পশ্চিম আমাদের টেকনোলজি দেবে, তার বদলে আমরা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা তাদের দেবো।

Chayan Mukherjee এর কলমে –

কয়েকজনের অনুরোধে রাজপুত ইতিহাস নিয়ে পোস্ট করা বন্ধ করলাম। তবে কয়েকটা কথা বলে নেওয়া প্রয়োজনীয়।

প্যাটেল এবং চক্রবর্তী রাজাগোপালচারিয়া তৎকালীন কংগ্রেসের হিন্দুত্ববাদী মুখ ছিলেন। চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারিয়াকে তো বামুনবাদীও বলা যেতে পারে। তো দেশভাগের প্রধান কারিগর এই দুই হিন্দুত্ববাদী নেতা কি বাঙালি হিন্দুর স্বার্থ রক্ষা করেছিলেন, বিরাট হিন্দু ঐক্যের কথা ভেবে ?

একেবারেই না। বাংলা এবং পাঞ্জাব , ভারতের স্বাধীনতার জন্য “স্টাম্বলিং ব্লক” এরকম শব্দগুচ্ছ ওই চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারিয়াই ব্যবহার করেছিলেন। ভাবুন তো, যে দুটো জাত দেশের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে বেশি রক্ত দিলো, তারাই নাকি দেশের স্বাধীনতার পক্ষে অন্তরায়।

মজা এখানেই।গান্ডু বিশ্বহিন্দুর দল একটা কথা বুঝতে পারছে না। মিত্রতা হয় সমানে সমানে।

বিবেকানন্দের লেখাতেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। পশ্চিম আমাদের টেকনোলজি দেবে, তার বদলে আমরা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষা তাদের দেবো। ভিক্ষার পাত্র নিয়ে দাঁড়ালে খিল্লি হতে হবে। এজন্যেই উনি রমাবাই এর কার্যকলাপ কে সমর্থন করেননি। ভিক্ষাবৃত্তি দিয়ে কোনো জাত বড় হয়নি। আপনারা যদি আশা করে থাকেন জিহাদিদের তান্ডব থেকে খোট্টাভাইরা, রাজপুত ভাইরা আমাদের বাঁচিয়ে দিয়ে যাবে, সে আশা জলদি ত্যাগ করুন।  যতক্ষন অব্দি বিরাট হিন্দু অবাঙালীদের কাছে আমরা ভিক্ষার কৌটো নাচিয়ে যাবো, তারা আমাদের খিল্লি করে যাবে, বাঙালি হিন্দুর স্বার্থ নিয়ে একটুও ভাববে না।

আপনি মহারাষ্ট্রে গিয়ে মারাঠিদের নিয়ে খিল্লি করতে পারবেন? তামিলনাড়ুতে গিয়ে তামিল ইতিহাস নয় খিল্লি করতে পারবেন? একদমই না। কোনো জাত হিন্দুত্বের দোহাই দিয়ে নিজের জাতের অপমান মেনে নেবে না।

তাই হিন্দু ঐক্যের সূত্র ধরে সবাইকে এক করার কথা বললে, সবাইকে সমান দম্মান দিতে হবে। সেজন্যেই চাই নিজের জাতের ইতিহাস , নিজের কালচার এর চর্চা করা। এই চর্চা করা মানেই হিন্দু ঐক্যের বিরোধিতা করা নয়। বাঙালি হিন্দু হয়েও আপনি সেক্সি দুর্গার নিন্দা করতে পারেন, জাতীয় স্তোত্র গাওয়া হলে উঠে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। তার জন্য নিজের আইডেন্টিটি ত্যাগ করার প্রয়োজন হয় না। কেউ ত্যাগ করে না। বাঙালির অপমানের প্রতিবাদ করলেই কেউ সেকু মাকু হয়ে যায় না।

আর যদি আমরা সেই আইডেন্টিটি ত্যাগ করি, সেই মুহূর্ত থেকেই আমরা খিল্লির পাত্র হয়েই থেকে যাবো। বাঙালিত্ব হিন্দুত্বের পরিপন্থী নয়। পালানোর ইতিহাস, লজ্জার ইতিহাস সব জাতের আছে, এক বাঙালির নয়।

বেঁচে থাকুক নরেন্দ্রাদিত্য শশাঙ্ক, রাজা দনুজমর্দন গনেশ, কেদার রায়, সীতারাম , গোপাল পাঁঠারএর উত্তরাধিকারীরা, বেঁচে থাকুক বাঙালি হিন্দু। আমি গর্বিত আমি বাঙালি।