”রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সঠিক রাস্তায় হাঁটছে’
হিন্দুস্থান টাইমস ২রা সেপ্টেম্বর ২০১৭ বলেছে, বাংলাদেশ সরকার নয়া দিল্লীকে নিশ্চিত করেছে যে, লস্কর-ই-তৈবা রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসে প্ররোচিত করছে। শিশির গুপ্তের এই রিপোর্টের শিরোনাম হচ্ছে, ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে লস্কর রোহিঙ্গাদের জঙ্গী বানাচ্ছে’। রিপোর্টে বলা হয়, শুধুমাত্র দিল্লীর আশেপাশে প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, যাদের অনেকেই প্যান-ইসলামিক গ্রূপের প্রভাবে জঙ্গী ধ্যান-ধারণা পোষণ করে? এই রিপোর্টে বলা হয়, প্যান-ইসলামিক গ্রূপগুলো রোহিঙ্গাদের একই সাথে ভারত, মায়ানমার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্যে উস্কানী এবং সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে। অন্য এক রিপোর্টে বলা হয়, ভারত তার দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর একটি বিবৃতি আটকে দিয়েছে চীন। বৃটেনের উদ্যোগে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।গতবছর আমেরিকার উদ্যোগে অনুরূপ একটি বৈঠকের পর চীন একইভাবে বিবৃতি দেয়া ঠেকিয়ে দিয়েছিলো। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করেছে।
শুক্রবার (১লা সেপ্টেম্বর) মায়ানমারের হেলিকপ্টার কক্সবাজারের উখিয়ায় বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করেছে। বাংলাদেশ এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ঢাকাস্থ মায়ানমার দূতাবাসে পাঠানো এক কড়া প্রতিবাদ লিপিতে বাংলাদেশ বলেছে, শুক্রবার ছাড়াও মায়ানমারের হেলকপ্টার ২৬ ও ২৭ আগষ্ট বাংলাদেশের আকাশসীমা লংঘন করেছিলো। রোহিঙ্গা জঙ্গী ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের সাথে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রথম আরাকান থেকে মুসলমানদের সাথে সাথে হিন্দুরাও সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাদের তাদের ওপর কারা আক্রমণ চালাচ্ছে তা স্পষ্ট নয়? কুতুপালং মন্দিরে আশ্রয় নেয়া হিন্দু নারী-পুরুষ বলেছেন, যারা মারতে এসেছিলো তাদের পুরো দেহ কালো পোশাকে আবৃত ছিলো, শুধু চোখ দু’টো দেখা যাচ্ছিলো। প্রশ্ন উঠেছে, ওরা সৈন্য না জঙ্গী রোহিঙ্গা? ইতোপূর্বে প্রাপ্ত বিবিধ ভিডিও-তে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা জ্বিহাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত। নুতন করে এবারের সঙ্কটের সৃষ্টি গত ২৫শে আগষ্ট। জঙ্গী রোহিঙ্গারা সেদিন একসাথে বেশকটি পুলিশ চৌকিতে হামলা চালিয়ে ১শরও বেশি পুলিশ-সেনা-সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ দিচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২রা সেপ্টেম্বর টুইট করেছেন যে, মায়ানমারের সাথে ভারত সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। মোদী মঙ্গলবার মায়ানমার পৌঁছবেন। দু’দিনের এই সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা স্থান পাবে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এবারকার রোহিঙ্গা সমস্যাটি মূলত: জঙ্গী সমস্যা, ফলশ্রুতিতে ‘কোলেটারেল ডেমেজ’ হিসাবে সাধারণ মুসলিম রোহিঙ্গারা আশ্রয়চ্যুত হচ্ছে। এদিকে থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই সম্ভবত: ইসলামী জঙ্গীগ্রূপ হিন্দুদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে থাকতে পারে? মায়ানমার সৈন্যরা আক্রমণ করলে তাদের মুখ ঢাকার কোন কারণ ছিলোনা? বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া হিন্দুরা লেননি যে, সৈন্যরা তাদের হত্যা করেছে। স্বভাবতঃই প্রশ্ন জাগে, তাহলে কেন এবং কারা হিন্দুদের হত্যা করছে? ২রা সেপ্টেম্বর আরাকানের বলীর বাজারে কয়েক ডজন হিন্দুকে হত্যার প্রাক্কালে সৈন্যরা তাদের রক্ষা করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ আকিয়াব জেলার হিন্দুদের সৈন্যরা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, আরাকানের হিন্দুরা মায়ানমারের নাগরিক। কিন্তু রোহিঙ্গারা নাগরিক নন? ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে মায়ানমারের নাগরিকত্ব পেতে হলে ‘বার্মীজ জাতীয়তাবাদ’ স্বীকার করতে হয়, যা রোহিঙ্গারা স্বীকার করেনা। একই আইন বলে, রোহিঙ্গারা মায়ানমারের নাগরিক নন, এদের বলা হয় ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী মুসলমান’।
১৯৭১ সালে ভারত যেমনি বাঙ্গালীদের জন্যে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলো, আমাদের দেশের কিছু বাম ও মৌলবাদী গোষ্ঠী এখন সেই দাবি করছেন। বাংলাদেশের উচিত হবেনা সীমান্ত খুলে দেয়া, কারণ মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি আর রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি এক নয়? যারা এসব দাবি করছেন, তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া যায় যে, ২৫শে মার্চের হত্যাযজ্ঞের পরই কেবল বাঙ্গালীরা পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। এক কোটি শরণার্থী ভারতে গিয়ে ইয়াবা ব্যবসা, গুম করে মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ ইত্যাদি অপকর্ম করেনি। পক্ষান্তরে আশ্রিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত। রোহিঙ্গা না থাকলে ইয়াবা ব্যবসা থাকবেনা? বাংলদেশী পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গারা বিদেশে গিয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে, এ সংবাদ তো সবার জানা এবং এতে দেশের ভাবমুর্ক্তি নষ্ট হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্যে যারা কান্না করছেন, তাদের আগে দেশের স্বার্থ দেখা উচিত? সিরীয় শরণার্থীদের গ্রহণে এবার ইউরোপ-আমেরিকা তেমন আগ্রহ দেখায়নি, কারণ শরণার্থীদের সাথে সাথে জঙ্গীরাও ঢুকবে বলে; রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে জঙ্গীরা যে বাংলাদেশে ঢুকবে না এর গ্যারান্টি কোথায়?
সিরীয় শরণার্থীদের সময় প্রশ্ন উঠেছিলো, মুসলিম দেশগুলো সিরীয় শরণার্থীদের নেয়না কেন? একইভাবে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো নেয়না কেন? বাংলাদেশ এই দায় নেবে কেন? মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলো, মায়ানমার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। অং সূচি জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ওদেরকে রোহিঙ্গা বলা না হয়? মায়ানমার হয়তো রোহিঙ্গাদের আরাকানে থাকতে দিতে চায়না, কিন্তু বাংলাদেশ তাদের স্থায়ী ঠিকানা হতে পারেনা? সামাজিক মিডিয়ায় কেউ কেউ মন্তব্য করছেন, ‘হিন্দুদের খেদিয়ে রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দেয়া হোক’। মস্কোয় মায়ানমার দূতাবাস এবং চেচনিয়ায় রোহিঙ্গাদের সমর্থনে বিক্ষোভ হয়েছে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটি এরআগে রোহিঙ্গাদের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছিলো। প্রশ্ন উঠেছে, নিজদেশে নাসিরনগরের ঘটনায় উদাসীন থাকলেও, বিদেশী রোহিঙ্গাদের প্রতি এত দরদ কেন? অনেকে বলতে চান, বৌদ্ধরা একটি পিঁপড়াও মারতে চায়না, অথচ মায়ানমারে ওরা মানুষ মারছে? জেনেভা থেকে একজন বৌদ্ধ অরুন বড়ুয়া এর উত্তরে বলেছেন, বিষয়টি ধর্মের নয়, রাষ্ট্রের।
মায়ানমার সরকার ও মিডিয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসী হিসাবে আখ্যায়িত করে থাকে। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাজনীতি করেছিলো। মায়ানমার সেই সুযোগটি নেয়? তুরস্ক বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্যে দরজা খুলে দিন, খরচ দেবে তুরস্ক। বাংলাদেশ বলতে পারে, রোহিঙ্গাদের তুরস্ক নিয়ে যান, খরচ দেবে বাংলাদেশ। তুরস্কের এরদোগান বাংলাদেশকে ‘ট্রোজান হর্স’ আমদানীর পরামর্শ দিচ্ছেন। তুরস্ক রোহিঙ্গাদের নেয়না কেন? বহির্বিশ্বে রোহিঙ্গাদের লবিং বেশ জোরদার এবং এরা এখন বলছে যে, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মী (এআরএসএ) গঠিত হয়েছে এবং তারা আরাকানের স্বাধীনতার জন্যে বার্মার সাথে যুদ্ধ করছে। ঢাকার দৈনিক ভোরের কাগজ ৩০শে আগষ্ট প্রধান শিরোনাম করেছে:’সশস্ত্র যুদ্ধের পথে রাখাইন!: নারী-শিশু বাংলাদেশে পাঠিয়ে লড়ছেন রোহিঙ্গা পুরুষরা’। প্রশ্ন হলো, আসলে কি এআরএসএ আদৌ গঠিত হয়েছে? আর গঠিত হলে এর পেছনে কারা? রাখাইন প্রদেশের চতুর্দিকে যেসব দেশ আছে, অর্থাৎ বার্মা, চীন, ভারত বা বাংলাদেশ কেউ এতে নেই, তাহলে? লস্কর-ই-তৈবা; আইসিস, না আল-কায়দা বা আইএসআই?
যদি সত্যিকার অর্থেই রোহিঙ্গারা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়, তাহলে বাংলাদেশ কোনভাবেই বিচ্ছিন্নবাদকে সমর্থন জানাতে পারেনা। এএফপি ২৯শে আগষ্ট জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা জঙ্গী দমনে মায়ানমারের সাথে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাব যে যথার্থ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকাংশ নারী-শিশু, এরমানে পুরুষরা সন্ত্রাসে জড়িত, বা বিচ্ছিন্নবাদী, বাংলাদেশ কেন এদের সমর্থন দেবে? বিশেষত: ভারত ও চীনের বিরুদ্ধে গিয়ে বাংলাদেশের কি লাভ? শুধু মুসলমান বলে রোহিঙ্গাদের সমর্থন দিতে হবে কেন? আইসিস বা আল-কায়দাও মুসলমান, বাংলাদেশ কি তাদের সমর্থন দেয়? মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যেটুকু সহায়তা করছে, তাই যথেষ্ট। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সঠিক রাস্তায় হাটছে। ১৯৭৮ সালে সরকারিভাবে ২লক্ষ ৭ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে আশ্রয় নেয়, তখন তাদের কাছে বার্মার কাগজপত্র ছিলো। আন্তর্জাতিক চাপে মায়ানমার তখন এদের অনেককে ফেরত নিতে বাধ্য হয়। পুনরায় ১৯৯০-৯২ সালে মায়ানমার প্রায় ২লক্ষ ৯২ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে।
রোহিঙ্গা সমস্যাটি নুতন নয়, সেই ১৯৪৮-৫০ সালেও এই সমস্যা ছিলো। পার্থক্য হলো, আগে এর রূপ জঙ্গী ছিলোনা, এখন এটি জঙ্গী সমস্যা। বাংলাদেশ আমলে জিয়া-এরশাদ-বেগম জিয়া এ সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন, এবং রোহিঙ্গাদের ভারত-বিরোধিতায় কাজে লাগান। এই প্রথম শেখ হাসিনার সরকার সঠিক পথে হাঁটছেন। এই সমস্যা সামনে আরো বাড়বে। মায়ানমারের দীর্ঘদিনের বন্ধু চীন। মায়ানমারের সাথে ভারতের সম্পর্ক ভালো। মানবিক কারণে আশ্রয় ও সাহায্য ব্যাতিত কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশের উচিত হবেনা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে যাওয়া? রোহিঙ্গা ইস্যু বৌদ্ধ-মুসলিম সমস্যা নয়, কারণ বার্মার মূল ভূখণ্ডে বসবাসরত মুসলমনাদের সাথে বৌদ্ধদের কোন সমস্যার কথা কারো জানা নেই। রোহিঙ্গাদের জন্যে সীমান্ত খুলে দিলে, ভবিষ্যতে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আটকে পড়া পাকিস্তানীরা মিলে বাংলাদেশের চেহারাটা পাল্টে দিতে পারে? বাংলাদেশকে ধর্য্য সহকারে এই ডেলিকেট ইস্যু সমাধান করতে হবে। এবং ভারত, আমেরিকা ও চীনের সাথে হাত মিলিয়েই তা করতে হবে?
শেষ করবো লিও টলস্টয়ের একটি গল্প দিয়ে: এক সাপ বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে এক গর্তে বাস করতো। একদিন ঝড়-বৃষ্টিতে সাপটি দেখলো অদূরে এক সজারু আধমরা অবস্থায় পড়ে আছে। সাপটির দয়া হলো, সজারুকে নিজের গর্তে নিয়ে এলো। বললো: আপাতত: তুমি আমাদের সাথে থাকো, সুস্থ হলে চলে যেও? এরপর কিছুদিন চলে গেলো, আবহাওয়া ভালো হয়ে গেছে, সজারু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। কিন্তু সজারু যাচ্ছেনা। সাপ তার ছোট্ট গর্তে সজারুকে নিয়ে থাকতে লাগলো। সজারুর গায়ের কাঁটায় সাপের বাচ্চাদের অবস্থা কাহিল। অবস্থা চরমে উঠলে সাপ একদিন সজারুকে বললো: ভাই সজারু, তোমার গায়ের কাঁটার খোঁচায় আমার বাচ্চাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। ভাই, তুমি এবার আমাদের বাসা থেকে যাও। সজারু একটু রেগেই বললো: ‘আমার তো কোন অসুবিধা হচ্ছেনা; যাদের অসুবিধা হচ্ছে তারা চলে যাকনা কেন?’ মহামতি টলস্টয়ের গল্পটি কি রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে একেবারেই অপ্রাসংগিক?
শিতাংশু গুহ,
নিউইয়র্ক, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০১৭।ছে’
হিন্দুস্থান টাইমস ২রা সেপ্টেম্বর ২০১৭ বলেছে, বাংলাদেশ সরকার নয়া দিল্লীকে নিশ্চিত করেছে যে, লস্কর-ই-তৈবা রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসে প্ররোচিত করছে। শিশির গুপ্তের এই রিপোর্টের শিরোনাম হচ্ছে, ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে লস্কর রোহিঙ্গাদের জঙ্গী বানাচ্ছে’। রিপোর্টে বলা হয়, শুধুমাত্র দিল্লীর আশেপাশে প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, যাদের অনেকেই প্যান-ইসলামিক গ্রূপের প্রভাবে জঙ্গী ধ্যান-ধারণা পোষণ করে? এই রিপোর্টে বলা হয়, প্যান-ইসলামিক গ্রূপগুলো রোহিঙ্গাদের একই সাথে ভারত, মায়ানমার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্যে উস্কানী এবং সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে। অন্য এক রিপোর্টে বলা হয়, ভারত তার দেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর একটি বিবৃতি আটকে দিয়েছে চীন। বৃটেনের উদ্যোগে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।গতবছর আমেরিকার উদ্যোগে অনুরূপ একটি বৈঠকের পর চীন একইভাবে বিবৃতি দেয়া ঠেকিয়ে দিয়েছিলো। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করেছে।
শুক্রবার (১লা সেপ্টেম্বর) মায়ানমারের হেলিকপ্টার কক্সবাজারের উখিয়ায় বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করেছে। বাংলাদেশ এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ঢাকাস্থ মায়ানমার দূতাবাসে পাঠানো এক কড়া প্রতিবাদ লিপিতে বাংলাদেশ বলেছে, শুক্রবার ছাড়াও মায়ানমারের হেলকপ্টার ২৬ ও ২৭ আগষ্ট বাংলাদেশের আকাশসীমা লংঘন করেছিলো। রোহিঙ্গা জঙ্গী ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের সাথে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রথম আরাকান থেকে মুসলমানদের সাথে সাথে হিন্দুরাও সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাদের তাদের ওপর কারা আক্রমণ চালাচ্ছে তা স্পষ্ট নয়? কুতুপালং মন্দিরে আশ্রয় নেয়া হিন্দু নারী-পুরুষ বলেছেন, যারা মারতে এসেছিলো তাদের পুরো দেহ কালো পোশাকে আবৃত ছিলো, শুধু চোখ দু’টো দেখা যাচ্ছিলো। প্রশ্ন উঠেছে, ওরা সৈন্য না জঙ্গী রোহিঙ্গা? ইতোপূর্বে প্রাপ্ত বিবিধ ভিডিও-তে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা জ্বিহাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত। নুতন করে এবারের সঙ্কটের সৃষ্টি গত ২৫শে আগষ্ট। জঙ্গী রোহিঙ্গারা সেদিন একসাথে বেশকটি পুলিশ চৌকিতে হামলা চালিয়ে ১শরও বেশি পুলিশ-সেনা-সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ দিচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২রা সেপ্টেম্বর টুইট করেছেন যে, মায়ানমারের সাথে ভারত সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। মোদী মঙ্গলবার মায়ানমার পৌঁছবেন। দু’দিনের এই সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা স্থান পাবে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এবারকার রোহিঙ্গা সমস্যাটি মূলত: জঙ্গী সমস্যা, ফলশ্রুতিতে ‘কোলেটারেল ডেমেজ’ হিসাবে সাধারণ মুসলিম রোহিঙ্গারা আশ্রয়চ্যুত হচ্ছে। এদিকে থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই সম্ভবত: ইসলামী জঙ্গীগ্রূপ হিন্দুদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে থাকতে পারে? মায়ানমার সৈন্যরা আক্রমণ করলে তাদের মুখ ঢাকার কোন কারণ ছিলোনা? বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া হিন্দুরা লেননি যে, সৈন্যরা তাদের হত্যা করেছে। স্বভাবতঃই প্রশ্ন জাগে, তাহলে কেন এবং কারা হিন্দুদের হত্যা করছে? ২রা সেপ্টেম্বর আরাকানের বলীর বাজারে কয়েক ডজন হিন্দুকে হত্যার প্রাক্কালে সৈন্যরা তাদের রক্ষা করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ আকিয়াব জেলার হিন্দুদের সৈন্যরা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, আরাকানের হিন্দুরা মায়ানমারের নাগরিক। কিন্তু রোহিঙ্গারা নাগরিক নন? ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে মায়ানমারের নাগরিকত্ব পেতে হলে ‘বার্মীজ জাতীয়তাবাদ’ স্বীকার করতে হয়, যা রোহিঙ্গারা স্বীকার করেনা। একই আইন বলে, রোহিঙ্গারা মায়ানমারের নাগরিক নন, এদের বলা হয় ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী মুসলমান’।
১৯৭১ সালে ভারত যেমনি বাঙ্গালীদের জন্যে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলো, আমাদের দেশের কিছু বাম ও মৌলবাদী গোষ্ঠী এখন সেই দাবি করছেন। বাংলাদেশের উচিত হবেনা সীমান্ত খুলে দেয়া, কারণ মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি আর রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি এক নয়? যারা এসব দাবি করছেন, তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া যায় যে, ২৫শে মার্চের হত্যাযজ্ঞের পরই কেবল বাঙ্গালীরা পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। এক কোটি শরণার্থী ভারতে গিয়ে ইয়াবা ব্যবসা, গুম করে মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ ইত্যাদি অপকর্ম করেনি। পক্ষান্তরে আশ্রিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত। রোহিঙ্গা না থাকলে ইয়াবা ব্যবসা থাকবেনা? বাংলদেশী পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গারা বিদেশে গিয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে, এ সংবাদ তো সবার জানা এবং এতে দেশের ভাবমুর্ক্তি নষ্ট হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্যে যারা কান্না করছেন, তাদের আগে দেশের স্বার্থ দেখা উচিত? সিরীয় শরণার্থীদের গ্রহণে এবার ইউরোপ-আমেরিকা তেমন আগ্রহ দেখায়নি, কারণ শরণার্থীদের সাথে সাথে জঙ্গীরাও ঢুকবে বলে; রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে জঙ্গীরা যে বাংলাদেশে ঢুকবে না এর গ্যারান্টি কোথায়?
সিরীয় শরণার্থীদের সময় প্রশ্ন উঠেছিলো, মুসলিম দেশগুলো সিরীয় শরণার্থীদের নেয়না কেন? একইভাবে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো নেয়না কেন? বাংলাদেশ এই দায় নেবে কেন? মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলো, মায়ানমার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। অং সূচি জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ওদেরকে রোহিঙ্গা বলা না হয়? মায়ানমার হয়তো রোহিঙ্গাদের আরাকানে থাকতে দিতে চায়না, কিন্তু বাংলাদেশ তাদের স্থায়ী ঠিকানা হতে পারেনা? সামাজিক মিডিয়ায় কেউ কেউ মন্তব্য করছেন, ‘হিন্দুদের খেদিয়ে রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দেয়া হোক’। মস্কোয় মায়ানমার দূতাবাস এবং চেচনিয়ায় রোহিঙ্গাদের সমর্থনে বিক্ষোভ হয়েছে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটি এরআগে রোহিঙ্গাদের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছিলো। প্রশ্ন উঠেছে, নিজদেশে নাসিরনগরের ঘটনায় উদাসীন থাকলেও, বিদেশী রোহিঙ্গাদের প্রতি এত দরদ কেন? অনেকে বলতে চান, বৌদ্ধরা একটি পিঁপড়াও মারতে চায়না, অথচ মায়ানমারে ওরা মানুষ মারছে? জেনেভা থেকে একজন বৌদ্ধ অরুন বড়ুয়া এর উত্তরে বলেছেন, বিষয়টি ধর্মের নয়, রাষ্ট্রের।
মায়ানমার সরকার ও মিডিয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসী হিসাবে আখ্যায়িত করে থাকে। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাজনীতি করেছিলো। মায়ানমার সেই সুযোগটি নেয়? তুরস্ক বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্যে দরজা খুলে দিন, খরচ দেবে তুরস্ক। বাংলাদেশ বলতে পারে, রোহিঙ্গাদের তুরস্ক নিয়ে যান, খরচ দেবে বাংলাদেশ। তুরস্কের এরদোগান বাংলাদেশকে ‘ট্রোজান হর্স’ আমদানীর পরামর্শ দিচ্ছেন। তুরস্ক রোহিঙ্গাদের নেয়না কেন? বহির্বিশ্বে রোহিঙ্গাদের লবিং বেশ জোরদার এবং এরা এখন বলছে যে, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মী (এআরএসএ) গঠিত হয়েছে এবং তারা আরাকানের স্বাধীনতার জন্যে বার্মার সাথে যুদ্ধ করছে। ঢাকার দৈনিক ভোরের কাগজ ৩০শে আগষ্ট প্রধান শিরোনাম করেছে:’সশস্ত্র যুদ্ধের পথে রাখাইন!: নারী-শিশু বাংলাদেশে পাঠিয়ে লড়ছেন রোহিঙ্গা পুরুষরা’। প্রশ্ন হলো, আসলে কি এআরএসএ আদৌ গঠিত হয়েছে? আর গঠিত হলে এর পেছনে কারা? রাখাইন প্রদেশের চতুর্দিকে যেসব দেশ আছে, অর্থাৎ বার্মা, চীন, ভারত বা বাংলাদেশ কেউ এতে নেই, তাহলে? লস্কর-ই-তৈবা; আইসিস, না আল-কায়দা বা আইএসআই?
যদি সত্যিকার অর্থেই রোহিঙ্গারা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়, তাহলে বাংলাদেশ কোনভাবেই বিচ্ছিন্নবাদকে সমর্থন জানাতে পারেনা। এএফপি ২৯শে আগষ্ট জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা জঙ্গী দমনে মায়ানমারের সাথে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাব যে যথার্থ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকাংশ নারী-শিশু, এরমানে পুরুষরা সন্ত্রাসে জড়িত, বা বিচ্ছিন্নবাদী, বাংলাদেশ কেন এদের সমর্থন দেবে? বিশেষত: ভারত ও চীনের বিরুদ্ধে গিয়ে বাংলাদেশের কি লাভ? শুধু মুসলমান বলে রোহিঙ্গাদের সমর্থন দিতে হবে কেন? আইসিস বা আল-কায়দাও মুসলমান, বাংলাদেশ কি তাদের সমর্থন দেয়? মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যেটুকু সহায়তা করছে, তাই যথেষ্ট। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সঠিক রাস্তায় হাটছে। ১৯৭৮ সালে সরকারিভাবে ২লক্ষ ৭ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে আশ্রয় নেয়, তখন তাদের কাছে বার্মার কাগজপত্র ছিলো। আন্তর্জাতিক চাপে মায়ানমার তখন এদের অনেককে ফেরত নিতে বাধ্য হয়। পুনরায় ১৯৯০-৯২ সালে মায়ানমার প্রায় ২লক্ষ ৯২ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে।
রোহিঙ্গা সমস্যাটি নুতন নয়, সেই ১৯৪৮-৫০ সালেও এই সমস্যা ছিলো। পার্থক্য হলো, আগে এর রূপ জঙ্গী ছিলোনা, এখন এটি জঙ্গী সমস্যা। বাংলাদেশ আমলে জিয়া-এরশাদ-বেগম জিয়া এ সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন, এবং রোহিঙ্গাদের ভারত-বিরোধিতায় কাজে লাগান। এই প্রথম শেখ হাসিনার সরকার সঠিক পথে হাঁটছেন। এই সমস্যা সামনে আরো বাড়বে। মায়ানমারের দীর্ঘদিনের বন্ধু চীন। মায়ানমারের সাথে ভারতের সম্পর্ক ভালো। মানবিক কারণে আশ্রয় ও সাহায্য ব্যাতিত কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশের উচিত হবেনা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে যাওয়া? রোহিঙ্গা ইস্যু বৌদ্ধ-মুসলিম সমস্যা নয়, কারণ বার্মার মূল ভূখণ্ডে বসবাসরত মুসলমনাদের সাথে বৌদ্ধদের কোন সমস্যার কথা কারো জানা নেই। রোহিঙ্গাদের জন্যে সীমান্ত খুলে দিলে, ভবিষ্যতে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আটকে পড়া পাকিস্তানীরা মিলে বাংলাদেশের চেহারাটা পাল্টে দিতে পারে? বাংলাদেশকে ধর্য্য সহকারে এই ডেলিকেট ইস্যু সমাধান করতে হবে। এবং ভারত, আমেরিকা ও চীনের সাথে হাত মিলিয়েই তা করতে হবে?
শেষ করবো লিও টলস্টয়ের একটি গল্প দিয়ে: এক সাপ বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে এক গর্তে বাস করতো। একদিন ঝড়-বৃষ্টিতে সাপটি দেখলো অদূরে এক সজারু আধমরা অবস্থায় পড়ে আছে। সাপটির দয়া হলো, সজারুকে নিজের গর্তে নিয়ে এলো। বললো: আপাতত: তুমি আমাদের সাথে থাকো, সুস্থ হলে চলে যেও? এরপর কিছুদিন চলে গেলো, আবহাওয়া ভালো হয়ে গেছে, সজারু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। কিন্তু সজারু যাচ্ছেনা। সাপ তার ছোট্ট গর্তে সজারুকে নিয়ে থাকতে লাগলো। সজারুর গায়ের কাঁটায় সাপের বাচ্চাদের অবস্থা কাহিল। অবস্থা চরমে উঠলে সাপ একদিন সজারুকে বললো: ভাই সজারু, তোমার গায়ের কাঁটার খোঁচায় আমার বাচ্চাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। ভাই, তুমি এবার আমাদের বাসা থেকে যাও। সজারু একটু রেগেই বললো: ‘আমার তো কোন অসুবিধা হচ্ছেনা; যাদের অসুবিধা হচ্ছে তারা চলে যাকনা কেন?’ মহামতি টলস্টয়ের গল্পটি কি রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে একেবারেই অপ্রাসংগিক?
শিতাংশু গুহ,
নিউইয়র্ক, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০১৭।