সাঈদী চাঁদে বসে বিক্রমের কানেকশন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন!

সাঈদী চাঁদে বসে বিক্রমের কানেকশন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন!

ভারতের ‘বিক্রম’ চাঁদে নামতে ব্যর্থ, একজন বলেছেন, সাঈদী চাঁদে বসে বিক্রমের কানেকশন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন, কারণ তার ভয় ভারত এসে আবার কি ঝামেলা পাকায়? অন্য একজন লিখেছেন, ভারত শুধু শুধু আমেরিকা, রাশিয়ার পরামর্শ নিয়েছে, এরচেয়ে সাঈদীর পরামর্শ নিলে বিনে খরচায় চাঁদে পৌঁছে যেতে পারতো। যুদ্ধপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ফাঁসির ভয়ে চাঁদে চলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তদবির চালিয়ে যাবৎজ্জীবন কারাদন্ড হলে এখন জেলে অবস্থান করছেন। তবে সাকরেদরা এখনো তাঁকে মাঝে মধ্যে চাঁদে দেখেন, কেজানে, হয়তো তিনি চন্দ্রযান আটকে দিতেও পারেন? 

নোয়াখালীর রেজাউল করিম চন্দ্রজান-২ অবতরণ দেখছিলেন। অভিযান ব্যর্থ হলে খুশিতে এক বন্ধুকে নিয়ে তিনি গরম গরম রসগোল্লা খেতে দোকানে যান। দুই বন্ধু মিলে বেশ ক’টি রসগোল্লা খান। এক পর্যায়ে রসগোল্লা রেজাউলের শ্বাসনালিতে আটকে গেলে তিনি কাঁশতে কাঁশতে মাটিতে ঢলে পড়েন। হাসপাতালে নিলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ‘আজাদ ভিশনের’ আজাদ আহমদ লিখেছেন: ব্রেকিং নিউজ: ভারতের এক হাজার রুপি খতম হো গিয়া!! মোদী নেহি মালুম হুয়া। এ কেয়া হো, চাঁদে যাওয়া এত সহজ না মোদী। এ বিষয়ে তিনি একাধিক পোস্টিং দিয়েছেন।

চন্দ্রযান-২ প্রত্যাশিত সাফল্য না পাওয়ায় দারুণ খুশি হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী চৌধুরী ফাওয়াদ হুসেইন টুইট করে সেই আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, চাঁদের অন্ধকার দিকের রহস্য উন্মোচনে বেরিয়ে বিক্রম নিজেই অন্ধকারে হারিয়ে গেছে। এর ভাগ্যে কী ঘটেছে, ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে তা স্পষ্ট নয়। পক্ষে মন্তব্য কম, একজন সাহাবুদ্দিন মাহমুদ লিখেছেন: আমরা বাঙ্গালীরা খুবই বিনয়ী জাতি। নিজেরা তো চাঁদে যেতে পারবো না, আর কাউকে যেতেও দিবোনা। ইনশাল্লাহ বিজয় আমাদের হবেই!

মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘হেরা মনে হয় গোমূত্র দিয়ে চন্দ্রযান পরিষ্কার করে নাই’? আবু নাসের লিখেছেন, আমিন। শহিদুল ইসলাম নাবু লিখেছেন, চাঁদে যাওয়ার নাম করে দেখেন ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে গিয়ে বসে আছে, এখন ধরা খাইবো, তাই বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তৌহিদুল ইসলাম বাবলু লিখেছেন, মালাউনরা কখনোই সফল হবেনা। এম আর পলাশ লিখেছেন, গরুর মুত দিয়ে কি রকেট চলে? আবির সুমন লিখেছেন, ভারতের সর্বপ্রকার মিশন ব্যর্থ হউক এই কামনা করি। আমিন। মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন লিখেছেন, বিশ্বাস করেন, গতকাল থেকে এই নিউজটি’র অপেক্ষায় ছিলাম।

ইসরো কর্মকর্তারা বলেছেন, ৯৭৮ কোটি টাকার এই মহাকাশ যান চন্দ্রযান-২ এর মিশন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়নি। ইসরো হচ্ছে, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন। এবারকার চন্দ্র অভিযান তাদের ১৯৭৯ সালের পরিকল্পনা। ৪৭ দিনের যাত্রা। দিনক্ষণ মেপে মেপে চাঁদে নামছিল বিক্রম। দক্ষিণ মেরুর কাছে, যেখানে আজ পর্যন্ত কেউ পা রাখেনি। সবকিছু নিখুঁত ছিলো। সমস্যা হলো, চাঁদমামার থেকে ২.১ কিলোমিটার দূরে ইসরো যোগাযোগ হারিয়ে ফেলল বিক্রমের সঙ্গে! মিশন ব্যর্থ। ভারতীয়রা বলছেন, ৯৫% সফল, অনেকেই চন্দ্রজান-৩ মিশন শুরু করার পক্ষে মত দিচ্ছেন।

চন্দ্রযান-১ দক্ষিণ মেরুতে যাওয়ার আগেই ধ্বংস  হয়েছিলো। এবারকার অভিযানের কৃতিত্ব দেয়া হচ্ছে ডঃ কৈলাস ভাদিভো শিবন-কে, তিনি ইসরোর চেয়ারম্যান। ভারতের মহাকাশ গবেষণায় সাফল্যের অন্যতম কারিগর। চাঁদের কাছে পৌঁছে যাওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুর পিছনে রয়েছে তাঁর প্রখর মেধা। অথচ এই ভদ্রলোক স্কুল জীবন কেটেছে খালি পায়ে। প্রথম জুতা পড়েন কলেজে এসে। বাবা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে রাজি ছিলেন না? আম বাগানে চাষের কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করেই তিনি ইসরো’র চেয়ারম্যান পর্যন্ত পৌঁছেছেন। একই সাথে দুই মহিলা মিশন ডিরেক্টর ‘রকেট ওমেন’ রিতু কারিদহাল শ্রীবাস্তব এবং প্রজেক্ট ডিরেক্টর বনিতা এম- যথেষ্ট প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। তবে বলা হচ্ছে, বাঙ্গালী উপদেষ্টা ডঃ জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী, আসামের এনআরসি তালিকায় নেই?  
আমেরিকা এক ডজনের বেশিবার চেষ্টা করে চাঁদে গেছে। রাশিয়া অর্ধ-ডজন বার। ভারতের এই ব্যর্থতায় খুশি হবার কোন কারণ নেই? সফল মানুষ অন্যের ব্যর্থতায় উপহাস বা কটুক্তি করেনা। কারণ সফলতার পেছনে ব্যর্থতার অধ্যায় থাকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে বিজ্ঞানীদের সাথে চন্দ্রজান-২ অবতরণ দেখছিলেন। শেষমুহূর্তে অভিযান ব্যর্থ হলে তিনি ইসরোর প্রধানকে বুকে জড়িয়ে ধরে সাহস জুগিয়েছেন, আবার এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখিয়েছন, বিজ্ঞানীদের চোখের জল মুছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এই মহাযাত্রার পেছনে কতজনের ত্যাগ-তিতিক্ষা-মেধা আছে, তা বুঝতে অক্ষমরাই শুধু উপহাস করতে পারে। এতে ভারতের কোন ক্ষতি হচ্ছেনা, আমাদের মানষিকতা প্রকাশ পাচ্ছে।#