ইজরায়েলের বিপক্ষে ভারতের ভোটদান প্রসঙ্গে আমার কিছু ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ….।।

ইজরায়েলের বিপক্ষে ভারতের ভোটদান প্রসঙ্গে আমার কিছু ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ….
1) 2012 পরবর্তী সময়কালে মধ্য প্রাচ্যে রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। Gulf Oil Lobby তে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে। বিশ্ব জনমত ইজরায়েলের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। ১১০-১০ ফলাফল হয়েছে। তাই বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে রাজনীতির এই ভারসাম্যটাকেও অস্বীকার করা যায় না।
2) রাশিয়ান লবির অধিকাংশ রাষ্ট্র শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত, যেমনঃ ইরান। এটা ভুললে চলবে না, যে পাকিস্তানে সুন্নি সংখ্যাধিক্য বর্তমান। ইরান-আফগানিস্তান এরা বন্ধু এবং রাশিয়ান লবির অংশ। কাজেই পাকিস্তানকে চাপে রাখতে এটাও একটা কৌশল।😉
3) রাশিয়া আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু, আমেরিকা বেশি বিশ্বাসের পাত্র নয়। ও সম্পূর্ণ ব্যবসাদার। ব্যবসায়িক স্বার্থ ব্যতিত আর কিছু বোঝে না। তাই ও সময়মতো ভারতের পাশেও দাঁড়ায় আবার ভারতের বিরুদ্ধেও যায়।
আর আমেরিকার ইশারায় ইজরায়েল চলে। তাই রাশিয়ান লবিকে চটিয়ে আমেরিকান লবির কোলে ঢোলে পড়ার কোন অর্থ হয়না।
4) অনেকে বলছেন, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের ইস্যুতে আমেরিকা-ইজরায়েলকে দরকার। কিন্তু আমেরিকার তুলনায় ISIS বা সন্ত্রাসবাদ দমনে রাশিয়ার পারফর্মেন্স যথেষ্ট ভালো এবং রাশিয়াকেও আমাদের দরকার। তাই রাশিয়ান লবিকে অসন্তুষ্ট করা অর্থহীন।
5) ভারত তো আগেই বলে দিয়েছে ইজরায়েলের অস্তিস্ত্ব রক্ষার প্রশ্নে পাশে দাঁড়াবে। ট্রাম্পের সব ইস্যুতে নাচা উচিত নয়। আমেরিকাকে বেশি বন্ধু ভাবা ঠিক না। বেশি শত্রুতাও ঠিক না। কয়েকমাস আগে ভারত ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকে। ইরানের বন্দর, আরবে কর্মরত ৫০ লাখ ভারতীয় থেকে পাওয়া রেমিট্যান্স..অনেক ব্যালান্স রেখে চলতে হয়। কূটনীতি আবেগে চলেনা। এতে ইন্দো ইজরায়েল সম্পর্কে তেমন প্রভাব পড়বেনা।
6) নেতাজী বলেছিলেন, “The crow amongst all birds, the fox amongst all animals and the British imperialists amongst all nations are the most cunning and cruel.”
সেদিনকার ব্রিটিশের ভৌমিক সাম্রাজ্যবাদ আজকের মার্কিন অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদে পর্যবসিত হয়েছে। আর আমেরিকা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনদিন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেবে না। কেবলমাত্র Weapon বিক্রি করবে জাস্ট। আর আমেরিকার কথায় ইজরায়েল চলে। ফলে ইজরায়েল চাইলেও আমেরিকার আপত্তি থাকলে ইজরায়েল ভারতের পাশে দাঁড়াতে পারবে না। এমতাবস্থায় অল্টারনেটিভ থাকা অত্যন্ত আবশ্যক।
7) তেল আমদানির ব্যাপারে কেবল মার্কিন গোষ্ঠীর কাছে নির্ভরশীল থাকলে মার্কিনরা এটার সুবিধা নিয়ে চড়াদামে বিক্রি করতে পারে।
কিন্তু দুটো সোর্সই খোলা থাকলে দুটো লবিই নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করবে। আখেরে ভারত লাভবান হবে।
8 ) 130 কোটির মার্কেট যে দেশের কাছে আসে, সেটার জন্য মার্কিন-ইজরায়েল কখনো ভারতের সাথে সম্পর্ক খারাপ করবে না।
কাজেই নিশ্চিন্ত থাকুন।