সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর “পাকিস্তানে একজনও ‘সত্যিকারের মুসলমান নেই”- বক্তব্য তাত্ত্বিকভাবে সত্য। উপমহাদেশের সংস্কৃতিগত কারণে পাকিস্তানীরা ঘরের দাসীদের বিয়ে ছাড়া অবাধ সেক্স করে না। সৌদির সত্যিকারের মুসলমানরা গৃহকর্মীদের এটা করে থাকে। গরীব দেশের নারীরা সৌদিতে কাজ করতে গিয়ে সত্যিকারের মুসলমানদের হাতে ধর্ষণ হতে হতে দিশেহারা হয়ে পড়ে। ভারত-শ্রীলঙ্কা তাদের মহিলা কর্মীদের সৌদি পাঠানো বন্ধ করেছে এসব করণেই। তবে ‘সত্যিকারের মুসলমান’ হবার প্রক্টিস চালানো বাংলাদেশ সরকার নিয়মিতই মক্কা-মদিনার পুরুষদের চাহিদা মেটাতে নারী কর্মী পাঠানো অব্যাহত রেখেছে।
পাকিস্তানকে সত্যিকারের মুসলমান না বলার আরেকটি করণ হতে পারে- এখনো পাকিস্তানে খ্রিস্টান, হিন্দুদের নাগরিত্ব রয়েছে যা কোন সত্যিকারের ইসলামী দেশে থাকতে পারে না। পাকিস্তানে একবার প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। এরকম ঘটনা কোন সত্যিকারের ইসলামী দেশে সম্ভব না। এরকম উদাহরণ দেখলে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথা ঠিকই আছে। তবে আরেকদিক থেকে দেখলে ঠিক নেই। পাকিস্তানে ভিন্ন ধর্মালম্বিরা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হয়। ইসলাম ধর্ম অবমাননার অজুহাতে সেখানে খ্রিস্টান-হিন্দুদের প্রতিনিয়ত ভুগতে হয়। সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি অবাধে দখল করা যায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখতে পাবো, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশ আক্রমণ করার পর এদেশের সব কিছুকে গণিমতের মাল বলেছিল। এই ‘গণিমত’ সম্পূর্ণই ইসলামী অনুসঙ্গ। যে লক্ষ লক্ষ নারীকে মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষণ করা হয়েছিল সবটাই গণিমতের মাল হিসেবেই করা হয়েছিল। ইসলাম ধর্ম মতে শত্রুপক্ষে নারীরা মুসলিম বাহিনীর হাতে আটক হলে তারা গণিমতের মাল হিসেবে গোণ্য হবে এবং তাদের বিনা বাধায় ধর্ষণ করা মুসলমানদের জন্য কোন অপরাধ হবে না। বিশ্বাস না হলে জাকির নায়েকের ভিডিও দেখুন, এই লোক নিজের মুখেই কুরআন-হাদিস থেকে রেফারেন্স দিয়ে তা প্রমাণ করেছে, দেখুন ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=dYr8l1hkp0U
যাই হোক, পাকিস্তানীদের ‘হিন্দু মুসলমান’ বলে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসলে নতুন বিতর্ক উশকে দিয়েছেন। উপমহাদেশের মুসলিমরা যে হিন্দু বৌদ্ধ থেকে কনভার্টেড তাতে কোন সন্দেহ নেই। এদিকে মুহাম্মদ নিজে পৌত্তলিক সন্তান ছিলেন। এছাড়া ইসলামের প্রধান চারজন সাহাবী আবু বকর, উমার, আলী, ওসমান এরা সবাই পৌত্তলিক ছিলেন। এরা ইহুদী বা খ্রিস্টান থেকে মুসলিম হলে বলা যেতো তারা আহলে কিতাবী ছিল। সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিশ্চয় এদেরকেও সত্যিকারের মুসলমান বলে স্বীকার করেন না?
কথা সেটা না, কথা হচ্ছে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পর কেউ বাইতুল মোকাররমে শোরগোল শুনেছেন? বাংলাদেশের মুসলমানরাও তো হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত। এ বিষয়ে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে কিছু বলতে দেখেছেন? হেফাজত ইসলাম, চরমোনাই পীর- কেউ একটা শব্দ করেছে? এমনকি পাকিস্তানের ইসলাম প্রেমি তৌহদী জনতা কোন প্রতিবাদ করেছে? মোদী গরুর মাংস খেতে না দিলে জিহাদ যেভাবে খিঁচুনি দিয়ে উঠে সেরকম খিঁচুনি এখন নেই কেন?
নেই কারণ আসলেই সত্যিকারের ‘জানোয়ার’ হতে এই অঞ্চলের মানুষের এখনো কিছুটা বাকী আছে। ৪৭ সাল থেকে তালিম চলছে, হয়ে যাবে হয়ত শ্রীঘ্রই…।