ধর্ম তুমি কার :মানুষ না পশুর ?

ধর্ম তুমি কার :মানুষ না পশুর  ?
————————————–
বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল জেলার এক জায়গা মাধবপাশা । ভারতীয় উপমহাদেশ খণ্ডিত হয়ে ভারত-পাকিস্তান হয়েছিল রক্তক্ষয়ী ধর্মীয় হিংসালীলার মাধ্যমে ১৯৪৭ এ । বিভাজিত দুই ভূখণ্ডে, ১৯৪৭ এর দেশভাগের পরেও থেমে থাকেনি ধর্মীয় হানাহানির হিংসালীলা, বিশেষ করে ‘হাত মে বিড়ি, মু মে পান, লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ স্লোগান তোলা মুসলামনদের পবিত্র ভূমি পাকিস্তানে । ১৯৫০ এ মুসলমানের পৃথক দেশের জন্য আন্দোলনকারী সংখ্যাগুরু বাঙালি মুসলমানের পূর্ব পাকিস্তানে চলেছিল একতরফা সংখ্যালঘু হিন্দু নিধন । সেই একতরফা হিন্দু নিধনের এক নীরব রক্ত সাক্ষী আজকের বাংলাদেশের বরিশাল জেলার মাধবপাশা ।  পাঠক, বুকে পাথর রেখে আজকর দিনের প্রগতিশীলতার মোড়কে বাঙালি মুসলমানের সেই সময়কার গৌরবগাথা একটু জানুন:

মাধবপাশার জনৈক বৈদ্যনাথ বাবুর বাড়ির ছাদ থেকে হিন্দুরা আত্মরক্ষা করছে | সদর দরজা ভেঙে মুসলিম সন্ত্রাসীরা কম্পাউন্ডে ঢুকে পরলো | উপর থেকে ক্রমাগত তাদের উপর ইট ছোড়া হচ্ছে | ইট থেকে মাথা বাঁচাতে সদর দরজাটা ভেঙে তারা মাথার উপরে ঢাকনা হিসেবে ব্যবহার করল | এই দেখে দলে দলে হিন্দু পুরুষরা ছাদ থেকে নিচে নামতে থাকলো | চারিদিকের মেয়েদের কান্নার রব পড়ে গেছে | অন্য গ্রামের একজন বৃদ্ধ যিনি নিচের তলায় ছিলেন, মুসলিম দুর্বৃত্তরা প্রথমে তার মাথাটা ধর থেকে ছিন্ন করে ফেলল ফেলে নাচা শুরু করল | সুরেন রায় নিচে নেমে দু হাত তুলে বললো ভাই বাঁচাও, এক কোপে তার মাথা ধর থেকে আলাদা করা হল , ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটল | এরপরে দোতলা ও ছাদে উঠে রামদা দিয়ে একে একে উমাচরণ শীল, ফটিক চক্রবর্তী, নারায়ণ চক্রবর্তী, কুশল শীল, কালিচরন বসাক অনেককেই একইভাবে কল্লা কাটা হলো | একদল কল্লা কাটছে, আরেকদল জমিদার বাড়ির মাল লুট করছে | ছোট ছোট শিশুগুলোকে আকাশে ছুঁড়ে দিচ্ছে, আর নিচে পড়ার সময় বল্লম উচিঁয়ে ধরেছে, বাচ্চাগুলো টুকরো হয়ে কাটা পরছে | পৈশাচিক উল্লাসে ফেটে পরছে মুসলিম দাঙ্গাকারী দল ! লুটপাটের সাথে সাথে ৩০০ জন মহিলাকে নামিয়ে আনা হলো, বৃদ্ধা আর প্রবীনাদের গালাগাল দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হল, বাকিদের গনিমতের মাল হিসেবে বন্টন করা হল |

সকলকে উলঙ্গ করে সারিবদ্ধ ভাবে মাটিতে বসানো হলো | পাজামা লুঙ্গি পরে হাতে রামদা নিয়ে চলল একে একে কল্লাকাটা | প্রথম কল্লা গেছিল হরকুমার রায়ের | নারায়ণ বনিক দশম শ্রেণীর ছাত্রেরও কল্লা বাঁচেনি ! নিজেরই মেয়েদের চোখের সামনেই কাটা হলো গোপালকৃষ্ণ রায়, অমৃত লাল রায়, গোবিন্দ সাহা, কৃষ্ণ সাহা এবং আরো অনেকেই ! বৈদ্যনাথ বাবুর দালানের মধ্যেই পড়ে রইলো ৩০০ টা মৃতদেহ আর প্রায় ১০০ জন আহত মানুষ | সন্ধ্যায় দুজন পুলিশ আর আনসার এসে ঘোষণা দিল :’ ডাকাতরা সব চলে গেছে, রহমতপুর ক্যাম্পে চল, কারুর কোনো ভয় নেই !’ মৃতদেহগুলো স্তূপে স্তূপে বহুদিন পর্যন্ত পরেছিল | পরে সেগুলোকে জমিদার বাড়িতেই গর্ত করে গণকবর দেয়া হয় | সংখ্যালঘু নেতা যোগেন্দ্র নাথ মন্ডল সেখানে গিয়ে কি দেখেছিলো সেটা তার নিজের কথাতেই প্রমাণ আছে | যে নারীরা গনিমতের মাল হয়ে সেদিন হাতে হাতে বিলিয়ে ছিল তারা আজকের বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানের কারোর নানী বা দাদী !

এই হলো ফরহাদ মজহার, আহমেদ ছফাদের বাঙালি মুসলমান সত্ত্বা !!