজেরাই নিজেদের ঠাঁই হারাবার ব্যবস্হা করছেন না তো? 
—————————————————
০৮/০৯/২০১৭