সেক্যুলারবাদীদের ইতিহাস বিকৃতির আর এক উদাহরণ হলো টিপু সুলতানের মতো একজন ঘোরতর অত্যাচারী, সাম্প্রদায়িক জেহাদী লোককে বীরের আসন দেওয়া অন্তত দেওয়ার চেষ্টা করা । টিপু কি করে স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক হলেন সেটা খোদায় মালুম ।
প্রথম জীবনে মহীশূরের হিন্দু রাজার রাজকর্মচারী ও পরে বিশ্বাসঘাতকতা করে রাজাকে হত্যা করে সিংহাসন দখলকারী হায়দার আলীর পুত্র টিপু সুলতান, ৯০এর দশকের টিভি সিরিয়াল আর পদলেহনকারী ঐতিহাসিকদের দৌলতে আজ আমাদের কাছে মহান। একটু ফিরে দেখা যাক… ।
“মহান রাজা, স্বাধীনতা সংগ্রামী, প্রজাদরদী” (!) টিপু সুলতানকে হত্যা করার পর তার অনেক চিঠি এবং কাগজপত্র ইংরেজরা মহীশূর থেকে উদ্ধার করে ব্রিটেনে নিয়ে যায়। সেগুলো সংরক্ষণ করা আছে লণ্ডনের লাইব্রেরীতে। সেই লাইব্রেরি থেকে ইতিহাসবিদ কে এম পানিকর, টিপুর লেখা কিছু চিঠিপত্র আবিষ্কার করেন। টিপু মহীশূর শাসন করে তার ১৭৮২ থেকে ১৭৯৯ পর্যন্ত।
● ১৭৮৮ সালের ২২ মার্চ টিপু তার সেনাপতি আব্দুল কাদেরকে চিঠিতে লেখে, “১২ হাজার এর বেশি হিন্দুকে মুসলমান করা হয়েছে। তার মধ্যে অনেক নাম্বুদ্রী ব্রাহ্মণ আছে। এই সাফল্যের খবর হিন্দুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করা দরকার। স্থানীয় হিন্দুদের মুসলমান করার জন্য তোমার কাছে ধরে নিয়ে এসো। একজন নাম্বুদ্রীও যেন বাদ না যায়।”
● ১৭৮৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর তার এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে টিপু লেখে, “আমি দুজন বিশ্বস্ত লোককে হুসেন আলীর সাথে পাঠাচ্ছি। এদের সাহায্যে সমস্ত হিন্দুদের ধরবে আর হত্যা করবে। যাদের বয়স ২০ বছরের কম তাদের জেলে ঢোকাবে এবং এই সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি হলে বাকিদের গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেবে। এটা আমার আদেশ।”
● ১৭৯০ সালের ১৯ জানুয়ারি, কর্মকর্তা বদ্রুস সামান খাঁকে টিপু লেখে, “তুমি কি জানো না যে, সম্প্রতি মালাবারে আমি বিশাল সাফল্য অর্জন করেছি এবং ৪ লক্ষেরও বেশি হিন্দুকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করেছি। আমি খুব শীঘ্রই অভিশপ্ত রমন নায়ারের বিরুদ্ধে অগ্রসর হচ্ছি। এই সব প্রজাদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করাটা জরুরী। তাই আমি বর্তমানে শ্রীরঙ্গপত্তনমে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা আনন্দের সাথে স্থগিত রেখেছি।” লক্ষ্য করুন, হিন্দুদের মুসলিম বানানোতে এর কত উৎসাহ যে, নিজের বাসস্থানে যেতে মন চাইছে না।
আরো কিছু মন্তব্য দেখা যাক …..
● স্যার হায়াবাদানা রাও তাঁর “হিস্ট্রি অব মহীশূর”- এ লিখেছেন, “১৭৯০ সালের দীপাবলী অর্থাৎ কালীপূজোর সময় এক রাতে টিপু ৭০০ জন হিন্দুকে হত্যা করে।”
● টিপু সুলতানের জীবনী লেখক, এম.এফ.কে.এফ.জি এর মতে, “ত্রিবাঙ্কুরের যুদ্ধে টিপু ১০ হাজার হিন্দু ও খ্রিষ্টানকে হত্যা করে। যুদ্ধের পর ৭ হাজার হিন্দুকে বন্দী করে এবং সেরিনাগাপত্তমে নিয়ে গিয়ে পুরুষদের খতনা করিয়ে এবং নারীদের ধর্ষণ ও পরে সবাইকে গরুর মাংস খাইয়ে মুসলমান বানায়।”
● টিপুর সমসাময়িক লেখক, কিরমানি তার “নিশান-ই-হায়দারী” গ্রন্থে লিখেছেন, “টিপু সুলতান তাঁর জীবদ্দশায় কমপক্ষে ৭০ হাজার বিধর্মীকে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে বাধ্য করায়।”
টিপুর মধ্যে একটাই প্রেম ছিলো, আর তা হলো ইসলাম প্রেম। লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে রক্ষিত চিঠিগুলোর সাথে টিপুর নিজের হাতে লেখা দুটি আত্মজীবনী, “সুলতান-ই-তাওয়ারিখ” ও “তারিখ-ই-খুদাদাদি” রক্ষিত আছে। এই বইগুলোতে টিপু নিজেই উল্লেখ করেছে কিভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে হিন্দুদের সে মুসলমান বানিয়েছে। আর যারা মুসলমান হতে চাইতো না, টিপু তাদের কাউকে কাউকে ধরে এনে, অবসর সময়ের বিনোদন হিসেবে, তাদের চার হাত পায়ের সঙ্গে দড়ি বেঁধে, সেই দড়িগুলো চারটি হাতির পায়ের সাথে বেঁধে দিয়ে হাতিগুলোকে চারদিকে ছুটিয়ে দিয়ে তাদের দেহকে ছিন্ন ভিন্ন করে, তাদেরকে হত্যা করতো, এভাবে কোনো কোনো অবাধ্য হিন্দু কাফেরকে টিপু শাস্তি দিতো। এটি ছিলো নাকি টিপুর প্রিয় খেলা ও অবসর বিনোদনের একটি উপায়। টিপুর মুসলিম জীবনীকার, মহিকুল হাসানও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, “ওই দুটি গ্রন্থে (সুলতান-ই-তাওয়ারিখ ও তারিখ-ই-খুদাদাদি) প্রাপ্ত তথ্য থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে, ধর্মের ব্যাপারে টিপু ছিলো একটি বদ্ধ উন্মাদ। তার একটাই কাজ ছিলো, তা হলো হিন্দুদের প্রতি অকথ্য অত্যাচার করা এবং অত্যাচার করে তাদের মুসলমান করা। “টিপু দক্ষিণ ভারতে কমপক্ষে ৮০০ হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছিলো। এই মন্দির ভাঙতে টিপুর যে কি উৎসাহ, তা বোঝা যায় একটি ঘটনায় – দক্ষিণ ভারতের এক রাজা, নাম চিরাক্কাল, টিপুকে মন্দির না ভাঙার জন্য অনুরোধ করে বলেছিলো, তার অনুরোধ রাখলে তিনি টিপুকে ৪ লক্ষ টাকা দেবেন। জবাবে টিপু লিখেছিলো, পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ যদি কেউ আমার পায়ের কাছে এনে দেয়, তবুও আমাকে কেউ মন্দির ভাঙা থেকে নিরস্ত করতে পারবে না।
টিপু শুধু Codovaতেই 40000 মানুষ কে খুন আর সমসংখ্যক মানুষ কে জোর করে ইসলামে দীক্ষিত করেছিলেন । 17 বছরের টিপুর রাজত্বকালে 8000 মতো হিন্দু মন্দির আর 50 এর ওপর গির্জা ধ্বংস করা হয়েছিল. প্রায় 3 লক্ষ থেকে 4 লক্ষ হিন্দু আর খ্রিষ্টান কে জোর করে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল , 25000 এর ওপর মহিলাকে জোর করে খৎনা করা হয়েছিল । এর সমস্তই ঐতিহাসিক দলিল রয়েছে ।
টিপু যে গণহারে ধর্মান্তর করছে, তার প্র্যাকটিক্যাল প্রমান হলো, টিপু ও তার বাপ হায়দারের আগে মহীশূর তথা আজকের কর্নাটকে কোনো মুসলমান শাসক ছিলো না। তাই সেই সময় দক্ষিণ ভারতে কোনো মুসলমানও ছিলো না। বর্তমানে কেরালা ও কর্নাটকের যারা মুসলমান বলে নিজেদের পরিচয় দেয়, তারা সবাই টিপুর দ্বারা জোর পূর্বক ধর্মান্তরিত।
রাজা রাজ্য জয় করবে, বিপক্ষকে হত্যা করবে… এসব যুদ্ধের রীতি। এতে সমস্যা নেই। কিন্তু টিপু বা অন্যান্য মুসলিম শাসকরা যা করেছে, তা পরিষ্কারই কোরান বর্ণিত ‘জেহাদ’। রাজ্য জয় ছাড়া রাজার যদি পৃথক উদ্দেশ্য থাকে, তবে তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখা যায় না। চিঠিগুলির ছত্রে ছত্রে লেখা সেই হীন উদ্দেশ্য।
এ যদি মহান হয় তাহলে মহানের সংজ্ঞা কি?
আসল কথা কি জানেন, যতোই অত্যাচারী নৃশংস হোক, যতোই দেশের জন্য নয়, নিজেদের ‘ দার উল ইসলাম’ এর জন্য ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করুক, লড়েছে তো সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশের বিরুদ্ধে – তাই প্রত্যেকটা অত্যাচারী জেহাদী মুসলিম শাসক বামপন্থীদের কাছে এত প্রিয়। আর ভোটের জন্য সংখ্যালঘুদের খুশি করা তো আছেই।
Courtesy : a) Malabar Manual : William Logan
b) Tipu Sultan The Tyrant Of Mysore : S. Balakrishna
আরো বিশদে জানতে হলে –
১) http://agniveer.com/tipu-sultan/
২) https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=367980196876427&id=100009933480528
টিপুর তরবারির হাতলের লেখা জানতে হলে –
https://www.quora.com/What-is-written-on-Tipu-Sultans-sword
https://satyavijayi.com/shocking-you-will-not-believe-what-tipu-sultans-swords-inscription-reads/