নারী ও হিজড়ারা কেন ইসলাম পালন করবে ???

হিজড়া ও নারীরা বেহেস্তে কি পাবে ?
লিখেছেনঃ আল্লামা আব্দুল কাদের (তারিখঃ মঙ্গলবার, ২৮/০১/২০১৪ – ২৩:৩৫)
ধর্মপ্রান সবাই বিশ্বাস করে – জন্ম ও মৃত্যু সৃষ্টিকর্তার হাতে। তেমনি প্রতিটি ধর্মপ্রান মুসল্লীও বিশ্বাস করে আল্লাহই জীবন ও মৃত্যু দেয়। তার অর্থ – কে নারী হবে , কে পুরুষ হবে , কে হিজড়া হবে – সবই আল্লাহর কারসাজি। এতে তাদের পিতা মাতার কোন হাত নেই।
কোরানের পাতায় পাতায় লেখা আছে বেহেস্তে পুরস্কার হিসাবে কি পাওয়া যাবে। সেই আয়াতগুলো আর একবার দেখা যাক :
কোরানে বেহেশ্তের চিত্র
কোরান ৫২: ১৭-২০: মুমিনগণ থাকবে সুখময় জান্নাতে, যেখানে আনন্দ-উল্লাস করে বেড়াবে আল্লাহ দানে… তাদের বলা হবেঃ তোমাদের কৃতকর্মের জন্য খাও-দাও, ফূর্তি করো, এবং তারা সারি-বাধা সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে এবং আমরা (আল্লাহ) তাদেরকে যৌন-উন্মাদক চোখওয়ালা পরম সুন্দরী হুরদের তাদের সঙ্গী বানাব।
কোরান ৫২:২২-২৫: বেহেশ্তে তারা ফলমূল এবং মাংস যা চাইবে আমি (আল্লাহ) তাই দেব। সেখানে তারা একে অপরকে লোভনীয় পানপাত্র দেবে; যেখানে অসার বাতুলতা নেই, নেই কোন পাপকর্ম। সেখানে তাদের সেবায় নিবেদিত সুরক্ষিত মুক্তার ন্যায় সুন্দর কিশোরেরা ঘুরাফেরা করবে। তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
কোরান ৩৭:৪০-৪৯: তাদের জন্য থাকবে আনন্দ-উল্লাস ও সম্মান-সম্ভ্রম আল্লাহর বিলাস বাগানে। সিংহাসনে মুখোমুখি বসবে তারা এবং স্বচ্ছ ঝর্ণা থেকে স্ফটিকের ন্যায় সাদা মদের পেয়ালা থেকে পান করবে তারা, যা হবে চমৎকার মজাদার ও সুস্বাদু কিন্তু তারা হবে না মাতাল। এবং তাদের পাশে থাকবে লাজুক ও মন-মাতানো আয়তলোচনা চিরকুমারী হুরী, যেন সুরক্ষিত ও নাজুক শুভ্র ডিম্বের ন্যায়।
কোরান ৪৪:৫১-৫৫: হ্যাঁ, সঠিক পথের অনুসারীদের জন্য থাকবে সুরক্ষিত আবাস — বিলাস-বাগান ও ঝর্ণার মাঝে। চমৎকার কারুকার্য বিশিষ্ট সিল্কের কাপড়ে সজ্জিত হয়ে তারা মুখামুখি বসবে; এবং আমরা (আল্লাহ) তাদের সঙ্গী বানাব সুন্দরী, টানা-টানা ও যৌন-উন্মাদক চোখ-ওয়ালা শ্বেতকায় হুরীদেরকে।
কোরান ৫৫: ৫৬-৫৭: তাদের মধ্যে থাকবে আয়তলোচনা লজ্জাবতি চিরকুমারী হুরীগণ, যাদেরকে কোন মানুষ বা জ্বিন কখনোই স্পর্শ করেনি…
কোরান ৫৫:৫৬-৭৪: সেথায় থাকিবে প্রবাল ও পদ্মরাগ সদৃশ যুবতীগণ (হুরী), দুটি ঘন সবুজ উদ্যান, উদ্বেলিত দু’টি ঝর্ণা। সেথায় আছে ফলমূল, খেজুর ও আনার, আছে সুশীলা সুন্দরী যুবতীরা, সুনয়না ও তাবুতে অবস্থানকারী কুমারী হুরবালা – যাদেরকে মানব অথবা জ্বিন কখনোই স্পর্শ করেনি।
কোরান ৫৬:১৫-২৩: তারা স্বর্ণখচিত সিংহাসনে হেলান দিয়ে মুখোমুখিভাবে বসবে; তাদের আশে-পাশে ঘুরাফেরা করবে মুক্তার ন্যায় চির-কিশোরেরা খাটি সুরাপূর্ণ পানপাত্র হাতে নিয়ে; যা পান করলে তাদের শীরঃপীড়া হবে না; আর থাকবে তাদের পছন্দমত পাখীর মাংস; থাকবে আয়োতলোচনা (টানা চোখের) কুমারী হুরীগণ; আবরণে রক্ষিতা মুক্তার ন্যায়; ইহা তাদের কর্মফল।
কোরান ৭৮:৩১-৩৬: মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য; বাগান ও আঙ্গুর রস এবং সমবয়স্ক সুন্দরী উন্নতবক্ষা (তীরের ন্যায় খাড়া-খাড়া স্তনযুগল) কুমারী যুবতীগণ এবং তাদের হাতে থাকবে শরাব ভর্তি পেয়ালা, যা আল্লাহর কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার।
কোরান ৭৬:১৪-১৯: বেহেশ্তে থাকবে বৃক্ষছায়া ও যাবতীয় ফলমুল, যা চাবে তাই পরিবেশন করা হবে রৌপ্য-স্ফটিকের পাত্রে; আরও পান করতে দেওয়া হবে যাঞ্জাবিলের মিশ্রিত সালসা এবং সালসাবীল নামে এক ঝর্ণা; তাদের কাছে ঘুরাফেরা করিবে বিক্ষিপ্ত মুক্তার ন্যায় চির কিশোর বালকগণ।
কোরান ৫৬:৩৪-৩৭: তথায় থাকিবে তাদের জন্য উচ্চ শয্যা-সংগিনী, যাদেরকে সৃজিয়াছি বিশেষভাবে চিরকুমারী (ever virgin) ও সমবয়স্কা করে।
কোরান ২:২৫: হে নবী (সাঃ) যারা ইমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে প্রবাহমান থাকবে নদী। যখনই তারা কোন ফলমুল পাবে তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যাহা আমরা পৃথিবীতেও পেয়েছিলাম। বস্তুত তাদেরকে একই রকম ফল দেওয়া হবে, এবং সেখানে থাকবে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকুল আর সেখানে তারা অনন্তকাল বাস করিবে।
কোরান ৪৭:১৫: মুমিন মুসলমানদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপ: তাতে আছে পানির নদী, নির্মল দুধের নদী যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পান-কারীদের জন্য সুস্বাদু শরাবের নদী এবং বিশুদ্ধ মধুর নদী। তথায় তাদের জন্য আছে রকমারি ফলমুল ও তাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা থাকবে জাহান্নামে অনন্তকাল এবং যাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি, যা পান করিলে তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন বিছিন্ন হবে?
উক্ত আয়াতসমূহ থেকে বেহেস্তে যে সব জিনিস পাওয়া যাবে তা হলো নিম্নরূপ :
যৌন উন্মাদনা সৃষ্টিকারী , উন্নত ও খাড়া স্তন বিশিষ্ট কুমারী নারী
অঢেল মদ
মদ পরিবেশনকারী বালকগন ( গেলমান)
দেখা যাচ্ছে উক্ত উপাদান সমূহের সবগুলোই একমাত্র পুরুষেরই কাজে লাগবে। সেটা আরও বোঝা যাচ্ছে আল্লাহ বার বার বলেছে যে সেই উন্নত ও খাড়া স্তনবিশিষ্ট কুমারী নারীদের সাথে বেহেস্তবাসী পুরুষদের বিয়ে দিয়ে দেবে। অর্থাৎ উক্ত উপাদানের কোনটাই নারী বা হিজড়াদের জন্য তৈরী করা হয় নি।
কোরানের কোন আয়াতেই বলা হয় নি নারী বা হিজড়াদের জন্য আল্লাহ বেহেস্তে কি তৈরী করে রেখেছে। তাছাড়া বেহেস্তের বর্ণনায় আর কোন উপাদানও দেখা যায় না যা নারী বা হিজড়াদের কোন ফুর্তির কাজে লাগে।
তাই কৌতুহলী মানুষ হিসাবে আমার প্রশ্ন- আল্লাহ কি শুধু মাত্র পুরুষদের জন্যই বেহেস্ত তৈরী করেছে ? তাই যদি করে থাকে , তাহলে নারী ও হিজড়ারা কেন ইসলাম পালন করবে ?